ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে খাবার পানির সব আধার ডুবে গেছে। সমুদ্রের লবণ পানি ঢুকে পড়ায় সুপেয় ও ব্যবহারযোগ্য পানির সংকটে পড়েছে এ উপজেলার প্রায় আড়াই লাখ মানুষ।
জানা গেছে, এ উপজেলায় পানির উৎস হিসেবে ১ হাজার ২৮৭টি পুকুর সংরক্ষিত ছিল। রেমালের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে এর মধ্যে ১ হাজার ৩০টি জলাধারে লবণ পানি ছাড়াও গাছপালার পাতা, পশুপাখির মৃতদেহ, ড্রেন ও সেপটিক ট্যাংকের ময়লা আবর্জনা প্রবেশ করেছে। কালো হয়ে গেছে সব পুকুরের পানির রঙ। ছড়াতে শুরু করেছে গন্ধ। এমন পরিস্থিতিতে উপজেলার প্রায় আড়াই লাখ বাসিন্দা খাবার ও ব্যবহারের পানির চরম সংকটে পড়েছে।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অফিস সূত্র জানিয়েছে, খাবার পানির জন্য মোরেলগঞ্জে প্রায় ৮ হাজার পরিবারের কাছে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের ট্যাংক থাকলেও অন্য কাজের জন্য নিরাপদ পানির কোনো উৎস অবশিষ্ট নেই। জলোচ্ছ্বাসে অধিকাংশ বাড়ির পানির ট্যাংক ভেসে গেছে।
নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের মেম্বার জাহিদুর ইসলাম লিটন বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালের পর আমাদের গ্রামে সুপেয় পানি পাওয়া এখন দুষ্কর হয়ে দাঁড়িয়েছে। পুকুরের পানি নষ্ট হয়ে গেছে। এমনকি পুকুরে ভাসছে বিভিন্ন প্রাণীর মরদেহ। বোতলের পানি কিনে খেতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম বলেন, রেমালের প্রভাবে জলোচ্ছ্বাসে প্রায় শতভাগ পানির উৎস নষ্ট হয়ে গেছে। আড়াই লাখ মানুষ এখন খাবার ও ব্যবহারের নিরাপদ পানি পাচ্ছে না। ইতোমধ্যে পানি বিশুদ্ধকরণের জন্য ৫০ হাজার ট্যাবলেট বিতরণ করা হয়েছে। আরও ১ লাখ ট্যাবলেট শিগগিরই পাওয়া যাবে। তবে এভাবে আড়াই লাখ মানুষের নিরাপদ পানির চাহিদা মেটানো সম্ভব না।
মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শর্মী রায় বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতের পরে হাসপাতালে টাইফয়েড, ডায়রিয়া ও চর্ম রোগীর সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। এতে পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিতে পারে।
একুশে সংবাদ/ই/হা.কা
আপনার মতামত লিখুন :