মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলায় ন্যাশনাল টি কোম্পানীর ৮টি চা বাগানে ৬ সপ্তাহের বকিয়া মজুরীর দাবীতে ২৯ দিন থেকে কাজে যোগ না দিয়ে সকল কার্যক্রম থেকে বিরত রয়েছে চা শ্রমিকরা ।
এদিকে কাজ ও মজুরী বন্ধ থাকায় চা শ্রমিকরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তাদের মানবেতর জীবন যাপনের কারনে জেলা প্রশাসকের বিশেষ বরাদ্দ জিআর ৬৬.৩২ মেট্রিক টন চাল বরাদ্ধ ও বন্টন করার উদ্যোগ নেয় জেলা প্রশাসন কার্যালয়। ৩ টি ফাড়ি বাগানসহ ন্যাশনাল টি কোম্পানির ৮ টি চা বাগানের ৬ হাজার ৬ শত ৩২ জন চা শ্রমিকদের মধ্যে ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়।
রোববার (১৭ নভেম্বর) সকাল ১১টায় উপজেলার মাধবপুর, মদনমোহন পুর ও পাত্রখোলা চা বাগানে উপস্থিত থেকে চাল বিতরনের কার্যক্রম উদ্বোধন করেন কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা প্রবন পাল, মাধবপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান পুষ্প কুমার কানু, পাত্রখোলা চা বাগানের ব্যবস্থাপক স্বপন কুমার সিংহ, মদন মোহনপুর চা বাগানের ব্যবস্থাপক হুমায়ুন আহমদ, মাধবপুর চা বগানের ব্যবস্থাপক জাহাঙ্গির আলম, মাধবপুর ইউপি সদস্য মোতাহের আলী, শিব নারায়ন শীল, মকবুল আলী, নারায়ন রাজভর, বীনা রানী ও ভ্যালি সভাপতি ধনা বাউরী প্রমূখ।
উল্লেখ্য গত অক্টোবর মাসে ন্যাশনালটি কোম্পানীর ফাড়িসহ ১৬ টি চা বাগানের শ্রমিকরা ৬ সপ্তাহের বকিয়া মজুরী ও ১৭ মাসের এরিয়া বিল পরিশোধের জন্য আন্দোলন নামে, আন্দোলন থেকে দ্রæত সময়ের মধ্যে বকেয়া মজুরী পরিশোধ না করলে কাজ বন্ধ করার হুশিয়ারি দেয়। কিন্তু তাতেও কোন সাড়া না পেয়ে গত অক্টোবর মাসের ২১ তারিখ থেকে চা বাগানের সকল কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়।
এদিকে ভরা মৌসুমে এসে চা শ্রমিকরা চা পাতা চয়ন না করায় চা উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। এতে করে ন্যাশনাল টি কোম্পানির ফাঁড়ি সহ ১৬ টি চা বাগান মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। ভরা মৌসুমে চা বাগান গুলি বন্ধের কারণে কোটি কোটি টাকা লোকসান মুখে পরবে ন্যশনাল টি কোম্পানি’কে। এটা এখন কোম্পানির জন্য মরার উপর খরার গাঁ এর মত হয়ে দাড়িয়েছে। সরকার যদি দ্রæত কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করে, তাহলে চা শিল্প ধ্বংসের দিকে ধাবিত হতে পারে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চা বাগানের কর্তৃপক্ষের অনেকেই জানিয়েছেন। বাগান বন্ধ থাকার পরও শ্রমিকদের সপ্তাহিক রেশন দিচ্ছে কোম্পানি।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন বলেন, কাজ বন্ধ থাকায় শ্রমিকরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তাদের মানবেতর জীবন যাপনের কারনে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের উদ্যোগে বিশেষ বরাদ্ধ জিআর ৬৬.৩২ মেট্রিক টন চাল বরাদ্ধ ও বন্টন করার ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :