দূর্বৃত্তদের হামলার ক্ষত নিয়ে প্রাই তিন মাস ধরে বন্ধ রয়েছে গাজীপুরের শ্রীপুরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক। এতে বিপাকে পরেছে পার্ক কেন্দ্রিক ব্যবসায়ী ও অটোরক্সিা চালকরা। কয়েক’শ পরিবারের দিন কাটছে চরম অর্থকষ্টে। পাচঁ আগষ্ট সাবেক প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশ ছাড়ার দিন বিকেলে পার্কে হামলা ভাংচুরের ঘটনা ঘটে । এক দল দূর্র্বৃত্ত পার্কের প্রধান ফটক ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে ব্যাপক ভাংচুর লুটপাট চালায়। সংশ্লিষ্টদের দাবী ওই হামলার ঘটনায় পার্কের প্রায় দশ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
জানাযায়, ছাত্র—জনতার আন্দোলনের মুখে গত পাঁচ আগষ্ট দেশ ছেড়েন সাবেক প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই দিন বিকেলে দূর্বৃত্তরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে হামলা চালায়। হামলা কারীরা পার্কের প্রধান ফটক ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে। দূর্বৃত্তরা হামলা করে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি, আবাসিক ভবন, অফিস,বিভিন্ন স্থাপনা,পাখি এ্যাভিয়ারী,ক্রাওন ফিজিয়ান এ্যাভিয়ারী, রেষ্ট হাউস, ন্যাচার হিষ্ট্রি মিউজিয়াম, শিশু পার্ক, হলরুম ও ফোডকোর্টে। এসব স্থাপনায় ব্যাপক ভাংচুর করা হয়। লুটে নেয়া হয় অফিসের ল্যাপটপ,সিসিটিভির মনিটর,বিভিন্ন বৈদ্যুতিক সামগ্রী সহ বিভিন্ন মালামাল। ভাংচুর করা হয় প্রাণীদের গতিবিধি পর্যবেক্ষন করার জন্য স্থাপিত ৩২টি সিসি কেমেরাও। কেটে নেয়া হয় বিভিন্ন সংযোগের বৈদ্যুতিক তার।গত ছয় আগষ্ট থেকে পার্কে দর্শনার্থীদের প্রবেশ বন্ধ রয়েছে। ভোর থেকে যে এলাকা দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখোর থাকতো। সেখানে এখন শুন শান নিরবতা। পুরো পার্ক এলাকায় এক স্তব্ধতা বিরাজ করছে। ঝোপঝাড়ে ভরে যাচ্ছে পার্ক প্রাঙ্গন।
পার্ক বন্ধ থাকার নেতিবাচক প্রভাব শুধু প্রকৃতিতে পড়েনি। পড়েছে পার্ককেন্দ্রিক ব্যবসায়ীদের উপর। ওই এলাকায় গড়ে উঠেছে বিভিন্ন দোকান, হোটেল সহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। রয়েছে বেশ ক’টি পিকনিক স্পট,রিসোর্ট। বাঘের বাজার থেকে পার্ক গেট পর্যন্ত সড়কে চলতো কয়েক’শ অটোরিক্সা। পার্কের আশপাশে বসতো ভাসমান হকারদের পসরা। যার উপর ভাড় করে চলতো কয়েক হাজার মানুষের জীবিকা। স্বল্প পুজির এসব ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা পরেছেন চরম বিপাকে।
পার্ক গেইটের ইয়াসিন হোটেলের মালিক ফয়েজ উদ্দিন জানান, পার্ক বন্ধ থাকায় বসেবসে কর্মচারীর বেতন ও দোকান ভাড়া দিতে হচ্ছে।এখানকার সব গুলো দোকানই বন্ধ। ব্যবসায়ীরা শুধু দোকান খুলে বসে দিন কাটায়। অটোচালক হারিছ মিয়া জানান, বাঘের বাজার থেকে পার্ক পর্যন্ত সড়কে কয়েক’শ অটোরিক্সা চলাচল করে। পার্কে ভ্রমনে আসার দর্শনার্থীরাই ছিলো এসব অটোরি´ার যাত্রী। পার্ক বন্ধ থাকায় নেই দর্শনার্থী । বন্ধ হয়ে গেছে অটোচালকদের রোজগার। নিন্ম আয়ের মানুষ গুলো পরেছেন চরম বিপাকে।
পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সহকারী বন সংরক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম জানান, গত পাঁচ আগষ্ট বিকেলে দূর্বৃত্তরা পার্কের প্রধান ফটক ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে হামলা চালায়। ভয়াভহ ওই সময় আমরা ঝোপঝাড়ে লুকিয়ে আত্নরক্ষা করি। হামলা কারীরা ব্যাপক ভাংচুর লুটপাট করে। এতে পার্কের প্রায় দশ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ভাংচুরের বিষয়ে থানায় অভিযোগ দিয়েছি। পুলিশ কোন ব্যবস্থা নেয়নি। পার্কের স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে কতো সময় লাগবে তা ঠিক বলতে পারিনা।
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষন বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ও পার্কের প্রকল্প পরিচালক আহাম্মদ নিয়ামুর রহমান জানান, দূর্বৃত্তদের হামলায় পার্কের ব্যপক ক্ষতি হয়েছে। আমরা সংস্কারের উদ্দোগ নিয়েছি। খুব দ্রুত সময়ে পাকর্রে স্বাভাবিক কার্যক্রম চালানোর চেষ্টা করছি।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :