যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে সারা দেশে উদযাপিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল আজহা। সকালে ঈদের নামাজ আদায়ের পর আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন ও ত্যাগের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী পশু কোরবানির দিয়েছেন মুসলমানরা।
অনেক নিম্নআয়ের মানুষ অর্থের অভাবে কোরবানি দিতে পারেননি। একটু মাংসের আশায় পাড়া-মহল্লায় বিভিন্ন মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন নানা বয়সী নারী-পুরুষেরা। বিভিন্ন এলাকার বাসাবাড়ির নিচে ও গেটের সামনে দাঁড়িয়ে মাংসের জন্য সমাজের বিত্তবানদের কাছে হাত পাতছেন এসব মানুষ। বড়দের পাশাপাশি কিশোর-কিশোরী ও তরণ-তরুণীদেরও মাংসের আশায় ব্যাগ নিয়ে ঘুরতে দেখা গেছে।
মাংস-প্রত্যাশী মানুষেরা জানান, আর্থিক সঙ্কট থাকায় পরিবারের সদস্যদের নিয়মিত খাবার জোগাড় করাই কষ্টসাধ্য। মাংস কিনে খাওয়ার সামর্থ্য নেই তাদের। ঈদে পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে এবং খাবারের পাতে একটু মাংস পেতে সামর্থবানদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তারা।
বেউথা এলাকায় কথা হয় বৃদ্ধা আছিয়া বেগমের সাথে। তিনি বলেন, আমরা গরিব মানুষ। কোরবানি দেওয়ার সামর্থ্য নেই। সেজন্য যারা কোরবানি দিয়েছে তাদের কাছে মাংসের জন্য যাচ্ছি। সবাই এক-দুই টুকরো করে মাংস দিচ্ছে। তাতেই আমি খুশি।
মাংসের জন্য ব্যাগ হাতে অপেক্ষারত আলেয়া নামের এক কিশোরী জানান, তার বাবা একজন দিনমজুর। ঈদে মাংস কিনতে পারেনি। তাই আরো কয়েকজনের দেখাদেখি সে মাংস উঠাতে বের হয়েছে।
মানিকগঞ্জ শহরের শহীদ রফিক সড়কে আব্দুল গফুর মিয়া নামের আরেকজন বলেন, আমরা খেটে খাওয়া মানুষ। পেটের ভাত জোগাতেই কষ্ট হয়। কোরবানি দিব কিভাবে? মাংসের যে দাম, আমরা মাংস কিনেও খেতে পারিনা। তাই ঈদের সময় মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে মাংস উঠিয়ে বাড়িতে নিয়ে রান্না করে পরিবারের সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে খাব।
উল্লেখ্য, ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী কোরবানির মাংস তিন ভাগ করে একভাগ কোরবানিদাতা নিজের জন্য রেখে বাকি দুই ভাগের মধ্যে একভাগ নিকটাত্মীয়দের মধ্যে এবং আরেক ভাগ সমাজের অসহায় ও নিম্নআয়ের মানুষের মধ্যে বিতরণ করতে হয়।
একুশে সংবাদ/ সা.খা./ এসএডি
আপনার মতামত লিখুন :