উপজেলার কালীগঞ্জ পৌর এলাকায় মশার উপদ্রবে জনজীবন অতিষ্ঠ। পৌরবাসীর অভিযোগ নিয়মিত নালা-নর্দমা ও ড্রেন পরিষ্কার না করায় সে সকল স্থান মশার প্রজনন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। এমনকি দীর্ঘদিন মশা নিধনের কোনো কার্যক্রমও চোখে পড়েনি বলে জানান তারা। ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত মশার উৎপাত বাড়ে। এ সময় মশার কামড়ে অ্যানোফিলিস, ম্যালেরিয়া রোগে আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা থাকে অধিক।
শীতের দাপট কমতেই বেড়েছে মশার উপদ্রব। পৌর এলাকার ব্যবসায়ীদের ময়লা অবর্জনা, বিভিন্ন স্থানে জমে থাকা নোংরা ও যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা ফেলায় এ অঞ্চলটি মশার প্রজনন ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। পৌর এলাকার বিভিন্ন স্থানে বসানো ডাস্টবিন ও আবর্জনা ফেলার স্থান নিয়মিত পরিষ্কার না করায় মশার বিস্তার ক্রমশ বাড়ছেই। এ ছাড়া পৌর এলাকার বিভিন্ন ড্রেন ও আর্বজনা পৌর কর্তৃপক্ষ নিয়মিত পরিষ্কার না করার অভিযোগ রয়েছে।
পৌর এলাকার আর আর এন পাইলট স্কুলের দেয়াল ঘেষে, বর্জ্য ও ময়লা পরে থাকতে দেখা যায় প্রায়সই। স্থানটি নিয়মিত পরিষ্কার না করার ফলে মশার অন্যতম প্রজননস্থলে পরিণত হয়েছে।
ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে মশার উৎপাত বৃদ্ধি পাওয়ায় মানুষের দৈনন্দিন কাজে ব্যাঘাত ঘটছে। কয়েল, স্প্রে বা মশারি টাঙ্গিয়েও মশার উৎপাত থেকে রেহাই পাওয়া যাচ্ছে না। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর মশার উপদ্রব বেড়ে যাওয়ায় অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন এলাকাবাসী। পৌর বাসীর অভিযোগ মশা নিধনের জন্য প্রতি বছর পর্যাপ্ত বাজেট থাকলেও পৌর কর্তৃপক্ষ মশা নিধনে তেমন কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। ছয় মাসেও ফগার মেশিনের আওয়াজ শুনেনি কালীগঞ্জ পৌরবাসী। আর এতে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে শিশুরা।
পৌর এলাকার মুনসুরপুর মহল্লার বাসিন্দারা বলেন, প্রতি বছর শীত মৌসুমের শেষের দিকে মশার উপদ্রব বেড়ে যায়। গত কয় সপ্তাহ ধরে ব্যাপকভাবে মশার প্রকোপ বেড়েছে। মশার কারণে ছেলেমেয়েরা ঠিকমতো লেখাপড়া করতে পারছে না। কয়েল, স্প্রে, ইলেকট্রিক ব্যাট ব্যবহার করেও মশার উৎপাত থেকে রেহাই পাওয়া যাচ্ছে না। পানির নিষ্কাশনের পথটি বন্ধ থাকায় অত্র এলাকায় জলাবদ্ধতা নিত্যদিনের ঘটনা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কালীগঞ্জ বাজারের একাধিক ব্যবসায়ী বলেন, গত ছয় মাসের মধ্যে পৌরসভার পক্ষ হতে মশা মারতে দেখিনি। ফগার মেশিনের আওয়াজও শুনিনি। কর্তৃপক্ষ কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়াতেই মশার এমন প্রকোপ বেড়েছে।
মুনসুরপুর এলাকায় সরেজমিনে লক্ষ করা যায়, এই এলাকার ড্রেনেজ ব্যবস্থা অত্যন্ত নাজুক। বাসাবাড়ির পানি নিষ্কাশনের জন্য নেই কোন ড্রেনেজ ব্যবস্থা। এতে পানি চলাচল একেবারেই বন্ধ। দীর্ঘদিন জমে থাকা এসব নোংরা পানি মশার প্রজনন ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। এ ছাড়া ডাস্টবিন ও আবর্জনা ফেলার স্থানগুলো নিয়মিত পরিষ্কার না করায় মশার বংশবিস্তার হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কালীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র এস এম রবীন হোসেন প্রতিবেদককে মুঠোফোনে বলেন, মশা নিধন প্রক্রিয়া একটি চলমান পদ্ধতি। রাস্তার পাশে যাতে ময়লা না থাকে সে ব্যাপারে পৌর কর্তৃপক্ষ তৎপর রয়েছে। পৌর বাসীর সেবার মানোন্নয়নের লক্ষে রাস্তা ও ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ ব্যাপক উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে।
একুশে সংবাদ/এস কে
আপনার মতামত লিখুন :