দেশে-প্রবাসে অবস্থানরত সর্বস্তরের শ্রমজীবী মানুষ ও দেশবাসীকে পবিত্র ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানিয়েছে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন।
শুভেচ্ছা বাণীতে ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাবেক এমপি আ.ন.ম শামসুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান বলেন, ঈদ উল আজহা আমাদের জাতীয় জীবনে অতীব গুরুত্বপূর্ণ একদিন। মুসলিম জাতির পিতা হযরত ইব্রাহিম (আ.) আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে তার পুত্র হযরত ইসমাইল (আ.) কে আল্লাহ রাহে কুরবানি করার জন্য গলায় ছুরি চালিয়ে ছিলেন। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ইব্রাহিম (আ.) এই ত্যাগ এতটাই পছন্দ করেছেন যে তাঁর প্রতি খুশি হয়ে তাকে মুসলিম জাতির পিতা হিসাবে মনোনীত করেছেন। ইব্রাহিম (আ.) ও ইসমাইল (আ.) আল্লাহর কাছে পুরোপরি আত্মসমার্পণ করেছেন। আল্লাহর কাছে ইব্রাহিম (আ.) এর মত আত্মসমাপর্ণ না করা পর্যন্ত কোনো ব্যক্তি প্রকৃত মুসলিম হতে পারে না। ঈদ-উল আজহা আমাদেরকে আল্লাহর কাছে আত্মসমার্পণের শিক্ষা দিয়ে যায়।
নেতৃদ্বয় বলেন, মানুষ যখন তার প্রভুর নিকট আত্মসমার্পণ করে তখন দুনিয়াবী চিন্তাধারায় তাদের জীবন পরিচালিত হওয়ার সুযোগ থাকে না। বরং তখন প্রতিটি মানুষকে জীবনযাপন করতে হয় খোদায়ী বিধান অনুসারে। খোদায়ী বিধান সমাজ রাষ্ট্রকে কল্যাণকামী করে। মানুষে মানুষে বিভেদ তৈরি হয় না। প্রত্যেক মানুষ স্বাধীনভাবে বসবাস সুযোগ করার পায়। ধনী-গরিবের মধ্যে বৈষম্য থাকে না। পারস্পারিক সহযোগিতা, সাম্য ও শান্তির এক দুয়ার উন্মোচিত হয়। আজকের দিনে ঈদ-উল আজহার শিক্ষা আমাদের জন্য অনেক বেশি জরুরি। আজকের সমাজ কলুষিত হয়ে গেছে। ধনী-গরিবের বিভেদ আকাশ ছুঁয়ে গেছে। চারিদিকে শোষণ-নিপীড়নে শ্রমজীবী মানুষরা অতিষ্ঠ। দুঃখ বেদনা আজকের তাদের নিত্য সঙ্গী। এমতাবস্থায় ঈদ-উল আজহার শিক্ষা সমাজে কায়েমের মাধ্যমে কল্যাণমুখী সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা সময়ের দাবি। যে সমাজে ধনী-গরিবের মাঝে ভ্রাতৃত্ব ও একত্মাবোধ সৃষ্টি হবে। সামাজিক মর্যাদা, ন্যায় বিচার ও মানবতা প্রতিষ্ঠা হবে এই সমাজের একমাত্র লক্ষ্য।
নেতৃদ্বয় বলেন, আমাদের দেশের শ্রমজীবী মানুষদের ঘরে আনন্দ উৎসব ঈদ ছাড়া আসে না। তাই আমাদেরকে ঈদের শিক্ষা গ্রহণের পাশাপাশি ঈদের আনন্দ দেশের শ্রমজীবী মানুষদের সাথে ভাগাভাগি করে নিতে হবে। যারা ঈদ-উল আজহার দিনে পশু কুরবানি করবেন তারা নিজ উদ্যোগে শ্রমজীবী মানুষের ঘরে ঘরে কুরবানির গোশত পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করবেন। আমাদের মনের পশুত্ব ও সকল প্রকার অমানবিক মন-মানসিকতা বিসর্জন দিয়ে একটি ন্যায় ও ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার যাত্রা ঈদের দিন থেকে শুরু করতে হবে।
পরিশেষে নেতৃদ্বয় বলেন, ফিলিস্তিনসহ বিশ্বের মুক্তিকামী মানুষের উপর চাপিয়ে দেওয়া যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। জাতিসংঘ-ওআইসিসহ বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে যুদ্ধ বন্ধ করার কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। আশাকরি বাংলাদেশসহ বিশ্বের মেহনতি মানুষদের জীবনে ঈদ-উল আজহা অনাবিল সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি বয়ে আনবে। শোষণ-বঞ্চনা, নির্যাতন-নিপীড়ন ও সকল যুদ্ধের অবসান হবে; আজকের দিনে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :