AB Bank
ঢাকা শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

মাদারীপুরে বেনজীর দম্পত্তির ২৭৬ বিঘা জমি


মাদারীপুরে বেনজীর দম্পত্তির ২৭৬ বিঘা জমি

ক্ষমতার অপব্যবহার করে মাদারীপুরেও সম্পদের পাহাড় গড়েছেন সাবেক পুলিশপ্রধান বেনজীর আহমেদ। আর এই সম্পদ পাহাড়া দিতে নিজের পছন্দমত অফিসার পদায়ন করতেন তিনি দায়িত্বে থাকাকালে। তাদের দিয়েই ভয়ভীতি দেখিয়ে কয়েকশ বিঘা জমি নামমাত্র মূল্যে কিনেছেন বেনজীরের স্ত্রীর নামে।

জানা গেছে, গোপালগঞ্জ ও মাদারীপুরের সীমানাবর্তী রাজৈর উপজেলা। অবসরে যাওয়ার আগে বেনজীরের স্ত্রী জিশান মীর্জার নামে মাদারীপুরের রাজৈরে কিনেছেন ২৭৬ বিঘা জমি। এক সময়ের প্রভাবশালী পুলিশের সাবেক আইজিপি ও র‌্যাবের সাবেক মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদের স্ত্রীর নামে মাত্র দুই বছরে কিনেছেন ২৭৬ বিঘা জমি। জমিগুলো মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার সাতপাড় গ্রামের ডুমুরিয়া মৌজায়।

আইজিপি থাকা অবস্থায় ২০২১ ও ২০২২ সালের বিভিন্ন সময় ১১৩টি দলিলে এসব জমি কেনা হয়েছে। এসবের দলিলমূল্য দেখানো হয়েছে মোট ১০ কোটি ২২ লাখ টাকা। হিসাব করে দেখা যায় বিঘা প্রতি জমির দাম পড়েছে ৩ লাখ ৭৯ হাজার টাকা। অথচ বাজার মূল্য এর চেয়ে কয়েকগুন বেশি। গণমাধ্যমে বেনজীর আহমেদের নানা অনিয়ম এবং দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশের পর মুখ খুলতে সাহস করেছেন অনেকেই।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২৭৬ বিঘা জমির অধিকাংশ জমিই বেনজীর আহমেদ ক্ষমতার অপব্যহার করে কিনেছেন। যারা জমি বিক্রি করতে চাননি তাদের বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে। কেউ জমি লিখে দিতে না চাইলে নির্যাতনের শিকার হয়েছে বলেও অভিযোগও করেছেন।

জানা গেছে, বেনজীর অবসরে যাওয়ার আগে মাত্র ৫৯৪ দিনে ২৭৬ জমি কেনা হয়েছে তার স্ত্রী জিশান মির্জার নামে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও জমির মালিকদের অভিযোগ, রাজৈর উপজেলার কদমবাড়ি ইউনিয়নের সাতপাড় গ্রামের ডুমুরিয়া মৌজা, নটাখোলা ও বড়খোলা এলাকার ফসলি জমি জোরপূর্বক কিনে নেন বেনজীর আহমেদ।

রাজৈর উপজেলার কদমবাড়ি ইউনিয়নের আড়–য়াকান্দি গ্রামের ভাষারাম সেন বলেন, ২৪ একর ৮৩ শতাংশ ফসলি জমি আমাদের বংশীয় লোকদের। এই জমি সবটুকুই কিনে নেন বেনজীর আহমেদ। বিঘাপ্রতি সাড়ে ৩ লাখ টাকা দিয়েছেন। প্রায় দুই বছর আগে ভয়ভীতি দেখিয়ে এই জমি লিখে নেন বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবার। প্রথমে চারদিক থেকে জমি কিনে নেন তিনি। এরপর মাঝখানে আমাদের জমি থাকায় সেটা লিখে দিতে বাধ্য করেন।

সাতপাড় ডুমুরিয়া গ্রামের সরস্বতী রায় বলেন, আমরা জমি দিতে চাইনি। ভয় দেখিতে জমি লিখে নেন বেনজীর। এই জমিতে ফসল হতো, লিখে নেয়ার পর আমাদের চাষাবাদ করার আর কোনো জমি নেই। এই ফসলি জমিটুকু অনেক কষ্টে ধরে রাখছিলাম, কিন্তু সেটার আর শেষ রক্ষা হলো না।

বড়খোলা গ্রামের বাসিন্দা রসময় বিশ্বাস বলেন, বেনজীর আহমদ আমাদের কাছ থেকে ৩২ শতাংশ জমি নিয়েছেন। একই ধরনের কথা জানালেন পার্শবর্তী কদমবাড়ি এলাকার সুকবেদ বালার ছেলে অমল বালা। তিনি বলেন, আমাদের হুমকি-ধমকি দিয়েছেন বেনজীরের লোকজন। তার লোকজন বলেছে, জমি লিখে না দিলে বিমানে করে বাড়িতে নামতে হবে। চারপাশ আটকে দেবেন। এমন অত্যাচারে অনেকেই জমি লিখে দিয়েছেন।

মাদারীপুর আদালতের আইনজীবী অ্যাডভোকেট গোলাম কিবরিয়া বলেন, জোরপূর্বক কারও সম্পত্তি লিখে নেয়া ফৌজদারি অপরাধ। ভুক্তভোগীরা চাইলে মামলা করতে পারেন।

মাদারীপুর উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট মাসুদ পারভেজ বলেন, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ব্যবহার করে অবৈধভাবে বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়েছেন বেনজীর আহমদ ও তার পরিবার। দুদক শুধু অবৈধ সম্পদের হিসাব নিলেই হবে না, রাষ্টীয় ক্ষমতা অপব্যবহার করে জঘন্য অপরাধ করেছেন তার বিচারও হওয়া দরকার।

 

একুশে সংবাদ/না.হা,জে/সা.আ

Link copied!