বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, ‘কোনও ব্যবসায়ী বা পেশিশক্তির কাছে দায়বদ্ধ নয় এই সরকার। আমাদের সরকারের দায়বদ্ধতা আছে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে এক হাজারের বেশি শহীদ ও ৩০ হাজারের বেশি আহত ছাত্র-জনতার প্রতি। এই দায়বদ্ধতা থেকেই দেশের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি আমরা।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘কর্ণফুলী টানেল আমাদের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আজ এটির পাশ দিয়ে আসার সময় দেখলাম কোনও গাড়ি নেই। মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্রবন্দর করে তার সঙ্গে সংযোগ সড়ক হয়ে একটা ইকোনমিক জোন তৈরি করে অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু এখন দেখেন সেখানে একটা বিদ্যুৎ প্রকল্প হয়েছে, এখানে একটা টানেল করা হয়েছে। যা অপরিকল্পিত পরিকল্পনার একটা অংশ। ফলে এখন টানেলের লোকসান বয়ে বেড়াচ্ছে দেশ। মূলত দেশেরই লোকসান হচ্ছে।’
শুক্রবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরের সার্কিট হাউস সম্মেলনকক্ষে জেলা প্রশাসন আয়োজিত বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘বাপেক্সের একেকটি গাড়ির দাম ৫ কোটি টাকা। কিন্তু বিদ্যুৎ খাতের অবস্থা খুবই ভয়াবহ। আবার জ্বালানি খাতে সরকারকে ২৫ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হয়। প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা দিয়ে পদ্মা রেল সংযোগ করা হয়েছে; যার বার্ষিক রাজস্ব আয়ের কথা ছিল ১৪০০ কোটি টাকা। কিন্তু ছয় মাস পরে গিয়ে জানতে পারলাম মাত্র ৩৭ কোটি টাকা রাজস্ব এসেছে। এগুলো উন্নয়নের নামে অপচয়। আমি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বসেছি যাতে অপরিকল্পিত উন্নয়নের নামে দেশের টাকা অপচয় না হয়। কারণ অপচয় করার মতো অবস্থা এখন আমাদের নেই।’
এর আগে উপদেষ্টা ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিডেটের প্ল্যান্ট পরিদর্শনে যান। পরিদর্শন শেষে ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড, পদ্মা অয়েল কোম্পানি, মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড, যমুনা অয়েল কোম্পানি ও স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘ইস্টার্ন রিফাইনারি তেল শোধনাগার ১৯৬৮ সালে নির্মিত হয়। বর্তমানে নাজুক পরিস্থিতিতে আছে। যেকোনো সময়ে এটি ভেঙে যেতে পারে। দ্বিতীয় আরেকটা রিফাইনারি তেল শোধনাগার তৈরির প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এর কাজ দ্রুত শুরু করতে হবে।’
জেলা প্রশাসক ফরিদা খানমের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবীর, পুলিশ সুপার রায়হান উদ্দিন খান ও ডিআইজি মো. আহসান হাবীব পলাশ প্রমুখ। এ ছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা উপস্থিত ছিলেন।
একুশে সংবাদ/এনএস
আপনার মতামত লিখুন :