এপ্রিল মাসের শুরু থেকে অব্যাহত রয়েছে তীব্র তাপদাহের। দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহৎ মৎস্য পোনা উৎপাদন ও বিক্রয় কেন্দ্র যশোরে চাঁচড়া মৎস্য হ্যাচারি ও ঘেরগুলোতে চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে মাছের পোনা উৎপাদন। এখানে চাহিদার প্রায় ষাট শতাংশ মাছের পোনা উৎপাদন করে দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়।
এখানকার পোনা চাষি ও হ্যাচারি মালিকরা বলছেন, তীব্র তাপদাহে পানিতে মাছের ডিম ও ব্রুট (মা মাছ) নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে মাছের পোনা উৎপাদন হচ্ছে না। তাদের দাবি চলতি এপ্রিল মাসের শুরু থেকে বেচাকেনা নেই এই বৃহৎ মৎস্য সেক্টরটিতে।
যশোর হ্যাচারি মালিক সমিতির তথ্যে জানাযায়, যশোরে মাছের পোনা উৎপাদনকারী হ্যাচারি রয়েছে ৪০টি। এর মধ্যে বর্তমানে সচল রয়েছে ২৫টি। আর তীব্র এই তাপদাহে এ ২৫টিও বন্ধের পথে।
চাচড়া মৎসপল্লীর পোনা চাষি, হ্যাচারি মালিকরা জানান, এপ্রিল মাসের শুরু থেকে যশোরে তীব্র তাপদাহ শুরু হয়েছে। একদিকে যেমন পানির সংকট অন্যদিকে পুকুরের পানি রোদে গরম হয়ে স্বাভাবিক তাপমাত্রা হারিয়ে ফেলছে। ফলে পানিতে ডিম বা ব্রুট (মা মাছ) ছাড়লে তা থেকে পোনা মাছ উৎপাদন হচ্ছে না। সব ডিম বা ব্রুট পানিতেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে কয়েক কোটি টাকা লোকসানের সম্মুখীন হচ্ছেন পোনা চাষি ও হ্যাচারি মালিকরা।
তারা আরো বলেন, অতি খরতাপে অনেক জলাশয় শুকিয়ে গেছে। ফলে পাইকাররা মাছ সংরক্ষণ বা বিক্রি করার স্থান পাচ্ছেন না। এজন্য পাইকাররা এ চাচড়াঁ মৎস হ্যাচারিতে পোনা কিনতে আসছেন না।
যশোর হ্যাচারি মালিক সমিতির সভাপতি ফিরোজ খান বলেন, তীব্র তাপদাহে আমরা যারা মৎস্য চাষি বা পোনা চাষি আছি, তারা চরম বিপদে রয়েছি। আমার নিজের অনেক ব্রুট মারা গেছে। তাপদাহে পানির তাপমাত্রা বেড়ে গিয়ে পোনা মাছ মারা যাচ্ছে। প্রায় সকল ব্যবসায়ী এবং মৎস্য চাষিরা এ তীব্র তাপদাহে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
যশোর জেলা মৎস্য অফিসার সরকার মুহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, বর্তমানে যশোরে তীব্র তাপদাহ চলছে। এমতাবস্থায় পোনা চাষিদের হ্যাচারি বা ঘেরে প্রচুর পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানির স্বাভাবিক তাপমাত্রা ২০ থেকে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে যাতে থাকে সে চেষ্টা করতে হবে। তাহলে পোনা উৎপাদনে সমস্যা হবে না।
তিনি আরও বলেন, মৎস্য চাষিরা আমাদের সাথে যোগাযোগ করলে আমরা সবরকমের পরামর্শ সহযোগিতা করবো।
একুশে সংবাদ/রা.বি/সাএ
আপনার মতামত লিখুন :