গাইবান্ধায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। পানির প্রবল স্রোতে রাতে গাইবান্ধা সদর ও ফুলছড়ি উপজেলার অন্তত ১৫০টি বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। অনেক স্থানে ঘরের চালের ওপর দিয়ে পানির স্রোত বইছে। বাড়িঘর ধসে পড়া পরিবারগুলো উঁচু স্থান ও আশ্রয়কেন্দ্রে চলে গেছে।
শনিবার (৬ জুলাই) পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, আজ সকাল ৬টায় গাইবান্ধায় ব্রহ্মপুত্রের পানি ফুলছড়িঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ৮৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে এবং ঘাঘট নদীর পানি শহরের নতুন ব্রিজ পয়েন্টে ৩৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধির কারণে ব্রহ্মপুত্র বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বাইরে সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি, সাঘাটা ও সদর উপজেলা ২৭টি ইউনিয়নের অন্তত ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। সেখানে দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্য সংকট। তলিয়ে গেছে বিস্তীর্ণ এলাকার পাট, বাদাম ও শাক-সবজিসহ বিভিন্ন ফসল।
ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা ও যমুনার চর বেষ্টিত ১৬৫টি চরের মানুষের গবাদিপশু প্রধান সম্পদ। বন্যায় বাড়িঘর ডোবার কারণে মানুষ, গরু-ছাগল, ভেড়া, হাস-মুরগি কোনো রকমে উঁচু স্থানে বসবাস করছে। সেখানে দেখা দিয়েছে গো-খাদ্যের সংকট। নিরাপত্তা না থাকায় নৌকা অভাবে তারা গবাদি পশুগুলো উঁচু আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যেতে পারছে না। চোর-ডাকাতের ভয়ে তারা গবাদি পশুর সঙ্গে গাদাগাদি করে বসবাস করছে।
বন্যার কারণে ৬৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ৪টি স্কুল ও মাদরাসা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহীদুল ইসলাম প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, বন্যার্তদের মধ্যে ৩ হাজার ৫০ প্যাকেট শুকনা খাবার ও ১৬৫ টন জিআর চাল বিতরণ করা হয়েছে।
এদিকে সকালে গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) আসনের সংসদ সদস্য মাহমুদ হাসান রিপন ফুলছড়ি উপজেলার ফজলুপুর, গজারিয়া ও ফুলছড়ি ইউনিয়নের ৩ হাজার পরিবারের মাঝে ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করছেন। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য ইউনিয়নে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হবে বলে জানা গেছে।
একুশে সংবাদ/এনএস
আপনার মতামত লিখুন :