গরু চোর সন্দেহে ৩ জনকে পিটিয়ে হত্যা, আসামি ২ হাজার

নড়াইলে মাইকে ঘোষণা দিয়ে লোক জড়ো করে গরু চোর সন্দেহে ৩ জনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় নড়াইল সদর থানায় অজ্ঞাত ২ হাজার জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। বুধবার রাতে সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সুভাষ কুমার রায় বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাজেদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) দিনগত রাতে নড়াইল সদরের তুলারামপুর গ্রামের রেলব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় হান্নান মোল্লার বাড়িতে হানা দেয় এক দল চোর দল। কুকুরের ডাকে গৃহকর্তা হান্নান মোল্লা টের পেয়ে মুঠোফোন লোকজনকে খবর দেন। পরে স্থানীয় মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে লোক জড়ো করেন। এ সময় চোরেরা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাদের ধাওয়া করে গণপিটুনি দেন স্থানীয়রা। এতে ঘটনাস্থলে তিনজন নিহত হন এবং একজন পালিয়ে যায়।

নিহতরা হলেন: নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার তেলকাড়া গ্রামের হাফিজুর মোল্লার ছেলে জান্নাতুল শেখ (২৮), বগুড়া শিবগঞ্জ উপজেলার মাইজপাড়া গ্রামের জহিরুল ইসলামের ছেলে দুলাল মিয়া (৩০) এবং ওই উপজেলার আওলাদীপুর গ্রামের বেলাল উদ্দীন মোল্লার ছেলে নুরুন্নবী মোল্লা (৩৫)।

এলাকাবাসী জানায়, একটি গরু চোর চক্র দীর্ঘদিন ধরে নড়াইলের বিভিন্ন এলাকা থেকে গরু চুরি করে আসছিল। এমনকি গরু চুরি করে নিয়ে যাওয়ার পর চিরকুট ফেলে যায় ‘গোয়াল আপনার, গরু আমাদের’।  গত দুই মাসে এলাকা থেকে প্রায় ৪০টি গরু চুরির ঘটনা ঘটেছে। অনেকে লোন করে গরু কিনে পালন করছে, সেটা চোরের দল রাতের আঁধারে চুরি করে নিয়ে পরিবারটিকে পথে বসিয়ে দিচ্ছে। পরম যত্নে গরু লালন পালন করে, সারাদিনের পরিশ্রমের পর রাতে ঘুমালে সকালে ওঠে দেখে গোয়াল খালি! গরু চুরি ঠেকাতে এলাকাবাসী পাড়া মহল্লায় নিজেরা পালাক্রমে পাহারার ব্যবস্থা করেন, আর তাতেই চক্রটির ৩ সদস্য ধরা পড়ে বিক্ষুব্ধ জনতার হাতে নিহত হন।

নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাজেদুল ইসলাম সময় সংবাদকে বলেন, ‘গরু চুরি করতে এসে স্থানীয় জনতার গণপিটুনিতে ৩ চোর নিহত হন। এ ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহত জান্নাতুলের নামে পাঁচটি,  নূরনবীর নামে নয়টি এবং দুলালের নামে পাঁচটি করে মামলা পুলিশ রেকর্ডে রয়েছে। দেশের বিভিন্ন থানায় চুরি, ডাকাতি, অস্ত্র ও মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধের মামলা রয়েছে। তারা মূলত আন্তঃজেলা চোর চক্রের সদস্য ছিল। তাদের সঙ্গে জড়িত চক্র ধরার পাশাপাশি এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে।’

একুশে সংবাদ/বিএইচ