নেত্রকোণার মদনের ইউএনও মো. শাহ আলম মিয়ার বিরুদ্ধে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্রজনতার ওপর গুলি করার নির্দেশ দেওয়া অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (১৪ অক্টোবর) বিভাগীয় কমিশনার বরাবর আবুল হাশেমসহ আট জনের স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়। এছাড়াও জনপ্রশাসন উপদেষ্টা সহ আরও কয়েকটি দপ্তরে অনুলিপি প্রদান করেন তারা।
জানা গেছে, চারদলীয় জোট সরকারের সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের সংসদীয় আসন নেত্রকোণা-৪ (মদন, মোহনগঞ্জ খালিয়াজুরী)। মদন তাঁর নিজ উপজেলা। এই উপজেলার লোকজন ৭০ ভাগেরও বেশি বিএনপি সমর্থিত। বাকি ৩০ ভাগ অন্য সব দল মিলিয়ে সমর্থক রয়েছে। ৫ আগস্ট সকালে শেখ হাসিনা সরকার পতনের আগেই মদন উপজেলা কে বৈষম্য বিরোধী ছাত্রজনতা স্বাধীন করে। এরপর সারা বাংলাদেশ স্বাধীন হয়।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মদন ইউএনও মো. শাহ আলম মিয়া বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে সাবেক প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও সাবেক সংসদ সদস্য সাজ্জাদুল হাসানের ঘনিষ্টজন হিসেবে মদন যোগদান করেন। তখন থেকেই তিনি জাতীয় নির্বাচনে ভোট কারচুপিসহ বিরোধী মতের উপর কঠোর আচরণ করেন। গত ১৮ জুলাই মদনে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের হাতে থাকা রামদা ও বিভিন্ন দেশিও অস্ত্রসহ এবং পুলিশ বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্র জনতার উপর গুলি চালানোর নির্দেশ প্রদান করেন। পুলিশের গুলিতে ও নেতাকর্মীদের হাতে থাকা ধারালো অস্ত্রের আঘাতে অনেক ছাত্র জনতা আহত হন।
যেখানে মদন সরকারি কলেজের ছাত্র নবাব ও আব্দুল বারেক সহ পুলিশের ছোড়া গুলিতে ১৯ জনের সারা শরীর ঝাঁঝরা করে দেওয়া হয়। চিরদিনের জন্য তাদের দুজনের চোখ নষ্ট হয়ে যায়। তিনি এখনও আওয়ামিলীগের কুখ্যাত নেতাদেরকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করে আসছেন। সকল আমজনতাকে পাশ কাটিয়ে বিএনপির কিছু সুবিধাভোগী নেতাকর্মীদেরকে বিভিন্ন রকম অবৈধ সুযোগ সুবিধা প্রদান করে দলের ভিভরে কোন্দল সৃষ্টি করে ত্যাগী ও নির্ঘাতিত নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘাতের পরিস্থিতি সৃষ্টি করে দিয়েছেন। তাই তিনি মদনে কর্মরত থাকলে যেকোন সময় বড় রকমের দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে।
১৮ জুলাই পুলিশের গুলিতে চোখ হারানো মৈধাম গ্রামের চানগাও ইউনিয়ন ছাত্র দলের সাধারণ সম্পাদক নবাব মিয়া বলেন, মদন উপজেলার ইউএনও মোঃ শাহ আলম মিয়া উপস্থিত থেকে ছাত্র জনতার উপর গুলি ছোড়ার নির্দেশ দেয়। আমি এখন এক চোখে দেখতে পাই না। তিনি স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের দমন নিপীড়নের সব ধরনের জঘন্য কাজে লিপ্ত ছিলেন। অন্তর্বর্তী সরকারের জনপ্রশাসন উপদেষ্টার কাছে দাবি জানাচ্ছি তাকে চাকরিচ্যুত করে সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনা হোক।
জঙ্গলটেঙ্গা গ্রামের অভিযোগকারী আবুল হাশেম জানান মদনের ইউএনও মো. শাহ আলম মিয়া আওয়ামী লীগের দালাল হিসেবে সব ধরনের ধমন নীপিড়নে মত্ত ছিল। এখনো কুখ্যাত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করে যাচ্ছে। আমি চাই সরকারের সর্বোচ্চ মহল থেকে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
মদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শাহ আলম মিয়ার নাম্বারে একাধিকবার কল করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এব্যাপারে ময়মনসিংহের বিভাগীয় কমিশনার উম্মে সালমা তানজিয়া জানান, এখনও অভিযোগ পায়নি।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :