সাতক্ষীরার কলারোয়ায় অজানা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে তিন দিনে ৪৪টি গরু-ছাগলের মৃত্যু হয়েছ। গত বুধবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত উপজেলার দলুইপুর গ্রামের চেয়ারম্যান পাড়ায় আটটি গরু ও ৩৬টি ছাগল মারা যায়। এছাড়া এলাকার শতশত গরু ছাগল ও হাঁস মুরগি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে।
দলুইপুর গ্রামের শুভ সরদার জানান, বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) বিকাল ৫টার দিকে তার একটি বিদেশি দুধের গাভী (আনুমানিক মূল্য আড়াই লাখ টাকা), পাশের বাড়ির সেলিনা আনোয়ার ময়নার দুটি গরু অজানা ভাইরাস রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে।
তিনি আরও বলেন, প্রতিদিনই ভাইরাস রোগে একের পর এক গরু ছাগল মারা যাচ্ছে। গত তিন দিনে দলুইপুর চেয়ারম্যান পাড়ায় মোট ৪৪টি গরু-ছাগল মারা গেছে।
খোরদো গ্রামের গ্রাম্য চিকিৎসক আসাদ জানিয়েছেন, এলাকায় দুই সপ্তাহ ধরে হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগলের ভাইরাস রোগ দেখা দিয়েছে। আমাদের চিকিৎসায় এ অজানা ভাইরাস রোগ ভালো হচ্ছে না। প্রতিদিন বিভিন্ন বাড়ির হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগল মারা যাচ্ছে।
মরিয়ম খাতুন জানান, আমার তিনটি গরু ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ভুগছে। গ্রামে প্রতিদিনই গরু-ছাগল মারা যাচ্ছে। আমার গরু নিয়ে আতঙ্কে আছি।
স্থানীয় পশু চিকিৎসক মঈনুল ইসলাম বাবুল জানান, আক্রান্ত গরু-ছাগল জ্বর কিংবা সর্দি-কাশি, মুখের ভিতরে ঘা জরা রোগে আক্রান্ত হয়ে দুর্বল হয়ে পড়ছে। পাতলা পায়খানা হচ্ছে। ভাইরাসে আক্রান্ত গরু-ছাগল খাওয়া ছেড়ে দিয়ে দুর্বল হয়ে মারা যাচ্ছে। তবে এখনো এ গ্রামে উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসের কোনো চিকিৎসক আসেনি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অসুস্থ হওয়ার পর থেকে এসব গুরু-ছাগল ঠিক মতো খায় না। জ্বর-কাশিসহ বিভিন্ন উপসর্গে আক্রান্ত হয়ে গৃহপালিত প্রাণীগুলো ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। এরপর হঠাৎ করেই মারা যাচ্ছে। প্রায়ই বিভিন্ন বাড়িতে অজানা এই ভাইরাসে গরু-ছাগল আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে।
আক্রান্ত পশুর মালিকরা জানান, দলুইপুর থেকে কলারোয়া প্রাণী সম্পদ অফিসের দূরত্ব ১২ কিলোমিটার। এই ধরের রাস্তা পাড়ি দিয়ে গরু ছাগল নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। অপরদিকে পশু ডাক্তারদের চিকিৎসায় গরু ছাগলের রোগ ভালো হচ্ছে না। ভাইরাস ধীরে ধীরে রোগটি চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। এসব গরু ছাগল লালন-পালন করেই অনেকের সংসার চলছে।
কলারোয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. জাহিদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, স্থানীয়দের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য ও রোগের লক্ষণ অনুযায়ী প্রাথমিকভাবে ঐ এলাকায় লাম্পি স্কিন ডিজিজ (এলএসডি) ছড়িয়ে পড়েছে বলে ধারনা করা হচ্ছে। আগামীকাল বিশেষজ্ঞ টিম ঐ এলাকায় গিয়ে আক্রান্ত প্রাণীগুলোর নমুনা সংগ্রহ করবে। এরপর মোবাইল টিমের মাধ্যমে পশুর মালিকদের পরামর্শ ও আক্রান্ত প্রাণীর চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :