নিজেকে অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য পরিচয় দিয়ে ভুয়া রিক্রুটিং এজেন্সি খুলে বিদেশে পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে বহু মানুষকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলেছেন রিয়াদ খান (৪৮)। তিনি মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলার রাঢ়ীখাল ইউনিয়নের মনি মন্ডল গ্রামের গোলাম নবী হোসেন খানের ছেলে। সম্প্রতি সাংবাদিকদের অনুসন্ধানে ধরা পড়েন এ প্রতারক।
তথ্য পাওয়া যায় যে, রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে রিয়াদ খান নিজেকে অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য পরিচয় দিয়ে নিশ্চিত ভিসা প্রসেসিং ও সরকারিভাবে ঋণ পাওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে মানুষের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন। মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে সাংবাদিকরা দেখতে পান, গোয়ালন্দ পৌরসভার ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পাশে একটি কক্ষে ভাড়া নিয়ে তিনি `এরাবিয়ান ইন্টারন্যাশনাল মিডিয়া এন্ড জব প্রসেসিং` নামে ভুয়া রিক্রুটিং এজেন্সি চালাচ্ছেন। মহাসড়কের পাশেই বড় করে সাইনবোর্ডে লেখা আছে, "বিদেশগামী যাত্রীদের ভিসা ও ঋণ প্রসেসিং"। এতে দাবি করা হয়েছে যে প্রতিষ্ঠানটি "অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য দ্বারা পরিচালিত"।
ভেতরে বিদেশে যাওয়ার বিষয়ে কয়েকজন যুবকের সঙ্গে আলোচনা করছিলেন রিয়াদ খান। সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপের সময় নিজেকে প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার এবং পরে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্য বলে দাবি করেন। বৈধ কাগজপত্রের ব্যাপারে প্রশ্ন করলে তিনি দাবি করেন সব কাগজপত্র তার কাছে আছে, তবে তা দেখাতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এক পর্যায়ে তার প্রকৃত পরিচয় জানতে চাইলে তিনি নিজেকে প্রতারক হিসেবে স্বীকার করেন। তিন মাস আগে এই ভুয়া রিক্রুটিং এজেন্সি খুলে বসেন বলে তিনি জানান।
পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে খবর দিলে যৌথ বাহিনী এসে তাকে আটক করে।
ভুক্তভোগীদের একজন জানান, রিয়াদ খান তাকে দুবাই পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে ১৫ হাজার টাকা নিয়েছিলেন।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে গোয়ালন্দঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রিয়াদ খান তার প্রতারণার কথা স্বীকার করেছেন। তার বৈধ কোনো অনুমোদন নেই, অথচ দেড় শতাধিক বিদেশগামী মানুষকে প্রতারণার মাধ্যমে প্রায় ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এ বিষয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় তার নামে একটি প্রতারনার মামলা দায়ের করে দুপুরে রাজবাড়ীর আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :