ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাচনে বাইরে উৎসবমুখর পরিবেশ হলেও ভোটকেন্দ্র গুলোতে ভোটার উপস্থিতি কম। কিছু কিছু কেন্দ্রে শেষ বেলায়ও ভোট দিতে দেখা গেছে ভোটারদের।নির্বাচনকে সুষ্ঠ করতে ম্যজিস্ট্রেট, বিজিবি, পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি দেখা গেছে।
সকাল ১১টার দিকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের কয়েকটি কেন্দ্র ঘুরে সরজমিনে দেখা যায়, বেলা ভাঁড়ার সাথে সাথে ভোটারের উপস্থিতি বাড়তে থাকে। তাও থেমে থেমে ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে আসতেছে।
এই নির্বাচনে তিনবারের নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ আনারস প্রতীক নিয়ে এবারের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। সব বুথে শাহীন আহমেদের এজেন্টদের উপস্থিতি ছিল শতভাগ। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী কেরানীগঞ্জ মডেল থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী আলতাফ হোসেন বিপ্লব লড়ছেন কাপ-পিরিচ প্রতীকে। তাঁর এজেন্টদের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন অনেকেই।
কাপ-পিরিচ প্রতীকের প্রার্থী আলতাফ হোসেন বিপ্লব অভিযোগ করে বলেন, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের শুভাঢ্যা ও জিঞ্জিরার প্রায় ভোট কেন্দ্রগুলো থেকে তাঁর এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে ও কয়েকজনকে গেট দিয়ে ঢুকতে দেয়া হয় নি।
এই উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মডেল থানা যুবলীগের আহ্বায়ক মো. মনির হোসেন তালা মার্কায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তিনিও অভিযোগ করে বলেন, তাঁর এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে । বেশির ভাগ কেন্দ্রে আমার এজেন্টদের ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। কেন্দ্রের বাইরে থেকেই তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে আমার এজেন্টদের।
নির্বাচনে ভোটারের উপস্থিতি কেমন দেখছেন? এ বিষয়ে তিন বারের উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ একুশে সংবাদকে বলেন, সকালে বৃষ্টির কারনে ভোটারের উপস্থিতি একটু কম থাকলেও বেলা ভাঁড়ার সাথে সাথে ভোটারের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত। উৎসব মুখর পরিবেশে ভোট গ্রহণ চলছে। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মিথ্যা, বানোয়াট তথ্য দিয়ে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা মাত্র। পরাজয় জেনে এসব অভিযোগ তুলছেন একপক্ষ।
নির্বাচনে জিনজিরা পীএম পাইলট স্কুল এন্ড কলেজে গিয়ে দেখতে পাই সুষ্ঠ ও সুন্দর পরিবেশে ভোট দিচ্ছেন সবাই। ভোটারে উপস্থিতি ছিল কম। কেন্দ্রের বাইরে ছিল উৎসব মূখর পরিবেশ।
এছাড়াও গোলজারবাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শুভাঢ্যা উচ্চ বিদ্যালয়, বনগ্রাম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, তেঘরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, ইকুরিয়া মুসলিম নগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ডাকপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, জিনজিরা পীর মোহাম্মদ পাইলট স্কুল এন্ড কলেজ সহ একাধিক কেন্দ্রে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কিছু কেন্দ্রে ভোটার থাকলেও বেশিরভাগ কেন্দ্রে ভোটারের উপস্থিতি ছিল থেমে থেমে। প্রতিটি কেন্দ্রে আনারস প্রতিকের সমর্থন ছিল চোখে পড়ার মত। কেন্দ্রের বাইরে অতন্দ্র প্রহরীর মত দায়িত্বে ছিলেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। অবসর সময় কাটাচ্ছেন এজেন্টরা।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচন ঘিরে দুই প্যানেলে বিভক্ত কেরানীগঞ্জ উপজেলা স্থানীয় আওয়ামী লীগ। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে স্থানীয় দুই এমপি দুটি প্যানেলকে আলাদা আলাদা করে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। দেখা যায়, ঢাকা-২ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলামের সমর্থিত উপজেলা চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আলতাফ হোসেন বিপ্লব ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. মনির হোসেন। আর ঢাকা-৩ আসনের সংসদ সদস্য বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু সমর্থিত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী শাহীন আহমেদ, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সালাউদ্দিন লিটন (মাইক), রেশমা জামান (কলস)।
ভোটার রতন বলেন, সকালে ভোট দিতে আসতে পারি নি। এখন আসলাম। ভালোই দেখছি। কোন সমস্যা নেই। সুষ্ঠ ভোট হচ্ছে, মাত্র ভোট দিয়ে আসলাম। যেই জয়ী হবে সে কেরানীগঞ্জ বাসীর উন্নয়নে কাজ করবে এটা সকল ভোটারের প্রত্যাশা, আমারও প্রত্যাশা।
একাধিক ভোটার বলেন, অনেকেই কেন ভোট দিতে আসে না, আমার বোধগম্য নয়। ভোট আমার অধিকার। আমার অধিকার হনন আমি নিজে করতে পারি না। তাই সকলের, শত ব্যাস্ততার মাঝেও উচিৎ ভোট কেন্দ্রে এসে ভোট দেওয়া। ভোট দিয়ে শান্তি পাই।
একুশে সংবাদ/রাফি/বাবু/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :