উন্নত জীবন আর ভাগ্য বদলের আশায় প্রতিনিয়ত লিবিয়া হয়ে ভূমধ্যসাগর পারী দিয়ে অবৈধ পথে ইউরোপের-ইতালির উদ্দেশ্যে যাত্রা করছেন অনেকেই। এসব অবৈধ পথে ইউরোপ যাত্রার মরণ ফাঁদ পেতেছেন কিছু দালাল চক্র। মাদারীপুর জেলার প্রায় গ্রামেই রয়েছে সক্রিয় একটি দালাল চক্র। গ্রামের সহজ-সরল যুবক ও তাদের পরিবারকে নানা রকম প্রলোভন দেখিয়ে ফাঁদে ফেলেন তারা। ইতালি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে প্রতিটি লোক থেকে তারা হাতিয়ে নিচ্ছে ১০ থেকে ২০ লাখ টাকা।
অপরদিকে, টাকা দিয়েও মুক্তি মিলছে না লিবিয়ার বন্দীশালা থেকে।এমনকি অনেকের সন্ধানও মিলছে না। নির্যাতনের আর্তনাদ পরিবারকে শুনিয়ে বারবার টাকাও দাবী করছে দালালচক্র। এমনই এক ফাঁদ পেতে বসেছেন, মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার ডাসার ইউনিয়নের দক্ষিণ ডাসার গ্রামের ছিদ্দিক বয়াতি ও তার স্ত্রী হনুফা বেগম এবং তার ছেলে সাগর বয়াতি।
ডাসার ইউনিয়নের সাকিব শিকদার(২৬) নামে এক যুবককে ইতালির নেওয়ার কথা বলে লাখ -লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।সাকিব শিকদার নামে ওই যুবককে ইতালির পাঠানোর কথা বলে লিবিয়ার বন্দীশালায় আটকে রেখে নির্যাতন চালিয়ে পরিবারের কাছে বারবার টাকা দাবী করছে আসছে সাগর ও তার পরিবারের লোকজন।
দালাল সাগর বয়াতির খপ্পরে পরে একই গ্রামের জসিম হাওলাদার(৩৫) নামে এক যুবককের এক মাস যাবৎ সন্ধানই মিলছে না। এতে করে পাগল প্রায় তাদের পরিবারের লোকজন।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানাগেছে,জসিম হাওলাদার ও সাকিব শিকদার কে লিবিয়া দিয়ে ইতালি পৌঁছানোর কথা বলে একই গ্রামের সিদ্দিক বয়াতি ও তার স্ত্রী হনুফা বেগম লাখ-লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। ইতালি বসে মাফিয়া সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করে সিদ্দিক বয়াতির ছেলে সাগর বয়াতি। তাঁদের ইতালির ফাঁদে পরে টাকা দিয়ে অনেকই হয়েছেন সর্বশান্ত।
ভূক্তভোগী সাকিব শিকদারের মা হেনা বেগম কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন,আমার একমাত্র পুতরে ঠাস-ঠাস কইরা মারে আর বলে টাকা দে,টাকা দে। আমার একমাত্র ছেলে,আমি আমার পুতরে ফেরত চাই।
লিবিয়ায় নিখোঁজ যুবকের স্ত্রী রেমনা বেগম জানান,আমার স্বামী জসিমকে সিদ্দিক বয়াতি ও সাগর বয়াতি ইতালির যাওয়ার কথা বলে ৮ লাখ টাকা নেয়। টাকা নেওয়ার পরে আজ ১ মাস হলো আমার স্বামীর কোন খোঁজ পাচ্ছি না।আমি আমার তিনটা সন্তান নিয়ে কষ্টে আছি। আমি আমার স্বামীর খোঁজ চাই,আমি আমার স্বামীকে ফেরত চাই।
এ বিষয়ে মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কামরুল হাসান বলেন, ভুক্তভোগী পরিবার মামলা করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :