ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা। এ খবর ছড়িয়ে পড়ার পর সোমবার দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বাড়িসহ স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা কর্মীদের বাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে উপজেলার বরমী ইউনিয়নের পোষাইদ গ্রামে আওয়ামীলীগের স্থানীয় নেতা সফিক মিয়ার বাড়িঘরে ও দোকান ভাংচুর লুটপাটের ঘটনার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বরমী ইউনিয়নের হিন্দু বাড়িতে অগ্নিসংযোগ লুটপাট ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। আওয়ামীলীগের স্থানীয় নেতারা ভয়ে অনেকেই বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছেন।
কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী ও দোকান মালিক সফিক লাল মিয়া বলেন, গতকাল সকালে স্থানীয় বিএনপির নেতা জাকির,রুহুলসহ ২৫/৩০জন লোক উপজেলার বরমী ইউনিয়নের পোষাইদ গ্রামে এসে হামলাকারীরা ২টি দোকান ও বাড়ি ঘরে হামলা ভাঙচুর করে মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।
এর মধ্যে উপজেলার বরমী ইউনিয়ন ভিটি পাড়া গ্রামের হিন্দু বাড়িতে আগুন দিয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়। জগিদাস বর্মন বলেন, হামলাকারীরা পোষাইদ গ্রামে দুইটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান একটি বাড়ি এবং ভিটিপাড়া গ্রামের আমার ভাই এর বাড়িতে আগুন দেয় এবং হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এ সময় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও মালামাল লুট করা হয়। এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে আছেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভিটি পাড়া গ্রামের শ্রীকান্ত কুমার বর্মনের বাড়ি এবং পোষাইদ গ্রামের সফিক ও লাল মিয়ার দোকান ভাঙচুর চালায় একদল দুর্বৃত্ত। এরপর লুটপাট করে। হামলাকারীরা স্থানীয়ভাবে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত বলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।
সফিক বলেন, তাঁর বাড়িতে হামলা হয়েছে স্থানীয় বিএনপির কর্মী জাকির হোসেন রাজু ও রুহুলের নেতৃত্বে। বাড়িতে হামলা—ভাঙচুরের পাশাপাশি আমাকেও মারধর করা হয়। দোকানে হামলা—ভাঙচুর চালায় এবং মালামাল ও নগদ টাকা লুট করে নিয়ে যায়।
এবিষয়ে জাকির হোসেন রাজু বলেন, আমি সফিকসহ আওয়ামীলীগের অনেককেই বর্তমান পরিস্থিতির বিষয়ে বুঝাচ্ছিলাম এবং তাদের সাথে ভালই কথা চলছিল এর মধ্যে সফিক আমাকে এবং আমার দল বিএনপিকে বাঝে ভাষায় গালাগাল শুরু করে। এর মধ্যে কথা কাটাকাটির এক ফাফে সফিক আমার মাথায় আঘাত করে আমি মাটিতে পরে যাই পরে গিয়ে অজ্ঞান হয়ে যাই। ফের কি হয়েছে আমি বলতে পারবনা। এখন আমি আহত অবস্থায় চিকিৎসা নিচ্ছি।
ভিটি পাড়া গ্রামের শ্রীকান্ত কুমার বর্মন বলেন, ফজলুল হক নামে স্থানীয় এক বিএনপির নেতা দুই দিন আগে আমাকে হুমকি দিয়ে যায়, তাকে টাকা দিতে হবে না হয় জমি লিখে দিতে হবে, যদি টাকা কিংবা জমি না দেই তাহলে আমার বাড়ি ঘর আগুন দিয়া পুড়াই দিব এবং আমাদেরকে এই এলাকা ছাড়া করবো বলে হুমকী দিয়া চলে যায়। এর এক দিন পরেই আমার বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়,আমার ধারনা ফজলুল হকের হুকুমে আমার বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে। আমি আমার পরিবার নিয়ে নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে আছি। আমি এর সঠিক বিচার চাই।
এবিষয়ে স্তানীয় বিএনপি নেতা ফজলুল হক বলেন, আমার সাথে শ্রীকান্ত কুমার বর্মনের জমি সংক্রন্ত বিষয়ে ঝামেলা রয়েছে। তবে তাকে আমি কোন ধরনের হুমকী দেই নাই। মশ্রীকান্ত কুমার বর্মন যা বলেছে সম্পন্ন মিথ্যা বানোয়াট কথা্ বলেছে।
উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আকতারুল আলম মাষ্টার বলেন, শ্রীপুর উপজেলার বিএনপির পক্ষ থেকে সকল নেতা কর্মীদেরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যার যার অবস্থান থেকে শান্ত থাকার জন্য। পাশা পাশি মানুষের পাশে ষেথে সহযোগিতা করার। আমরা শান্তি চাই। তবে একনো আমাদের পিছনে শুত্রু পক্ষ উৎ পেতে রয়েছে বিভিন্ন ভাবে অপপ্রচার চালানোর জন্য। কিছু কিছু জায়গায় আওয়ামী লীগের লোকজন তাদের নিজেদের বাড়ি ঘরে হামলা চালিয়ে বিএনপির ওপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করছে। তিনি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে কেউ জড়িত থাকলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :