খুলনা নিউজপ্রিন্ট মিলের ৫০০ কোটি টাকার যন্ত্রাংশ মাত্র ৬৮ কোটি টাকায় বিক্রি করার ঘটনা ঘটেছে, যা নিয়ে আলোচনা চলছে। তবে, এখনও পর্যন্ত কোনো দরপত্র জমা পড়েনি। এর ফলে, তৃতীয়বারের মতো মেসার্স ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং নামক প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কর্মকর্তাদের দাবি, এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে ঘুষ বা অবৈধ লেনদেনের অভিযোগ সঠিক নয়।
খুলনা নিউজপ্রিন্ট মিল, এশিয়ার বৃহত্তম নিউজপ্রিন্ট উৎপাদন কেন্দ্র, ১৯৫৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। সুন্দরবনের গেওয়া কাঠের ওপর ভিত্তি করে খুলনার খালিশপুরে ৮৮.৬৮ একর জমির ওপর নির্মিত এই মিলটি ১৯৫৯ সালে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করে এবং তখন এর বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা ছিল ৪৮ হাজার টন। প্রথম চার দশক লাভজনক থাকার পর ১৯৯২ সাল থেকে এই মিলটি লোকসানের সম্মুখীন হতে থাকে।
১৯৯৫-৯৬ অর্থবছরে নিউজপ্রিন্টের ওপর ৭৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক প্রত্যাহারের পর অনেক ব্যবসায়ী বিদেশ থেকে কাগজ আমদানি শুরু করেন, যার ফলে খুলনা নিউজপ্রিন্টের চাহিদা মারাত্মকভাবে কমে যায়। তাছাড়া, সুন্দরবনকে বিশ্বের ঐতিহ্যের অংশ ঘোষণা করার পর কাঁচামালের সংকটের কারণে মিলটি অশান্তির সম্মুখীন হয়।
ফলস্বরূপ, ১৯৯৫ থেকে ২০০২ সালের মধ্যে মিলটির লোকসান দাঁড়ায় ২৮৪ কোটি টাকায়। অব্যাহত লোকসান এবং মূলধনের ঘাটতির কারণে ২০০২ সালের ৩০ নভেম্বর মিলটির উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়, এবং প্রায় ৩ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী বেকার হয়ে পড়েন।
এভাবে, খুলনা নিউজপ্রিন্ট মিলের সংকটময় পরিস্থিতি দেশের শিল্প খাতে একটি বড় প্রশ্নচিহ্ন তুলে ধরছে।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :