নেটওয়ার্ক বিহীন বাংলাদেশ ও মায়ানমার সীমান্তবর্তী ঘেঁষা বান্দরবানে থানচিতে দুর্গম রেমাক্রী ইউপিতে বেশ কয়েকটি পাড়ার বাসিন্দাদের খাদ্যভাব দেখা দিয়েছেন। সেখানকার এলাকার ৯৫ শতাংশ মানুষ জুমচাষে নির্ভরশীল। গত বছরে জুমের ফলন বন্যার কারণে ক্ষতি সম্মুখীনে পর্যাপ্ত ধানের ফলন পাননি ওই এলাকার বাসিন্দারা। এবং চলতি বছরে জুমের ধান পাকঁতে না পাঁকতে তাদের পরিবারের খাদ্যভাব দেখা দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন- স্থানীয় বাসিন্দারা।
এদিকে থানচি উপজেলা প্রশাসনে উদ্যোগে ওখানকার জনপ্রতিনিধিদের সহায়তায় বাংলাদেশ- মায়ানমার সীমান্ত ঘেঁষা দুর্গম রেমাক্রী ইউনিয়নের ৬নং এবং ৯নং ওয়ার্ডের খাদ্যঘাটতি কবলিত সাঙ্গু রিজার্ভের গ্রামগুলোতে খাদ্যভাব সংকটের পরিবারের জন্য এক টন চাউল, ডাল, তেল ও লবণসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন- সংশ্লিষ্টরা।
সুত্রে জানা গেছে, থানচি উপজেলার রেমাক্রি ইউনিয়নের ৬ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের দুর্গম পাহাড়ে ম্রো ও ত্রিপুরাদের এই পাড়াগুলোর অবস্থান। ওই এলাকায় মেনহাত ম্রোপাড়ায় ২০ পরিবার, বুলু ম্রোপাড়ায় ১৪টি পরিবার, টাংখোওয়া ম্রোপাড়া ১৬ পরিবার, ম্রক্ষ্যং ঝিরিপাড়ার ৫ পরিবার, কংকং ত্রিপুরাপাড়ার ৮টি পরিবার, য়ংনং ম্রো পাড়াসহ আরও কয়েকটি পাড়ার মিলিয়ে শতাধিক পরিবারের খাদ্যভাব দেখা দিয়েছেন।
আরো জানা যায়, উপজেলার দুর্গম এলাকায় বসবাসরত আদিবাসী সম্প্রদায়ের কিছু সংখ্যক পরিবারে খাদ্য ঘাটতির কারনে জঙ্গলে বাঁশ কোঁড়ল সাথে এক মুঠোচাল মিশে রান্না করে খেয়ে বেঁচে আছে। খাদ্য সংকটের ফলে এক দিকে খিদের জ্বালা, অন্যদিকে ভিটামিন এর অভাবে কোমল মতি শিশুরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে। তারা বৃত্তবানদের সহযোগীতা চেয়েছেন আসন্ন জুমের ধান কাটার পর্যন্ত।
রেমাক্রী ইউপিতে ওই এলাকার ৯ নম্বর ওয়ার্ডে মেম্বার বিদ্রজয় ত্রিপুরা বলেন, আমার ওয়ার্ডে খাদ্যভাবে ভোগচ্ছে প্রায় ২০টি পরিবার। বর্ষা মৌসুমে না আসলেও এখন নিয়মিত স্বাস্থ্যকর্মী আসে, উঠান বৈঠকসহ প্রাথমিক চিকিৎসার সেবা সুযোগ পাই। তবে বর্ষা মৌসুমে এলেই বিশুদ্ধ পানি সংকট এবং শিশুসহ বয়স্কদের নানা অসুস্থতা বেশি আশঙ্কায় দেখা দেন।
রেমাক্রি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুইশৈথুই মারমা (রনি) বলেন, দুর্গম রেমাক্রী ইউনিয়নের খাদ্য ঘাটতির খবর পেয়েছি। সেখানে ইউএনও স্যারের মাধ্যমে চাল, ডাল, তেলসহ লবণ ত্রাণের নিয়ে যাচ্ছি।
থানচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মামুন বলেন, সীমান্তের গ্রামগুলো মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকার কারণে যোগাযোগও এক প্রকার বিচ্ছিন্ন। ওই এলাকার বাসিন্দাদের খাদ্য ঘটতির ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানালে তাৎক্ষণিকভাবে সহযোগিতার পরামর্শ দেন। এবং সেখানে এক টন চাউলসহ ডাল, লবন, তেল পর্যাপ্ত ত্রাণের পাঠানো হয়েছে। পর্যায়ক্রমে আরো ত্রাণ পাঠানো ব্যবস্থার চেষ্টা করার হবে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :