নরসিংদী সদর উপজেলার মাধবদীতে যাত্রীর ছদ্মবেশ মো. নুরুল ইসলাম (৫০) নামে এক রিকশা চালককে হত্যা করার ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১১ মে) সকালে নরসিংদীর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান।
নিহত মো. নুরুল ইসলাম মাধবদী থানার ভাটপাড়া গ্রামের মৃত কাসেম আলীর ছেলে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো, মাধবদী থানার বাসিন্দা বাচ্চু মিয়া (২৭), সোহেল মিয়া (৩২), হৃদয় (২৭) ও নবী হোসেন (৩৫)।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানায়, গত ১৫ জুন মাধবদী থানার ভাটপাড়ার বাসিন্দা মো: নুরুল ইসলাম তার ব্যাটারি চালিত রিকশা নিয়ে নিজ বাড়ি থেকে বের হয়। ঐদিন রাত সাড়ে আটটার দিকে মো: নুরুল ইসলাম তার ভাইকে মোবাইল ফোনে জানায় তার ব্যাটারি চালিত রিকশাটি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
পরে খবর পেয়ে তার আত্মীয়-স্বজন খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে ১৬ জুন সকালে নরসিংদীর মাধবদী থানাার দামের ভাওলা এলাকার একটি বড়ই গাছের সাথে গামছা দিয়ে বাধা অবস্থায় নুরুল ইসলামের মৃতদেহ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী শিউলি বেগম অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মাধবদী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে।
মামলার পরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল কে এম শহিদুল ইসলাম সোহাগের তত্ত্বাবধানে মাধবদী থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মোঃ রিয়াজ উদ্দিন রনিসহ মাধবদী থানা পুলিশ জড়িত আসামিদের সনাক্তকরণ, ছিনতাইকৃত ব্যাটারি চালিত রিকশা উদ্ধারে অভিযান শুরু করে।
অভিযানের একপর্যায়ে ৯ জুলাই মাধবদী থানার পুলিশের একটি টিম হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত আসামি বাচ্চু মিয়াকে মাধবদী থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। তার দেয়া তথ্য মতে অভিযান পরিচালনা করে নরসিংদী ও নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে একই দিনে ঘটনার সাথে জড়িত সহযোগী আসামী হৃদয়, সোহেল এবং নবী হোসেনকেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।
তারা জানায়, ১৫ জুন রাত আটটার দিকে নরসিংদী শহরের সাহেপ্রতাব থেকে গ্রেপ্তারকৃত বাচ্চু মিয়া, হৃদয় এবং সোহেল চালক নুরুল ইসলামের ব্যাটারি চালিত রিকশায় যাত্রী হিসেবে ওঠে। রিকশায় ঘোরাঘুরির এক পর্যায়ে ঘটনাস্থলে আসার পর আসামিরা নুরুল ইসলামকে বরই গাছের সাথে পায়ে, পেটে এবং গলায় গামছা দিয়ে শক্তভাবে বেঁধে হত্যা করে তার ব্যাটারি চালিত রিকশাটি ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
পরে তারা ৩ জন লুষ্ঠিত ব্যাটারি চালিত রিকশাটি নিয়ে নবী হোসেনের কাছে ১৫০০০ টাকায় বিক্রি করে সেই টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগ বাটোয়ারা করে। আসামী নবী হোসেন ব্যাটারি চালিত রিকশাটি ক্রয় করার সাথে সাথেই এর কিছু যন্ত্রাংশ আলাদা আলাদা খুলে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করে। গ্রেপ্তারের পর আসামী নবী হোসেনের বাড়ি থেকে ছিনতাইকৃত ব্যাটারি চালিত রিকশার ২টি ব্যাটারি, একটি চাকা এবং একটি হেডলাইট সংযুক্ত মিটার বক্স উদ্ধার করে মাধবদী থানা পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃত আসামীরা ১৬৪ ধারায় নিজেদের দোষ স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে। তারা বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছে বলে জানান নরসিংদী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :