খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় জীব বৈচিত্র ও পরিবেশ হুমকির মুখে পতিত করে পাহাড়ের মাঝ দিয়ে বয়ে চলা ছড়া থেকে প্রতিনিয়ত বেপরোয়া ভাবে চলছে অবৈধ বালু উত্তোলন। প্রতিদিন মেশিন বসিয়ে পাহাড়ি ছড়া থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনের ফলে প্রতিনিয়ত হচ্ছে কোথাও কোথাও পাহাড় ধস। অবৈধভাবে নিয়মিত বালু তোলার কারনে ছড়ার পাশ দিয়ে পাহাড়ের আবাদি কৃষি জমিও হারাচ্ছে স্হানীয়রা।
নির্বিচারে বালু উত্তোলনের কারনে বর্ষা মৌসুমে পাহাড় ভেঙ্গে ছড়ার বিভিন্ন স্থানে মাটি ভরাট হয়ে চাষাবাদকৃত ফসলি জমিও পানিতে প্লাবিত হয়ে নষ্ট হচ্ছে ফসল। তাছাড়া গ্রামীণ সড়কগুলোও অকালে ভেঙে যাচ্ছে ধারণ ক্ষমতারও বেশি ওজনের বালু ভর্তি ট্রাক ও ট্রাক্টর চলাচল করার কারনে। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বৈধ বালুমহাল ইজারাদার।
এভাবে দিনের পর দিন বালু খেকো সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম বেড়েই চলছে। প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় বালু উত্তোলনে রয়েছে বিশাল সিন্ডিকেট। এবং বালুমহালের নিয়ন্ত্রণ করছে কতিপয় কিছু স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা।
খাল ও ছড়া থেকে সরকারি বেসরকারি কাজের বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে বেপরোয়া ভাবে করে যাচ্ছে বালু উত্তোলন। সরকারী ভাবে মাটিরাঙ্গা উপজেলায় মা-এন্টারপ্রাইজ নামে একটি বৈধ ইজারাদার নিয়োগ করা হলেও উপজেলার পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া খাল-বিল থেকে বিভিন্ন স্থানে বর্তমানে অর্ধশতাধিক স্থানে দিনে-রাতে অবৈধ ভাবে চলছে বালু উত্তোলন। প্রভাবশালী মহলের আগ্রাসন ও বালুখেকোদের নিষ্ঠুরতার বলি হচ্ছে এ উপজেলার খাল-ছড়াগুলো।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বৈধ বালুমহাল থেকেও ড্রেজার (গভীর থেকে বালু উত্তোলনের বিশেষ বৈদ্যুতিক যন্ত্র) দিয়ে বালু তোলার আইনি কোন সুযোগ নেই।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়ন এলাকায় অবৈধ ভাবে বালু তুলে স্তুপ করে রাখা হয়েছে। বালু খেকোদের মাত্রাতিরিক্ত উত্তোলনের কারনে খাল ও ছড়ার পাশে মানুষের বসতবাড়ি-জমি ভাঙনের শিকার হচ্ছে প্রতিনিয়িত। জনসাধারণের চলাচলের একমাত্র গ্রামীণ সড়কটি নির্মাণ ও সংস্কারের অল্প দিনের মাথাতেই চলাচল অযোগ্য হয়ে পড়ে বালুবাহী ভারী যানবাহনের চাপে।
বেলছড়ি ইউনিয়নের খেদাছড়ার উপেন্দ্র হেডম্যান পাড়া, ওয়াজেদ মেম্বার পাড়া, আমবাগান, বেলছড়ি, গুমতি এলাকায় দেখা গেছে আরো ভয়াবহ চিত্র। মেশিন দিয়ে বালু তুলছে কিন্তু নেপথ্য কে বা কারা এসব বালু তুলছেন সেসব ব্যক্তির নাম বলতে রাজি হয়নি শ্রমিকরা।
মাটিরাঙ্গা সহকারী কমিশনার ( ভুমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আল আমিন হালদার আমার বাঙলাকে বলেন, যারা অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনের সাথেজড়িত, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে মোবাইলকোট পরিচালনার মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনআনুগ ব্যবস্হা গ্রহন করা হবে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :