পৌষ ও মাঘ এ দুই মাস শীতকাল ধরা হলেও কার্তিকের শুরুতেই শীতের আগাম বার্তা জানান দিচ্ছে চাঁপাইনবাবগঞ্জে। দিনে গরম থাকলেও রাতে হালকা শীত পড়তে শুরু করেছে। আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে নিউমোনিয়া রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। প্রতিদিনই এর সংখ্যা বাড়ছে। ফলে রোগীর চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে ২৫০ শয্যার চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বেড সংকটে বাধ্য হয়ে বারান্দার মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছে রোগীরা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালে শিশু, নবজাতক ও শিশু ডায়রিয়া ওয়ার্ডে মোট শয্যা রয়েছে ৩২ টি। এর বিপরীতে ভর্তি আছে আড়াই শতাধিক রোগী। শয্যা না পেয়ে মেঝেতেই চিকিৎসা নিচ্ছেন অনেকে। এতে সেবা দিতে বেগ পেতে হচ্ছে ডাক্তার-নার্সদের। এছাড়াও ঠান্ডা জনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন অন্তত ২ শতাধিক শিশু হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। হাসপাতালে বেড না পেয়ে মেঝে-বারান্দায় চিকিৎসা নিতে হচ্ছে তাদের। এতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে রোগীর স্বজনদের।
হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, হঠাৎ নিউমোনিয়া আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া বেড সংকট দেখা দিয়েছে। বেড না পেয়ে হাসপাতালে মেঝেতে ও বারান্দায় সন্তানদের চিকিৎসা নিচ্ছেন রোগীর স্বজনরা।
নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশুর মায়েরা জানান, তাদের সন্তানদের নিউমোনিয়া হওয়ায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসেন। কিন্তু হাসপাতালে বেড না পেয়ে বাধ্য হয়ে মেঝেতে বসে চিকিৎসা করাচ্ছেন। রাতে হালকা শীত পড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে মেঝেতে থাকায় সন্তানদের সুস্থতা নিয়ে সংশয়ে আছেন তারা।
শিবগঞ্জ উপজেলার কালোপুরের সাইফুল ইসলাম নামে এক শিশুর বাবা বলেন, তার ৩৯ দিন বয়সীয় শিশু নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হলে দুই আগে হাসপাতালে ভর্তি করেন। এরপর থেকেই শয্যা না পেয়ে মেঝেতে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তিনি বলেন,রাতে মশার অত্যাচার আর দিনে অন্য রোগী ও স্বজনদের ভীড়। এমন পরিবেশ শিশুরা সুস্থ হওয়া নিয়ে শঙ্কার কথা জানান তিনি।
সদর উপজেলার দেবীনগর এলাকার বাসিন্দা সাবিনা বেগম বলেন, তিন দিন ধরে তার দুই মাসের বাচ্চা ঠান্ডা জ্বরে ভুগছিল। বাড়ীতে রেখে গ্রাম্য চিকিৎকের পরামর্শে ওষুধ দিচ্ছিলেন। হঠাৎ করে অসুস্থ্যতা আরও বাড়লে জেলা হাসপাতালে ভর্তি করেন। এরপর থেকে সিড়ির এক কোনে ছোট একটি বিছানা পেতে অবস্থান করছেন।
হাসপাতালের নাসিং সুপারভাইজার বেগম নুরুন নাহার বলেন, তাদের ডায়রিয়া ও শিশু ওয়ার্ডে মোট শয্যা ৩২টি। এর বিপরীতে রোগী ভর্তি আছে আড়াইশ`র কাছাকাছি। রোগীর চাপে সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এরপরেও সকলে আন্তরিকার সাথে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
২৫০ শয্যার চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালের শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মাহফুজ রায়হান বলেন, হালকা শীতে নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশুদের সংখ্যা বাড়ছে। প্রতিদিনই নতুন নতুন নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশু হাসপাতালে আসছে। কেউ ভর্তি হয় আবার কেউ বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছে। রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :