ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে পাহাড়ি জেলা বান্দরবানে পালিত হচ্ছে বৌদ্ধধর্মালম্বী মারমা সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব ওয়াগ্যেই পোয়েঃ বা প্রবারণা পূর্ণিমা।
বৃহস্পতিবার সরেজমিন সবদিকে সাজ সাজ রবের দেখা মেলে। শহর ও পাহাড়ী পল্লীগুলোতে চলছে ধর্মীয় ও আদি সামাজিক নানান ঐতিহ্যের অনুষ্ঠান। সকল প্রাণীজগতের মঙ্গল কামনায় বিহারে বিহারে বিশেষ প্রার্থনাও করছে মারমা সম্প্রদায়। ওয়াগ্যেই পোয়েকে ঘিরে উৎসব মূখর হয়ে উঠেছে পুরো পাহাড়ী জনপদ বান্দরবান।
বৌদ্ধ ধর্মে বিশ্বাসী মারমারা আর্শিণী পুর্ণিমা থেকে আষাঢ়ী পূর্ণিমা পর্যন্ত তিনমাস বর্ষাবাস পালন করেন। আর এই দিনে আকাশে ফানুস উড়িয়ে থাকে স্বর্গালোকে অবস্থিত চুলামণি জাদির উদ্যেশ্যে। বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের এই প্রধান ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব হলো আত্মশুদ্ধির অনুষ্ঠান, অশুভকে বর্জন করে সত্য ও সুন্দরকে বরণ করা।
বৌদ্ধধর্মে বিশ্বাসী মারমা বয়-বৃদ্ধ, তরুণ-তরুণী ও শিশু-কিশোররা এইদিনে সকালে বিহারে বিহারে গিয়ে ধর্মীয় গুরুদের ছোয়াইং দান (ভান্তেদের ভাল খাবার পরিবেশন) করেন এবং সকালেই সমবেত প্রার্থনা ও সন্ধ্যায় মঙ্গলপ্রদীপ প্রজ্জলনে অংশ নিচ্ছেন।
রাতে মারমা তরুণ-তরুণীরা নেচে গেয়ে ময়ুর আকৃতির রথ নিয়ে সারাশহর প্রদক্ষীণ করেন। এসময় রাস্তার দু’পাশে বয়-বৃদ্ধ ও তরুণীরা রথে মোমের বাতি জ্বালিয়ে বৌদ্ধের প্রতি সম্মান জানান। এছাড়াও সন্ধ্যায় থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মারমা সম্প্রদায়ের লোকজন পল্লীতে পল্লীতে জড়ো হয়ে ফানুষ উড়ানো, পিঠা তৈরী উৎসবে মেতে থাকেন।
রথযাত্রা, ফানুস উড়ানো, পিতা তৈরী দেখতে প্রতিবারেই বান্দরবানে ছুটে আসে দেশী-বিদেশী পর্যটকেরা। তবে নিষেধাজ্ঞার কারণে এবার পর্যটকের আসার সম্ভাবনা কম। বান্দরবানে মারমা সম্প্রদায় শত শত বছর ধরে এ ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব পালন করে আসছে।
১৮ অক্টোবর গভীর রাতে সাঙ্গু নদীতে রথ বির্সজন ও ২২ অক্টোবর বিহারে সমবেত হয়ে দেশ ও জাতির মঙ্গল প্রার্থনা মধ্যদিয়ে শেষ হবে ওয়াগ্যেই পোয়ে উৎসব।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :