নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় এক সপ্তাহ ধরে ঘন ঘন লোডশেডিং হচ্ছে।শহরের তুলনায় গ্রামাঞ্চলে ব্যাপক লোডশেডিং হচ্ছে। ফলে বিঘ্নিত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের লেখা পড়া। অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে গ্রামাঞ্চলের জনজীবন।। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে পল্লী বিদ্যুৎ সূত্রে জানা গেছে।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কেন্দুয়া আঞ্চলিক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলায় একটি পৌরসভাসহ ১৩টি ইউনিয়নে পল্লী বিদ্যুতের প্রায় ২২ হাজার গ্রাহক আছে। এ ছাড়াও দিনদিন গ্রাহকের সংখ্যা বাড়ছে। এ অবস্থায় উপজেলায় বিদ্যুতের চাহিদার পরিমাণ প্রায় ২৪ মেগাওয়াট। কিন্তু পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ছয় থেকে আট মেগাওয়াট। ফলে গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না।
কয়েকজন গ্রাহক জানান, উপজেলা সদরে বিদ্যুৎ থাকলেও গ্রামাঞ্চলে এক সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন গড়ে ৩- ৪ ঘণ্টার বেশি বিদ্যুৎ থাকছে না। প্রতিদিন সন্ধ্যায় (পিক আওয়ার) বিদ্যুৎ চলে যায়। এ ছাড়া সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কমপক্ষে ১০-১২ বার লোডশেডিং হয়। একবার বিদ্যুৎ গেলে এক ঘণ্টা থেকে দুই ঘণ্টা পর আসে। অব্যাহত লোডশেডিং এবং ঘন ঘন বিদ্যুৎবিভ্রাটের কারণে দৈনন্দিন কাজকর্ম থেকে শুরু করে ব্যবসা-বাণিজ্য, কলকারখানায় উৎপাদন এবং বিদ্যুৎনির্ভর সব ধরনের কাজ ব্যাহত হচ্ছে। এ ছাড়া সন্ধ্যায় বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় ছাত্রছাত্রীদের লেখাপড়ার বেশি ব্যাঘাত ঘটছে।
উপজেলার মোজাফফর পুর ইউনিয়নের বাসিন্দা সলিম উদ্দিন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শহরের তুলনায় গ্রামাঞ্চলে ব্যাপক লোডশেডিং হচ্ছে।
‘নামাজের সময়ও বিদ্যুৎ থাকে না। আমরা ঠিকমতো নামাজও পড়তে পারি না। প্রায় সময় বিদ্যুৎ থাকে না। কয়েকঘন্টা পরপরই বিদ্যুৎ আসে, কিছুুক্ষণ থাকার পর আবার চলে যায়।’ লোড শেডিংয়ের কারণে ভোগান্তিতে পড়েছে শিক্ষার্থীরা। নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় বেশি ক্ষতি হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।
উপজেলার গন্ডা ইউনিয়নের শিক্ষার্থী আশরাফুল, নাদিম,লিয়ন জানায়,শহরের তুলনায় গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ কম কেন? বুঝলাম না। প্রয়োজনের সময় বিদ্যুৎ না থাকায় লেখাপড়ার করতে সমস্যা হয়। এতে আমাদের লেখাপড়ার অনেক ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে।
কেন্দুয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো. মজিবুর রহমান জানান, ‘স্বাভবিক সময়ে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল দিনে ১৬ মেগাওয়াট ও রাতে ২২ মেগাওয়াট। ‘তীব্র গরমের কারণে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে দিনে ২০ মেগাওয়াট ও রাতে ২৪ মেগাওয়াটে দাঁড়িয়েছে। আবার রাত ১২ টার পর বিদ্যুৎ পাচ্ছি মাত্র ৮ মেগাওয়াট। আমরা চাহিদানুযায়ী বিদ্যুৎ পাচ্ছি না। যার ফলে গ্রাহকদেরকে নিরবিচ্ছিন্ন সেবা দিতে পারছি না।তিনি আরও বলেন সেনা ক্যাম্প, হাসপাতাল, সরকারি অফিস ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা থাকার কারণে শহরের তুলনায় গ্রামাঞ্চলের লোডশেডিং বেশি । আর লোডশেডিং থাকার কারণে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া বিঘ্নিত হচ্ছে। বিদ্যুতের উৎপাদন স্বাভাবিক হলে লোডশেডিংয়ের সমস্যা কেটে যাবে বলেও জানান তিনি।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :