পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৬৯ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করা হয়েছে। এতে আরও ১৫০-১৬০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।
৬ বছর আগে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হামলায় পঙ্গু হওয়া উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়ন বিএনপির তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক বশির ফকির বাদী হয়ে রোববার রাঙ্গাবালী থানায় মামলাটি (মামলা নম্বর-৩) করেন। আওয়ামী লীগের ক্ষমতা আমলে সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, লুটপাট, দখলবাজিসহ বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগ তুলে এ মামলা করা হয়।
তবে সোমবার বিকেল পর্যন্ত এ মামলায় কেউ গ্রেফতার হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মামলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সদ্য অপসারিত উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মু. সাইদুজ্জামান মামুন খানকে প্রধান আসামি করা হয়।
এছাড়া এ মামলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি একে সামসুদ্দিন আবু মিয়া, সহ-সভাপতি হুমায়ুন কবির তালুকদার, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক মাহাথির মোহাম্মদ রেশাদ মল্লিক, সহ-দপ্তর সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন শোভন, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি এস আলম, উপজেলার ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান শিবলী, ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় উপ-গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ওয়াহিদ খান রাজ, পটুয়াখালী জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাওয়াদুল কবির প্রিতম, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আরিফুজ্জামান আরিফ, সাধারণ সম্পাদক জামিল প্যাদা, উপজেলা যুবলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মশিউর রহমান শিমুল, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ওয়ালিদ তালুকদারের নাম রয়েছে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, আসামিরা বাংলাদেশ বিএনপির সভা-সমাবেশে বাঁধা এবং নেতাকর্মীদের গুম-হত্যা করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল। কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশনায় আসামিরা ক্ষমতার দাপটে আইন বহির্ভূত কর্মকাণ্ড করেও ধরাছোয়ার বাহিরে ছিল।
এজাহারে আরও বলা হয়, ২০১৮ সালের ১১ ডিসেম্বর বিকেল চারটায় জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে ধানের শীষের সমর্থনে উপজেলার নিজ হাওলা গ্রামে (খালগোড়া বাজার) জাহাগিরিয়া শাহসুফি মমতাজিয়া দাখিল মাদ্রাসা মাঠে বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেনের উপস্থিতিতে পূর্ব ঘোষিত পথসভা শুরু হলে হামলা চালায় আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনী। দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে মহড়া দিয়ে সাইদুজ্জামান মামুন খানের (উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক) নেতৃত্বে ককটেল বিস্ফোরণ করে সভামঞ্চ এবং চেয়ার-টেবিল ভাংচুর করা হয়। সেদিন বিএনপির শত শত নেতাকর্মীকে পিটিয়ে-কুপিয়ে জখম করে আসামীরা।
এজাহারে বাদীর অভিযোগ, এ হামলার সময় প্রধান আসামি মামুন খানের নির্দেশে দুই নম্বর আসামি মাহাথির রেশাদের (উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক) হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে খুনের উদ্দেশ্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মোশাররফ হোসেনের মাথা লক্ষ্য করে আঘাত করলে তাকে রক্ষায় এগিয়ে আসে মামলার বাদী বশির ফকির। তখন কোপটি লক্ষ্মভ্রষ্ট হলে বশিরের ডান পায়ের পাতা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বশির থানায় এসে মামলা করতে চাইলে আওয়ামী লীগ নেতাদের নির্দেশে তখন মামলা নেওয়া হয়নি।
এ ব্যাপারে সোমবার বিকেলে রাঙ্গাবালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, এখন পর্যন্ত এই মামলায় কেউ গ্রেফতার হয়নি। আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :