আট মাস পর ফের উৎপাদনে ফিরেছে দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রীয় সার কারখানা আনোয়ারায় অবস্থিত চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেড (সিইউএফএল)।
রবিবার দিবাগত রাত ১টা থেকে কারখানাটিতে উৎপাদন শুরু হয় বলে জানান কর্তৃপক্ষ। এর আগে যান্ত্রিকত্রুটি ও গ্যাস সংকটের কারণে গত ৯ ফেব্রুয়ারী থেকে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। কারখানাটিতে ইউরিয়া সারের পাশাপাশি অ্যামোনিয়াও উৎপাদন হয়। পূর্ণমাত্রায় উৎপাদনের জন্য সম্পূর্ণ গ্যাসনির্ভর এ কারখানায় দৈনিক ৪৮ থেকে ৫২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের প্রয়োজন হয়। দীর্ঘ ৮ মাস উৎপাদন বন্ধে ১ হাজার ৮১৫ কোটি ৩৬ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে জানা যায়।
কারখানা সূত্রে জানা যায়, বিসিআইসির নিয়ন্ত্রণাধীন এ কারখানায় প্রতিদিন গড়ে ১২ শ টন ইউরিয়া সার ও ৮০০ টন অ্যামোনিয়া উৎপাদিত হয়। বিসিআইসির ডিলারদের মাধ্যমে প্রতি টন ইউরিয়া সার ২৫ হাজার টাকা করে ৩ কোটি টাকা আর প্রতি টন অ্যামোনিয়া ৫৪ হাজার টাকা করে দৈনিক ৪ কোটি ৩২ লাখ টাকার অ্যামোনিয়া উৎপাদন হয় এ কারখানায়।
এ হিসেবে রবিবার পর্যন্ত (১৩ অক্টোবর) ২৪৮ দিন কারখানাটি বন্ধ থাকায় ৭শ ৪৪ কোটি টাকার ইউরিয়া সার ও ১ হাজার ৭১ কোটি ৩৬ লাখ টাকার অ্যামোনিয়া উৎপাদন করা সম্ভব হয়নি। এতে ক্ষতির পরিমাণ ১ হাজার ৮১৫ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। জান যায়, ১৯৮৭ সালের ২৯ অক্টোবর জাপানের কারিগরি সহায়তায় কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পারে চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার রাঙ্গাদিয়ায় সার কারখানাটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। কারখানায় উৎপাদন শুরু হওয়ার সময় দৈনিক ১ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন হিসেবে বার্ষিক ৫ লাখ ৬১ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া উৎপাদনের ক্ষমতা থাকলেও বর্তমানে দৈনিক ১ হাজার ২০০ মেট্রিক টন ইউরিয়া উৎপাদিত হচ্ছে। পাশাপাশি দৈনিক ৮০০ মেট্রিক টন হিসেবে বার্ষিক ৩ লাখ ১০ মেট্রিক টন অ্যামোনিয়া উৎপাদন করতে পারে এ কারখানায়। দেশে ইউরিয়া সারের চাহিদা বছরে প্রায় ২৬ লাখ মেট্রিক টন। তার মধ্যে সিইউএফএলসহ বিসিআইসির অন্যান্য কারখানা প্রায় ১০ লাখ মেট্রিক টন ইউরিয়া উৎপাদন করে।
অবশিষ্ট ১৬ লাখ মেট্রিক টন ইউরিয়া উচ্চ মূল্যে আমদানি করতে হয়। সিইউএফএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, যান্ত্রিক ত্রুটি ও গ্যাস সংকটের কারণে গত ৯ই ফেব্রুয়ারী থেকে কারখানায় ইউরিয়া ও অ্যামোনিয়া উৎপাদন বন্ধ ছিল। রবিবার রাত ১টা থেকে ইউরিয়া উৎপাদন শুরু হয়েছে। চাহিদা মতো গ্যাস পাওয়া গেলে দেশের কৃষিখাতে বিরাট ভুমিকা রাখবে এ কারখানা। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
এখন কারখানায় উৎপাদনের প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের মধ্যে আনন্দ বিরাজ করছে।
একুশে সংবাদ/এনএস
আপনার মতামত লিখুন :