কুমিল্লার দাউদকান্দিতে অবৈধভাবে এক সিলিন্ডার থেকে অন্য সিলিন্ডারে গ্যাস ঢুকানোর অপরাধে তিনজনকে একমাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
শনিবার ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ বেলা ১২:০০ ঘটিকায় দাউদকান্দি উপজেলার গোয়ালমারী ইউনিয়নের ঢুনি নছরুদ্দী এলাকায় ঢালি হাউজে অবৈধভাবে এলপিজি গ্যাসের বোতলজাতকরণ ও বিভিন্ন কোম্পানির নামে অনুমতিহীনভাবে লেভেলিং করে গ্যাস সিলিন্ডার তৈরি ও বিপণনের বিরুদ্ধে ফায়ার সার্ভিস ও দাউদকান্দি মডেল থানা পুলিশের একটি টিম সহযোগে দাউদকান্দি উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো: জিয়াউর রহমান-এর নেতৃত্বে মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে দেখা যায়, নেওয়াজ নামক এক কোম্পানির গ্যাসের বোতল থেকে একটি মোটর যন্ত্রের মাধ্যমে অধিক মুনাফার আশায় বসুন্ধরা, ফ্রেশ, যমুনা, ওমেরা এবং ডেলটা প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানের লোগোসমৃদ্ধ সিলিন্ডার বোতলে অবৈধভাবে ও অনুমতিহীনভাবে গ্যাস ট্রান্সফার করা হচ্ছে। এতে একদিকে যেমন গ্রাহকদের সাথে প্রতিশ্রুত পণ্য না দেওয়ার প্রতারণা করা হচ্ছে- অন্যদিকে গ্যাস সিলিন্ডার লিকেজ হয়ে বিস্ফোরণ অর্থাৎ গ্রাহকের জীবন বিপন্ন হবার মতো ঝুঁকি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এভাবে অবৈধ ও অনিরাপদচাবে উন্মুক্ত গ্যাস ট্রান্সমিশনের ফলে সিলিন্ডার বিস্ফোরণের মারাত্মক আশংকা তৈরি হচ্ছে মর্মে অভিযানকালে উপস্থিত ফায়ার সার্ভিসের সদস্যগণ জানান। দাউদকান্দি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন অফিসার এরশাদ হোসাইন জানান, এখানে শত শত সিলিন্ডারের মধ্যে একটির বিস্ফোরণ হলেই বিশাল অগ্নিসংযোগ সংঘটিত হবার ঝুঁকি রয়েছে। এতে এইবাড়ি ও তার আশেপাশের এলাকায় ভয়াবহ বিপর্যয় ঘটতে পারে। অধিকন্তু, এ সিলিন্ডার ব্যবহারকারী বসতবাড়িতেও অগ্নিসংযোগ ঘটার আশংকা থাকবে। কেননা সিলিন্ডার প্যাকেজিং ও লেভেলিং-এ ন্যুনতম নিরাপত্তা রক্ষা করা হচ্ছে না। এ ঘটনার সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত ০৩ (তিন) জনকে এ সময়ে হাতেনাতে আটক করা হলে তারা প্রত্যেকেই দোষ স্বীকার করেন এবং ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
এ সময় উপজেলার ঢুনি নছরুদ্দি গ্রামের (১) ফেরদৌসী, পিতা: অলি উল্লাহ, (২)আব্দুল হাকিম, পিতা: মো: শাহজাহান, এবং (৩) হাবিব হাসান, পিতা: আ: মমিন নামক তিন ব্যক্তিকে আটক করা হয় এবং ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ প্রয়োগ করে সেবাগ্রহীতার জীবন হানিকর এ কার্যক্রমের সাথে জড়িত থাকার জন্য প্রত্যেককে ০১(এক) মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।
সরেজমিনে জানা যায়, অভিযুক্ত ফেরদৌসীর স্বামী আব্দুস সালাম বাইরে থেকে এ ব্যবসায়ের মালামাল যোগান এবং অন্যান্য সিন্ডিকেটের সাথে যোগাযোগ রাখেন৷ অপরদিকে তার স্ত্রী ফেরদৌসী ভেতরে অন্যান্য কর্মচারীদের সাথে নিয়ে এ কার্যক্রম পরিচালনা করেন। উল্লেখ্য, ইতোপূর্বেও এখানে ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে এখানে অভিযান চালিয়ে ২ (দুই) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করাসহ অভিযুক্ত ব্যক্তি ও কর্মরত শ্রমিকদের থেকে ভবিষ্যতে এমন ঝুঁকিপূর্ণ কাজ আর করবে না মর্মে মুচলেকা নেওয়া হয়েছিল। তথাপিও তারা তাদের কাজ থামাননি বরং আগের চেয়ে আরো ব্যাপকভাবে এ কাজ চলছিল মর্মে সরেজমিনে দেখা যায়।
এ অভিযানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাসহ সার্বিক সহযোগিতা করেন দাউদকান্দি মডেল থানা এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর, দাউদকান্দি`র দু`টি দল।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :