মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার কাজীবাকাই ইউনিয়নের পূর্ব মাইজপাড়া গ্রামে জরাজীর্ণ একটি ঘড়ে মানবেতর জীবনযাপন করে আসছিলেন হায়াতন নেছা নামের ৫৫ বছর বয়সী এক বৃদ্ধা মহিলা। স্বামী-সন্তানহীন বৃদ্ধার এই অসহায়ত্ব নিয়ে গত ৩১শে মার্চ(রবিবার) দৈনিক মাদারীপুর সংবাদ পত্রিকায় "বৃদ্ধা হায়াতুন নেছার নেই একটু মাথা গোঁজার ঠাই" এই শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।এর আগে,গত ২৮শে মার্চ উক্ত বৃদ্ধার এই করূণ দশার ভিডিওচিত্র তুলে ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজের টাইমলাইনে পোস্ট দেন দৈনিক মাদারীপুর সংবাদ পত্রিকার ডাসার উপজেলা প্রতিনিধি সাংবাদিক নাজমুল হাসান।আর,এরপর থেকেই বৃদ্ধার এই করুণ দশার ভিডিওচিত্র ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পরে সোশ্যাল মিডিয়ায়।অতঃপর এক এক করে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে এগিয়ে এসেছেন স্বেচ্ছাসেবী বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনসহ নাম প্রকাশে ইচ্ছুক ও অনিচ্ছুক এমন প্রায় ডজনখানেক সহৃদয়বান মানুষ।কেউ দিয়েছেন ঘরের চালের টিন,সিমেন্টের তৈরি খুটি,কাঠ আবার কেউ দিয়েছেন ইট-বালু আর সিমেন্ট।
সব মিলিয়ে বৃদ্ধার ঘর নির্মাণের কাজ তড়িৎগতিতে শুরু হলো আজ ৩রা এপ্রিল(বুধবার)।
এই বিষয়ে কথা হয় বৃদ্ধার ঘর নির্মাণে এগিয়ে আসা সামাজিক সংগঠন উদ্দীপ্ত তরূণ প্রজন্ম সংঘের সভাপতি মাওলানা হাবিবুর রহমানের সাথে।তিনি বলেন, "প্রতি বছরের ন্যায় এবছরও রমাজান উপলক্ষে আমাদের সংগঠনের উদ্যোগে ইফতারসামগ্রী এলাকার হতদরিদ্রদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পৌঁছে দেই।
সেই ধারাবাহিকতায় বৃদ্ধা হায়াতন নেছার বাড়িতে ইফতার সামগ্রী নিয়ে উপস্থিত হলে তার এই করুণ দশার চিত্র স্বচক্ষে দেখি।খুব খারাপ লাগতেছিলো তখন।সেই খারাপ লাগা থেকেই তার ঘর নির্মাণের জন্য মনে-প্রাণে শপথ নেই।আমাদের সাধ্যমত আমরা ঘরের মেঝে পাকা করার জন্য ইটু,বালু ও সিমেন্ট এর ব্যবস্থা করে দেই।"
এ বিষয়ে অপর স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ডি.কে ব্লাড ডোনার্স গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক কাজী রায়হানের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন,আমরা এই বিষয়টি জানতাম না।সাংবাদিক নাজমুল হাসানের ফেসবুকে দেয়া ভিডিওচিত্রের মাধ্যমে আমরা জানতে পেরে দেশে এবং প্রবাসে থাকা আমাদের সংগঠনসহ অন্যান্য মানুষদেরকে জানাই।
তারা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিলে আমরা প্রায় ত্রিশ হাজার টাকার মতো আর্থিক সহায়তা নিয়ে হাজির হলাম বৃদ্ধার বাড়িতে।
আর,এদিকে নতুন ঘর নির্মানের কাজ শুরু হওয়ায় বেজায় খুশি বৃদ্ধা হায়াতুন নেছা।এসময় তিনি বলেন, "আল্লাহ মনে হয় আমার জন্য তোমাদেরকে ফেরেশতা হিসেবে সাহায্য করতে পাঠিয়েছেন।আমার কোনো সন্তান নেই।তোমরা যারা এগিয়ে এসেছো আজ থেকে তোমরাই আমার সন্তান।"
উল্লেখ্য,পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর থেকে বিভিন্ন সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনসহ প্রায় ডজন খানেক মানুষ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে এগিয়ে আসলেও দেখা মেলেনি ওই এলাকার কোনো জনপ্রতিনিধিদের।তাদের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তারা দান করতে পারেননি একটি পয়সাও।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :