রাজশাহীর তানোরে অতিরিক্ত টোল বা খাজনা আদায়ের কারনে প্রতি ঘন্টায় কমছে ধানের দাম বলে অভিযোগ করেন কৃষকরা। এক মন ধানে ৮ টাকা করে খাজনা আদায় করছেন হাট ইজারাদার মাসুদ ও তার লোকজন। পৌর এলাকার তালন্দ হাটে ঘটে রয়েছে এমন ঘটনা। এতে করে ধান বিক্রি করতে আসা কৃষক চরমভাবে হতাশ হয়ে পড়েছেন।
জানা গেছে, তানোর পৌরসভা থেকে প্রতি বছর হাটটি নিলাম হয়। এবার নিলামে রাজশাহীর গুড়িপাড়া এলাকার মাসুদ পেয়েছেন। পাওয়ার পর থেকেই সরকারি নিয়মের তোয়াক্কা না করে ইচ্ছেমত খাজনা বা টোল আদায় করে থাকেন।
সপ্তাহে বুধবার ও রবিবার তালন্দ হাট বার। হাটে বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা ভ্যানে করে ধান বিক্রি করতে আসেন। প্রতি হাটে প্রচুর পরিমানে ধান কেনা বেচা হয়।
মফিজ নামের এক কৃষক বলেন, তালন্দ হাটে ধান বিক্রি করতে এসেছিলাম বাড়তি দাম পাওয়ার আসায়। কিন্তু গত হাটে একমন ধান প্রকার ভেদে ১২৭০ টাকা থেকে ১২৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। কিন্তু আজ বুধবারে কমে ১২৪০ টাকা থেকে ঊর্ধ্বে ১২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আবার একমন ধানে ৮ টাকা করে খাজনা আদায় করা হচ্ছে। অতিরিক্ত খাজনা আদায় ও ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারনেই ধানের দাম কমে যাচ্ছে।
দুলাল নামের এক কৃষক বলেন এক মন ধান বিক্রি করার জন্য এসেছে। ধাম বেশি পাব বলে দুপুর থেকে প্রচন্ড খরতাপের মধ্যে বসে ছিলাম। কিন্তু বাড়তি দাম নেই। যতই বেলা ঘনিয়ে আসছে ততই ধানের দাম সিন্ডিকেটের কারনে কমে যাচ্ছে। একমন ধান বিক্রি করেছি ১২৫০ টাকায়। ধানের দাম কমে গেলেও বাজারে নিত্যপন্যের দাম প্রচুর। একমন ধান বিক্রি করে প্রয়োজন মত বাজার করা যায় না। অবাক করার বিষয় সবকিছুর দাম বেশি হলেও ধানের দাম কম। আবার মড়ার উপর খাড়ার ঘা একমন ধানে খাজনা দিতে হচ্ছে আট টাকা করে।
সিদ্দিক নামের আরেক কৃষক জানান, ১২ মন ধান বিক্রি করেছি। একমন ধানের দাম লেগেছে ১১৮০ টাকা। আর কিছুক্ষণ পর এদামও পাওয়া যাবে না।
আরেকজন জানান, একমন ধানে আট টাকা তো নিচ্ছেই আবার একটি হাঁসে ২০ টাকা করে খাজনা আদায় করে থাকেন।
খাজনা আদায় কারী উত্তম নামের এক ব্যক্তি বলেন, ৮ টাকা খাজনা অনেক কম নেয়া হচ্ছে। সরকারি রেটে খাজানা আদায় করলে আরো বেশি হবে। সরকারি তালিকা দেখতে চাইলে তিনি দেখতে পারেননি।
সুত্র জানায়, হাটে খাজনা বা টোল আদায়ের তালিকা সাটাতে হবে। সে অনুযায়ী খাজনা আদায় করতে হবে। কিন্তু কোন নিয়মই মানছেন ইজাদার ও পৌর কর্তৃপক্ষ। বাজার মনিটরিং না থাকার কারনে ইচ্ছে মত টোল বা খাজনা আদায় করা হচ্ছে। যদি নিয়োমিত মনিটরিং ব্যবস্থা বা অভিযান দিলে এত বেপরোয়া ভাবে খাজনা আদায় করতে পারত না। সবকিছু সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি।
মুল ইজারাদার মাসুদ জানান, এক মনে আট টাকা খাজনা আদায় অনেক কম হয়েছে। প্রতি হাটে ২০ হাজার টাকা করে লোকসান গুনতে হচ্ছে। তাহলে এত বেশি টাকায় হাট নিয়েছেন কেন জানতে চাইলে তিনি জানান আমি হাটে নেই সাক্ষাতে কথা হবে বলে দায় সারেন তিনি।
পৌর মেয়র ইমরুল হকের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, নিয়ম অনুযায়ী খাজনা আদায় করা হচ্ছে। বাড়তি টাকা আদায় না করলে বেতনভাতা দেয়া হবে কোথাই থেকে। সরকারি তো বেতন দেয় না। পৌরসভার রাজস্ব থেকেই বেতন দিতে হয়। আর সরকারি নিয়মে আদায় হলে বেতন ভাতা হবে না।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :