ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে ব্যাপক ঝড়-বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ায় দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় ভয়াবহভাবে বিপর্যস্ত হয়েছে। যার প্রভাব পড়েছে মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলাতেও। সোমবার সকাল থেকেই মাঝারি ও ভারী বৃষ্টিপাত এবং তার সঙ্গে ঝড়ো হাওয়া বইছে।
ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টির কারণে মানুষের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাইরে বের হচ্ছে না, রাস্তাঘাটে গাড়ি চলাচল সীমিত, দোকানপাটে নেই বেচা বিক্রি, কৃষক ও দিনমজুর জমিতে কাজ করতে পারছে না, এছাড়াও সকাল থেকেই বিভিন্ন এলাকায় বিদুৎ সংযোগ না থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষেরা।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় রেমালের আতঙ্কে চিন্তায় পড়ে গেছেন হরিরামপুরের কৃষকরা। হরিরামপুর সহ জেলা জুড়েই বিঘের পর বিঘে জমিতে রয়েছে ইরি ধান। সাথে রয়েছে ভুট্টা, মরিচ, তিল ও পাট সহ বিভিন্ন ফসল। ঝড়ের কারণে সম্পূর্ণ ধান নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায় ঝড়ের কারনে মরিচ, ভুট্টা, তিল সহ প্রায় সকল ফসলই মাটিতে নুইয়ে পড়েছে। জমিতে জমিতে রয়েছে পাকা ধান৷ ঝড়ের কারনে সম্পূর্ণ ধান নষ্ট হয়ে যেতে পারে। হাতে সময় নেই। কী করে ধান কেটে তা ঘরে তুলবেন তা নিয়ে চিন্তার ভাঁজ কৃষকদের মনে।
উপজেলার ঝিটকা এলাকার বাসিন্দা আব্দুল আলিম বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমাল এর কারণে বাইরে বের হতে পারিনি। সারাদিন বাড়িতে থাকতে হয়েছে। এছাড়া কাল রাত থেকে বিদ্যুৎ না থাকার কারনে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
গোপীনাথপুর ইউনিয়নের উজান পাড়া গ্রামের দিনমজুর নজরুল মিয়া জানান বৃষ্টি কারনে গতকাল কাজে যেতে পারিনি। এ বৃষ্টি যদি আরো কয়দিন থাকে তাহলে আমরা কাজ না করতে পারলে চলবো কি ভাবে!
গালা ইউনিয়নের বিজয়নগর গ্রামের কৃষক মনির হোসেন বলেন, ঝড় ও বৃষ্টির কারনে আমার ২ বিঘা ভুট্টা এ ১ বিঘা মচির ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। সবগুলো গাছ বাতাসের কারনে মাটিতে শুয়ে পড়েছে। আমার অনেক ক্ষতি হয়ে গেলো।
একই গ্রামের কৃষক সতীশ বালো বলেন, আমার ৫ বিঘা জমিতে পাকা ধান রয়েছে। আজকালের মধ্যে মেশিন দিয়ে কাটবো ঠিক করেছিলাম। এরই মধ্যে ঝড়ের কারনে আমার সব ধান মাটিতে পড়ে গেছে। এখন বেশি টাকা খরচ করে মজুর দিয়ে ধান কাটাতে হবে। মাটিতে পরার কারণে অনেক ধান নষ্ট হয়ে যাবে।
হরিরামপুর উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ তৌহিদুজ্জামান খান বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে মাঠে দন্ডায়মান ধান, মরিচ, পাট, ভুট্টা, তিলসহ সকল ফসলের ফলনে বিরুপ প্রভাব পরার আশংকা রয়েছে। প্রচন্ড বাতাসের কারণে ফসলের ক্ষতি হতে পারে। এই অবস্থায় উপজেলা কৃষি অফিস থেকে মাঠকর্মীদের নিজ নিজ ব্লকে উপস্থিত থেকে মাঠ ফসলের মনিটরিংসহ সার্বক্ষনিক কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করার নিদের্শনা প্রদান করা হয়েছে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :