AB Bank
ঢাকা শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় গণহত্যা স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের নির্দেশ


Ekushey Sangbad
মো. দিল, সিরাজগঞ্জ
০২:৫২ পিএম, ৪ জুন, ২০২৪
সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় গণহত্যা স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের নির্দেশ

মাননীয় হাইকোর্ট বিভাগ বৃটিশ শাসকগোষ্ঠী কর্তৃক সংঘটিত সলঙ্গা গণহত্যা দিবস, ২৭ জানুয়ারীকে জাতীয় দিবসের স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না সে মর্মে রুল জারি করেছেন । এবং পাশাপাশি সলঙ্গা গণহত্যা সংঘটনের স্থানেস্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের নির্দেশ দিয়েছেন। বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম এবং মাননীয় বিচারপতি এস. এম. মাসুদ হোসাইন দোলনের দ্বৈত বেঞ্চ এ আদেশ ও রুল জারি করেন।

আদালতে শুনানী করেন আইনজীবী মো: আসাদ উদ্দিন। এর আগে সুপ্রীম কোর্টের ১১জন আইনজীবী জনস্বার্থে রীটটি দায়ের করেন। আবেদনকারী আইনজীবীরা হলেন মো: আসাদ উদ্দিন, মো: কাওসার আলী, মো: বদরুদ্দোজা বাবু, মো: গোলাম হাসনায়েন, মো: হারুনর রশিদ, মো: গোলাম কিবরিয়া, রোকসানা সুলতানা, জহিরুল হক কিসলু, ব্যারিস্টার মো: আব্দুল বাতেন শেখ, মো: হেকাম আলী শিমুল এবং মো: মোরশেদুল ইসলাম।

আইনজীবী মোঃ আসাদ উদ্দিন বলেন, ১৯২২ সালের ২৭ জানুয়ারী ছিল সলঙ্গা হাটের দিন। সেদিন যুবক আব্দুর রশিদের (যিনি বাংলাদেশ গণপরিষদের প্রথম অধিবেশনের সভাপতি ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি ‍‍`মাওলানা আব্দুর রশিদ তর্কবাগীশ‍‍` নামে পরিচিত) নেতৃত্বে সলঙ্গা হাটে চলতে থাকে বৃটিশ পণ্য বর্জনের প্রচারাভিযান।  “বিলেতি পণ্য বর্জন কর, এদেশ থেকে বৃটিশ হটাও”- শ্লোগানে স্বেচ্ছাসেবকদের প্রচারাভিযান যখন তুঙ্গে, তখন কংগ্রেস অফিস থেকে আব্দুর রশিদকে গ্রেফতার করা হয়। ঐ ঘটনাকে কেন্দ্র করেই সেদিন বৃটিশ বেনিয়াদের নৃশংসতার এক রক্তাক্ত অধ্যায় বিরচিত হয় সলঙ্গায়। 

সমগ্র ভারতবাসীর জন্য রক্তাক্ত বিদ্রোহের ঐতিহাসিক এক দৃষ্টান্ত সৃষ্টি হয় সেখানে। ৪০ জন বৃটিশ পুলিশের রাইফেলের মূহুর্মুহু গুলিতে রক্তের বন্যা বয়ে যায় সলঙ্গার মাটিতে। পাবনার ম্যাজিস্ট্রেট আর. এন দাস, সিরাজগঞ্জের মহকুমা প্রশাসক এস. কে সিনহা এবং পাবনা জেলার পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে সংঘটিত হয় এ নৃশংস হত্যাযজ্ঞ। সেদিনের সন্ধ্যার আলো আঁধারীতে সলংগার মাটি নিহত ও আহত মানুষ এবং গৃহপালিত পশুর রক্তে ভেসে যায়। নিহতদের লাশ বেঁধে নিয়ে যাওয়া হয় সিরাজগঞ্জের রহমতগঞ্জে। সেখানে তৈরী করা হয় বাংলাদেশের প্রথম ‘গণকবর’। আজও সে ‘গণকবর’ সলঙ্গার নৃশংস হত্যাকান্ডের সাক্ষ্য বহন করে চলেছে। এছাড়া হোসেনপুর, বাসুদেবকোলসহ সলংগার বিভিন্ন জায়গায় নিহতদের কবরস্থ করা হয়। সরকারী হিসাবে এ ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা দেখানো হয় সাড়ে চার হাজার। 

মো. আসাদ উদ্দিন বলেন, সলঙ্গার নির্মম এ ঘটনাকে কেউ কেউ জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকান্ডের চেয়েও ভয়ংকর ও হৃদয় বিদারক বলে উল্লেখ করেছেন। সরকারী সেবরকারী বিভিন্ন ডকুমেন্ট ও প্রকাশনায় এ নৃশংস হত্যাযজ্ঞের স্বীকৃতি রয়েছে। ইতিহাসে দিনটিকে ‘সলঙ্গা দিবস’ হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু দিবসটি কেবল স্থানীয়ভাবেই পালন করা হয়। জাতীয় দিবস হিসাবে এটিকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি আজও। এমনকি ঘটনাস্থলে একটি স্মৃতিস্তম্ভ পর্যন্ত স্থাপন করা হয়নি। সলংগা অঞ্চলের মানুষ দীর্ঘ দিন ধরে বিভিন্ন কর্মসূচীর মাধ্যমে এ দাবী জানিয়ে আসছে। জাতীয় ও স্থানীয় পত্র-পত্রিকা, ম্যাগাজিন ও বই-পুস্তকে অনেক লেখালেখিও হয়েছে। বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলও এ ব্যাপারে সরেজমিন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। কিন্তু জাতীয় দিবস ঘোষণা বা স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপন কোনটাই আলোর মুখ দেখেনি।

সলঙ্গা বিদ্রোহের বয়স একশ’ বছর পার হয়েছে। এত বছর পরও দিবসটি জাতীয় দিবস হিসাবে ঘোষণা এবং একটি স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপন না হওয়া অত্যন্ত দূঃখজনক। জাতি হিসাবে এটি আমাদের জন্য ব্যর্থতা ও লজ্জার বটে। তাই একজন সলঙ্গাবাসী ও  সচেতন নাগরিক হিসাবে বিষয়টি অত্যন্ত যৌক্তিক এবং গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় এ রীটটি দায়ের করা হয়।

 

একুশে সংবাদ/ এস কে


 

Link copied!