মুন্সীগঞ্জ জেলার লৌহজং উপজেলায় টিসিবির এক ডিলারের বিরুদ্ধে ওজনে চাল কম দেওয়ার দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে রোববার দুপুরে লৌহজং উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন লৌহজং-তেউটিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ও পাঁচ জন উপকারভোগী।
যে ডিলারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে তিনি হলেন- লিমা এন্টারপ্রাইজের মালিক শাহাদাত হোসেন। তিনি লৌহজং উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের উপকারভোগীদের মাঝে টিসিবির পণ্য বিতরণ করে থাকেন। লৌহজং-তেউটিয়া ইউনিয়নের ২৮৪ জন দরিদ্র উপকারভোগী তার কাছ থেকে ন্যায্যমূল্যে টিসিবির পণ্য ক্রয় করে থাকেন।
জানা গেছে, লৌহজং-তেউটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের অধীনে ২৮৪ জন উপকারভোগী টিসিবির পণ্য ক্রয় করে থাকেন। গত বুধবার বিতরণ করা ২ লিটার সয়াবিন তেল, ২ কেজি মসুর ডাল পরিমাপে ঠিক থাকলেও ৫ কেজি চাল ওজনে কম দেওয়া হয়। কয়েকজন উপকারভোগীর চালের পরিমাণ নিয়ে সন্দেহ হলে বিভিন্ন মুদি দোকানে গিয়ে পরিমাপ করে প্রতি ৫ কেজির প্যাকেটে কেউ ৪ কেজি ৪০০ গ্রাম আবার কেউ ৪ কেজি ৫০০ গ্রাম এবং ৪ কেজি ৬০০ গ্রাম চাল পান। এ নিয়ে উপকারভোগীরা স্থানীয় অনেকের কাছে অভিযোগ করেন। পরে খবর পেয়ে লৌহজং উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. কায়েসুর রহমান সরেজমিন এসে চাল কম দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হন। টিসিবি পণ্য গ্রহণকারী হুমায়ুন মাহমুদ বলেন, `আমি নিয়মিত টিসিবি পণ্য গ্রহণ করলেও পরিমাণ যাচাই করি না। তবে এবার আমার সন্দেহ হলে পরিমাপ করে দেখি, ৬০০ গ্রাম চাল কম। আমি মনে করি, প্রতিবারই তারা আমাদের ঠকিয়ে এসেছে।`
বৃষ্টি আক্তার নামে আরেক উপকারভোগীর অভিযোগ, তাঁকেও ৫০০ গ্রাম চাল কম দিয়েছে। এ ছাড়া রাকিব সরদার ৫ কেজি চালে ৩০০ গ্রাম, রাজ্জাক হোসেন বাবু ৫০০ গ্রাম এবং শহীদ শেখ ৩৫০ গ্রাম চাল কম পেয়েছেন।
লৌহজং-তেউটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) প্যানেল চেয়ারম্যান হুমায়ুন হাওলাদার বলেন, `উপকারভোগীদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে টিসিবি ডিলার লিমা এন্টারপ্রাইজের মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি।`
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. কায়েছুর রহমান বলেন, উপকারভোগীদের অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ৫ কেজি চালের প্যাকেটে ৩০০ থেকে ৬০০ গ্রাম পর্যন্ত কম পাওয়া গেছে।
ওজনে কম দেওয়ার বিষয়ে টিসিবি ডিলার লিমা এন্টারপ্রাইজের মালিক শাহাদাত হোসেন বলেন, `আমরা টিসিবি থেকে ওজনে চাল কম পাই। সেটা সমন্বয় করার জন্য উপকারভোগীদের সামান্য কিছু চাল কম দেওয়া হয়।` তবে ৩০০ থেকে ৬০০ গ্রাম পর্যন্ত কম চাল দেওয়ার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।
লৌহজং উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. জাকির হোসেন বলেন, ` এই বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে ডিলারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।` ##
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :