মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার ইউনিয়ন বিএনপির দুই নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। উপজেলার শিমুলিয়া ফেরিঘাট, মাছঘাট ও ট্রলারঘাটের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগে কুমারভোগ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি কাউসার তালুকদার ও সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন জনিকে দল থেকে বহিস্কার করা হয়েছে।
রবিবার সন্ধ্যায় দলটির মুন্সীগঞ্জ জেলা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব মো. কামরুজ্জামান রতন স্বাক্ষরিত দলীয় প্যাডে লিখিতভাবে এ আদেশ দেন। চিঠিতে বলা হয়েছে, কাউসার তালুকদার ও আনোয়ার হোসেন জনিকে গত ২৯ আগস্ট তারিখে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও গঠনতন্ত্র মোতাবেক দলীয় আদর্শ পরিপন্থী কাজ করার জন্য কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়।
কারণ দর্শানোর লিখিত জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় দল কাউসার তালুকদারকে সাময়িক ভাবে সভাপতি পদ ও জেলা বিএনপি সদস্য পদ হতে এবং আনোয়ার হোসেন জনিকে সাধারণ সম্পাদক পদ হতে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই সঙ্গে স্থায়ীভাবে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় বিএনপিকে অবহিত করে চূড়ান্ত ব্যবস্থা গ্রহণে সুপারিশ করা হয়েছে। পরবর্তীতে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ স্বাক্ষরিত এক প্রেস রিলিজেও তাদের বহিষ্কারের খবর জানানো হয়।
শিমুলিয়া ঘাট ইজারাদার সূত্রে জানা যায়, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) এর কাছ থেকে লৌহজং উপজেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক সুলতান মোল্লা প্রায় ১ কোটি ৪২ লাখ টাকায় ঘাটের ইজারা নেন। পাশাপাশি ৮ লাখ টাকায় দুটি ট্রলার ঘাট ও ১০ লাখ টাকায় মাছ ঘাটেরও ইজারা নেন তিনি।
ইজারাদার ও স্থানীয় সূত্রে আরও জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিএনপি নেতা কাউসার তালুকদার এবং সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন জনির নেতৃত্বে ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের একটি দল ঘাটের সব ব্যবসা দখলে নেন। তারা ১৬ আগস্ট ঘাটের পার্কিং, ট্রলার ঘাট, দোকান, রেস্তোরাঁ থেকে চাঁদা তুলতে শুরু করে। পর দিন ঘাটের দায়িত্বে থাকা উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি শেখ মেহেদি হাসানকে মারধর করে ঘাট থেকে বের করে দেন। পরে কাউসার তালুকদার ও আনোয়ার হোসেন জনির সঙ্গে সমঝোতায় আসতে বাধ্য হন ইজারাদার সুলতান। গত ২০ আগস্ট থেকে কাউসার তালুকদার ও আনোয়ার হোসেনরা ঘাট থেকে প্রতিদিন প্রায় লক্ষাধিক টাকার চাঁদা তুলে নিজেদের কাছে রাখছেন। শিমুলিয়া ঘাটের দখল নিয়ে কাউসার তালুকদার ও আনোয়ার হোসেন জনির চাঁদাবাজির ঘটনায় কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
এ ঘটনায় দুজনের পদত্যাগের দাবিতে গত শুক্রবার বিকালে চন্দ্রেরবাড়ি বাজারে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে কুমারভোগ ইউনিয়ন বিএনপির অধিকাংশ নেতাকর্মী। এর পর শনিবার বিকেলে তাদের অভিযোগ অস্বীকার করে কুমারভোগ ইউনিয়নের বিএনপি কার্যালয়ে (দখলকৃত) এক সংবাদ সম্মেলন করেন। এর পরই রবিবার রাতে তাদের বিরুদ্ধে এই দলীয় সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :