অটো রিকাশাচালক বাবু মোল্লা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত ১৯ জুলাই রাজধানীর রামপুরায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার দক্ষিণ গঙ্গারামপুর গ্রামের বাবু মোল্লার দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। তাদের বয়স ৩ মাস থেকে ৮ বছর। এই সন্তানদের নিয়ে তাঁর স্ত্রী শিল্পী বেগম অথৈ সাগরে পড়েছেন। তাদের কোনো জমি বা সঞ্চিত অর্থ নেই।
সন্তানদের নিয়ে শিল্পী অন্যের জায়গায় থাকেন। সম্প্রতি একটি দোকানে দর্জির কাজ শেখা শুরু করেছেন তিনি।শিল্পী বেগম বলেন, গ্রামে কাজ ছিল না। তাই জীবিকার সন্ধানে বাবু ১৫ জুলাই ঢাকার রামপুরা এলাকায় বোন রেশমা বেগমের কাছে যান। রেশমার স্বামী মাসুদ রানা তাঁকে ভাড়ায় অটোরিকশা চালানোর ব্যবস্থা করে দেন।
১৯ জুলাই বিকেলে তিনি রামপুরা টিভি সেন্টারের কাছে অটো চালানো অবস্থায় গুলিবিদ্ধ হন এবং রাতে মারা যান। ২০ জুলাই সকালে মাসুদ রানা মরদেহ নিয়ে গ্রামে আসেন। স্বামী হারিয়ে তিনি দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। কী করবেন তা বুঝে উঠতে পারছেন না। শিল্পী বেগম আরও বলেন, তাঁর স্বামী মারা যাওয়ার পর বিএনপির পক্ষ থেকে কিছু টাকা দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া গ্রামবাসীর সহযোগিতায় ছেলেমেয়ে নিয়ে বেঁচে আছেন। গ্রামের লোকজন একটি দোকানে দর্জির কাজ শেখার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। কাজ শিখে সেলাই মেশিন পেলে কিছু আয় করতে পারবেন। তিনি আশা করেন সরকার তাঁকে জায়গা দিয়ে একটি ঘর করে দেবে এবং মাসিক ভাতার ব্যবস্থা করে।
ছেলেমেয়েদের পাশে দাঁড়াবে। সেই সঙ্গে তিনি হত্যাকাণ্ডের বিচার চান। বাবু মোল্লার ভাই সোহেল মোল্লা বলেন, ‘বাবু একসময় বাসচালকের সহকারী হিসেবে কাজ করতেন। ৬ বছর আগে এ কাজ ছেড়ে ভ্যান চালানো শুরু করেন। এরপর অটো চালিয়েছেন। ছোট মেয়ের জন্মের সময় ঋণ নেন। জুলাই মাসের দিকে এলাকায় তেমন কাজ না থাকায় ঢাকায় যান।
মৃত্যুর পর পোস্টমর্টেম ছাড়াই বাবুর মরদেহ গ্রামে আনা হয়। পুরো গ্রামে তখন শোকের ছায়া নেমে আসে। রাজনৈতিক দল ও গ্রামের লোকজন বাবুর পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে।’
একুশে সংবাদ/এনএস
আপনার মতামত লিখুন :