গত ১৩ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ২২ দিনের জন্য ইলিশ নিধন, বিক্রি ও পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও রাজশাহীতে চলছে ইলিশ ধরার কার্যক্রম। দিনে ও রাতে জেলেরা মৎস্য অফিস ও নৌ পুলিশকে ম্যানেজ করে ইলিশ ধরার অভিযোগ উঠেছে। ফলে প্রতিদিন ব্যাপক হারে ইলিশ ধরা পড়ছে পদ্মা নদীতে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজশাহীর গোদাগাড়ী ও চারঘাট উপজেলায় দিনে ও রাতে জেলেরা অবৈধ কারেন্ট জাল দিয়ে মা ইলিশ নিধন করা হচ্ছে। নিষেধাজ্ঞার শুরুতে কয়েকদিন জেলেরা নদীতে তেমন না নামলেও পরে সব জেলেরা মাছ ধরার জন্য নদীতে নেমে পড়েছে। এসব মা ও জাটকা ইলিশ বাজারের আড়তে বিক্রি না হলেও জেলেরা আপন আপন এলাকায় খুব সকালে ও সন্ধ্যার পর থেকে মাছ বিক্রি করছে। এছাড়াও জেলেরা পূর্ব হতেই ক্রেতা ঠিক করে রেখে নদী থেকে উঠা মাত্রই ক্রেতারা এসে ইলিশ কিনে নিয়ে যাচ্ছে। আবার জেলেরা নিজেরাই ক্রেতাদের বাড়ী বাড়ী গিয়ে ইলিশ পৌছে দিচ্ছে। অনেক জেলে নিজেদের বাড়ীতে ফ্রিজে িইলিশ মাছ সংরক্ষণ করে রাখছে। নিষেধাজ্ঞা উঠে যাবার পর এসব ইলিশ বিক্রি করা হবে।
এক কেজি বা তার বেশী ওজনের ইলিশ বিক্রি হবে ১২০০ টাকা হতে ২০০০ টাকা কেজি। কেজিতে চারটা এমন ওজনের ইলিশ ৬০০ হতে ৮০০ টাকা কেজি ও জাটকা কেজিতে ৭-৮টা এমন ওজনের ইলিশ ৪০০ হতে সাড়ে ৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করে গোদাগাড়ী উপজেলার এক জেলে জানান, প্রতিবার ইলিশ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। তবে এসব নিষেধাজ্ঞা জেলেরা মানেন না। এই সময়টা পদ্মা নদীতে বড় বড় পাঙ্গাস ও বঘাইড় মাছ ধরা পরে এই মাছ ধরার অজুহাতে জেলেরা অবাধে ইলিশ ধরে। মৎস্য অফিস ও নৌ পুলিশ অভিযান চালালে জেলেরা আগে থেকেই জেনে যায়। মাঝে মধ্যে লোক দেখানো জাল ধরে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
বিশেষ করে নৌ পুলিশ জানে পদ্মায় কখন জেলেরা ইলিশ ধরে তবে নৌ পুলিশ ম্যানেজ হয়ে যাওয়ায় জেলেরা পদ্মায় মাছ ধরতে ভয় করে না।
এদিকে গোদাগাড়ী নৌ পুলিশের ইনচার্জ ওসি তৌহিদ জানান, আমরা মৎস্য অফিস, এসিল্যান্ড ও গোদাগাড়ী থানা পুলিশের সহযোগিতায় সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি। লোকবল কম থাকা ও টহলে কিছু নির্দেশনা থাকায় অনেক সময় রাতে টহল নেওয়া সম্ভব হয়া না। ম্যানেজ হওয়ার বিষয়টি তিনি বলেন এমন কিছু নেই আমরা নিয়ম মেনেই নিয়মিত টহল পরিচালনা করছি।
গোদাগাড়ী উপজেলা সিনিয়র মৎস্য অফিসার অহেদুজ্জামান বলেন, গত ১৩ অক্টোবর দিবাগত রাত ১২ টা হতে ইলিশ ধরার ১৩ অক্টোবর নিষেধাজ্ঞার্ শুরু হয়েছে। আমরা প্রতিদিন নিয়মিত টহল অব্যাহত রেখেছি। কিছু জাল উদ্ধার করেছি।লোকবল কম থাকায় ইচ্ছো থাকা সত্ত্বেও অনেক সময় কিছুটা ঘাটতি হয়। আমরা নৌ পুলিশ বা থানা পুলিশের সহযোগিতায় অভিযান পরিচালনা করি তবে নৌ পুলিশ যদি গাফলতি করে তবে না দুঃখ জনক।
অপর দিকে জনা গেছে জেলার চারঘাট উপজেলাতেও একই কায়দায় চলছে মা ইলিশ নিধন। এই উপজেলা থেকে সীমান্ত দিয়ে ভারতে ইলিশ পাচার হওয়ার অভিযোগ আছে। এছাড়াও রাজশাহী মহানগরীতেও পদ্মা হতে ইলিশ মাছ ধরে বিক্রি করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :