দেশে মেধাবী ও দক্ষ ফুটবলারের সংকট। ফুটবলার উঠে আসার অন্যতম পাইপলাইন স্কুল ফুটবল। স্কুল ফুটবলের মাধ্যমে দেশব্যাপী ফুটবলের জোয়ার তোলা সম্ভব। অনেক মেধাবী তরুণ তরুণীরাও ফুটবলের প্রতি আকৃষ্ট হয় স্কুল ফুটবলের মাধ্যমে আর এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে টাংগাইলের ধনবাড়ী উপজেলার পাইস্কা ইউনিয়ন পরিষদের পাইস্কা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের এক ঝাঁক মেধাবী শিক্ষার্থীদের নিয়ে গঠন করা হয়েছে ধনবাড়ী উপজেলা নারী ফুটবল টিম।
যে টিম ধনবাড়ী উপজেলার সুনাম অক্ষত রেখে বার বার বিভিন্ন খেলায় টাংগাইল জেলাতে বিজয় অর্জন করে আসছে , খেলছে জাতীয় পর্যায়েও কিন্তু আর্থিক সংকটের জন্য বন্ধ হওয়ার পর্যায়ে।
যখন নারী ফুটবলারদের খেলার বুট এর বড় সংকট দেখা দিল ঠিক তখনি কিছু টা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিল ধনবাড়ী উপজেলার নির্বাহী অফিসার মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান ও পাইস্কা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের মেনেজিং কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব মাসউদুল আলম উচ্ছল। ১৮ জোড়া ফুটবল খেলার বুট কিনে দিয়ে নারী ফুটবলার দের পাশে দাঁড়ালেন তারা।
পাইস্কা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তোফাজ্জল হোসেন বলেন, আমাদের স্কুলের মেয়েরা এখন শুধু আমাদের স্কুলের গর্ব না তারা এখন ধনবাড়ী উপজেলার গর্ব তারা টাংগাইল জেলায় বিভিন্ন খেলায় বারবার চ্যাম্পিয়ন হয়ে তারা এখন খেলছে বিভাগীয় টিম থেকে জাতীয় পর্যায়ে। এখন এদের খেলা পরিচালনায় আর্থিক সংকটে আমরা।
নারী ফুটবলারদের প্রশিক্ষক, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের টেনিং প্রাপ্ত কোচ জহিরুল ইসলাম মিলন জানান, পাইস্কা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের নারী ফুটবলাররা এখন স্কুলের গর্ব থেকে ধনবাড়ী উপজেলার গর্বে পরিনত হয়েছে।
ফুটবল একাডেমি গড়ে তুলি ২০২১ সালে। এখান থেকে আমাদের যাত্রা শুরু। প্রথমে আমরা মেয়েদেরকে নিয়ে খেলাধুলা শুরু করি। বিশেষ করে মেয়েদেরকে নিয়ে খেলাধুলা শুরু করতে গিয়ে অনেক বাধা-বিপত্তির সম্মুখীন হতে হয়েছে। আমি সাহস না হারিয়ে এগিয়ে গিয়েছি। আজ অনন্যা ও ঝর্ণা জাতীয় পর্যায়ে ফুটবল খেলছে। তাদের দেখে স্থানীয় অনেক মেয়েরা ফুটবল খেলতে পাইস্কা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের একাডেমিতে ভর্তি হয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের একাডেমিতে এখন ৩০ জন মেয়ে ফুটবলার হয়ে উঠছে। তাদের এগিয়ে নিতে অভিভাবক ও শিক্ষকদের সহযোগিতা ছিল। তারা সহযোগিতা না করলে আমি তাদের এ জায়গায় পৌঁছে দিতে পারতাম না।
ধনবাড়ী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আসলে ঝর্ণা ও অনন্যা তৃণমূল এলাকা ধনবাড়ী উপজেলা থেকে উঠে এসেছে সত্যিই এটা গর্বের। এটা শুধু টাংগাইল জেলা নয়, গোটা বাংলাদেশের জন্য সুনাম অর্জন করেছে। ওরা দেশের বাইরেও খেলবর। ভবিষ্যতে আরও আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে খেলবে এমনটাই প্রত্যাশা করি। আমি ওদের কে সর্বাত্মক সহযোগিতা করব তার পাশাপাশি সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে ওদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।
পাইস্কা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের মেনেজিং কমিটির সভাপতি মাসউদুল আলম উচ্ছল বলেন, সর্বোপরী পাইস্কা বালিকা উচ্চবিদ্যালয় থেকে ওদেরকে সার্বিক সহযোগিতা করে আসছে ভবিষ্যতেও করবে। কিন্তু এখন যে ব্যয়বহুল খরচ বেড়েছে তা পুরাটা খরচ বহন করা স্কুলের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না তাই দাতা প্রতিষ্ঠান বা সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং ক্রীড়া প্রেমিরা যদি এগিয়ে এসে সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দেয় তাহলে
এরকম যারা তৃণমূল পর্যায়ে যারা নারী ফুটবলার রয়েছে, তাদেরকেও এগিয়ে নিয়ে যেতে সহজ হবে।আপনাদের কাছে সার্বিক সহযোগিতা করার আহ্বান জানাচ্ছি।
একুশে সংবাদ/সা.আ
আপনার মতামত লিখুন :