সিলেট নগরীর আশ পাশ অলি গলিতে প্রতিনিয়ত বাড়ছে ব্যাচারি চালিত ইজিবাইকের দৌরাত্ম্যে। কোন ভাবেই নিয়ন্ত্রন করা যাচ্ছে না। নগরীতে ইজিবাইক চলাচল নিষিদ্ধ হলেও শহরতলীতে এবং শহরের কিছু অলিগলিতে বেড়েছে ইজিবাইকের সংখ্যা। শহরের কানিশাইল এবং সুবিদবাজার কলাপাড়া,চৌখিদেখী, কদমতলী সহ কিছু এলাকায় ভেতরের রাস্তা দিয়ে ইজিবাইক চলছে অনেক দিন থেকে।
তবে শহরতলীর কিছু এলাকায় রীতি মতো স্ট্যান্ড বানিয়ে নিয়েছেন চালকরা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ইজিবাইক চলে টিলাগড় থেকে সিলেট-তামাবিল ও দক্ষিণ সুমরার কদমতলী সড়কে। তবে অনেকে বলছেন ঝুঁকিপূর্ণ হলেও ভাড়া কম হওয়ায় বিভিন্ন প্রামীণ রাস্তায় তারা ইজিবাইকে চলাচল করেন। তারা বলেন সিএনজি অটোরিকশার মাত্রাতিরিক্ত ভাড়া ও অনিয়ন্ত্রিত চলাচলে তারা বাধ্য হয়ে ইজিবাইক চলেন। তাছাড়া ইজিবাইকে যতটুকু যাওয়া ততটুকু ভাড়া দিলে হয় কিন্তু সিএনজিতে শেষ স্টপিজ পর্যন্ত ভাড়া দিতে হয়। তাই যতই বলা হোক ইজিবাইক নিষিদ্ধ কিন্তু সিএনজি অটোরিকশার লাগাম না টানলে ইজিবাইক বন্ধ সম্ভব নয়।
টিলাগড় থেকে বটেশ্বর পর্যন্ত সড়কে এসব যানবাহনের অবাধ চলাচল বাড়াচ্ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি। সরকারি নির্দেশ অমান্য করে এসব ইজিবাইকের চালকরা প্রতিদিন যাত্রী পরিবহন করছে যা সড়কে চলাচলকারী অন্যান্য যানবাহনের জন্যও বিপজ্জনক পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। কোনো ধরনের নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে অবৈধ ভাবে পরিচালিত এই বাহন গুলো নিয়মিতই দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে। এতে সড়কের সার্বিক শৃঙ্খলা যেমন নষ্ট হচ্ছে, তেমনই ক্ষতি হচ্ছে জান মালের।
এ বিষয়ে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ কমিশনার (ট্রাফিক) বিএম আশরাফ উল্যাহ তাহের বলেন, ইজিবাইকের বিরুদ্ধে আমরা বিভিন্ন সময়ে অভিযান চালাচ্ছি। নগরের প্রধান প্রধান সড়কে ইজিবাইক চলাচল করতে দেওয়া হচ্ছে না। এরপরও চলাচল করলে আমরা চালকদের বিরুদ্ধে মামলা দিচ্ছি, জরিমানা করছি।
সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের মেজরটিলা, শাহপরান ও বটেশ^রে বেআইনি ভাবে ইজিবাইকের জন্য স্ট্যান্ড গড়ে উঠেছে। এসব অবৈধ স্ট্যান্ড থেকে অসংখ্য ইজিবাইক যাত্রী পরিবহন করছে। সংশ্লিষ্ট এলাকার সাধারণ মানুষের অভিযোগ, এই অবৈধ স্ট্যান্ড গুলো সড়কের নিরাপত্তা এবং পরিবেশকে হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে। ইজিবাইক গুলো যত্রতত্র থেমে যাত্রী ওঠানামার কাজ করে যা সড়কে যানজট সৃষ্টির একটি প্রধান কারণ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইজিবাইক বিশেষ করে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক গুলোর কোনো অনুমোদন নেই। এর চালকদেরও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকে না। যার ফলে চালকদের বেশির ভাগই ট্রাফিক আইন সম্পর্কে অবহিত নয়। ট্রাফিক নিয়মের তোয়াক্কা না করেই তারা রাস্তায় বেপরোয়া ভাবে ইজিবাইক চালাচ্ছে। ফলে এসব ইজিবাইকের সঙ্গে দ্রুতগামী অন্যান্য যানবাহনের সংঘর্ষের ঝুঁকি সব সময় লেগেই থাকছে। হরহামেশাই ঘটছে ছোটো-বড়ো দুর্ঘটনা। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ইজিবাইক দুর্ঘটনা পেছনের কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে অপ্রশিক্ষিত চালকদের অদক্ষতা। সঠিক প্রশিক্ষণ ছাড়া এভাবে ইজিবাইক চলাচল বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে এই সড়কে চলাচলকারীদের জন্য।
এদিকে ইজিবাইকের চলাচল নিষিদ্ধ হওয়ার পরও প্রশাসনের নিষিক্রয়তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। স্থানীয় বাসিন্দা হাবিবুর রহমান বলেন, ইজিবাইক স্ট্যান্ডগুলো এলাকাভিত্তিক মাসিক চাঁদার বিনিময়ে পরিচালিত হয়। মাঝেমধ্যে প্রশাসনের তরফ থেকে কিছু অভিযান পরিচালিত হলেও সেগুলো স্থায়ী কোনো সমাধান আনতে পারছে না।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :