ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় একটি তৈরি পোশাক কারখানায় ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে যৌথবাহিনী। বুধবার সকালের দিকে উপজেলার জামগড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। প্রাথমিকভাবে আটকদের নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনার একটি সাড়ে ৫ মিনিটের সিসিটিভি ফুটেজ এ প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। এতে দেখা যায়, সকাল ৯টা ৩৪ মিনিটের দিকে কারখানার গেটের সামনে দিয়ে একদল লোক দৌড়ে যাচ্ছে। পথচারীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা যায়। কেউ কেউ দাঁড়িয়ে পড়েন। ৪০ সেকেন্ডের দিকে লাঠিসোটা ও দাসহ বিভিন্ন দেশিয় অস্ত্র নিয়ে অন্তত ২৫-৩০ জনকে দ্রুত হেঁটে যেতে দেখা যায়। এদের অনেকেই ছিল কিশোর বয়সী। কারো কারো মুখ কাপরে বাধা ছিল।
ওই সময় ভেতরে থাকা নিরাপত্তারক্ষীরা বাঁশ দিয়ে গেটে ঠেস দিয়ে গেট আটকে রাখেন। পুরো সময় জুড়ে সড়কে দা, চাপাতি হাতে অনেককেই হাঁটতে দেখা যায়। জড়ো হয়ে তারা মহড়া দিচ্ছিলেন।
এদিকে আশুলিয়া থানা পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় আশুলিয়ার জামগড়া এলাকার দ্য রোজ ড্রেসেস লিমিটেড কারখানায় ঝুটের ব্যবসা করতেন আশুলিয়া থানা যুবলীগের আহ্বায়ক কবির হোসেন সরকার ও তার নেতা-কর্মীরা। গত ৫ আগস্টের পর কবির সরকারের লোকজন স্থানীয় বিএনপির একটি পক্ষের সহযোগিতা নিয়ে সে ব্যবসা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন। আজ বুধবার সকাল ৯ টার দিকে আশুলিয়া থানা বিএনপির প্রচার সম্পাদক আনোয়ার হোসেন রানা, ঢাকা জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান রনিসহ বেশকয়েকজন বিএনপি নেতা-কর্মী ওই কারখানার সামনে ঝুট ব্যবসা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে যান। এ সময় কবির সরকারের লোকজন আগ্নেয়াস্ত্রসহ দেশীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে সেখানে উপস্থিত হন। পরে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এঘটনায় যৌথবাহিনী অভিযান চালিয়ে তিনজনকে আটক করেছে।
আশুলিয়া থানা বিএনপির প্রচার সম্পাদক আনোয়ার হোসেন রানা বলেন, পোশাক কারখানাটিতে আগে আশুলিয়া থানা যুবলীগের আহবায়ক কবির হোসেন সরকার ঝুট ব্যবসা করতেন। তার বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতা হত্যার প্রায় ২৫ টিরও অধিক মামলা হয়েছে। আমরা কারখানার ম্যানেজমেন্টের সাথে কথা বলার জন্য আজ কারখানার সামনে যাই। এ সময় আওয়ামী লীগের আরিফ মাদবর, রতন, তানভীর, গালকাটা জুয়েল, হান্নান ও পারভেজসহ প্রায় ১০০/১৫০ জন আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এসে আমাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এসময় আমরা নিরাপদ স্থানে চলে যাই।
আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক বলেন, সকাল বেলা খবর পাই, রোজ গার্মেন্টসে গণ্ডগোল হচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে থানার টিম ও যৌথবাহিনি সেখানে যায়। ওই ঘটনায় তিনজনকে আটক করা হয়েছে। রোজ গার্মেন্টসে আগে যারা ঝুট আনা নেওয়া করতো, ওই পক্ষ ও নতুন করে মামুনের নামে একটা ডিট হওয়ার কথা ছিল। যখন ডিটের কথা শুনছে, তখন আগের পার্টি এসে বাধা দেয়। আমরা খবর পেয়ে ওই ঘটনাস্থলে যাই। এখন পরিস্থিতি শান্ত। আর আমাদের অভিযান চলছে।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :