মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকটে চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে বলে জানা গেছে। আবার চিকিৎসক থাকলেও কাঙ্ক্ষিত সেবা না পাওয়ার অভিযোগ রয়েছে রোগীদের। শুধু চিকিৎসকই নয় বিভিন্ন সেক্টরে জনবল সংকট থাকায় চিকিৎসা সেবাসহ অন্যান্য কাজে হিমশিম খেতে হচ্ছে উপজেলার ৫০ শয্যার এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, প্রায় এক বছর ধরে এ হাসপাতালে সিজারিয়ান কার্যক্রম চালু হলেও নেই অ্যানেস্থেসিয়া বিশেষজ্ঞ। সিঙ্গাইর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ডাক্তার এনে সপ্তাহে একদিন সিজার করানো হয় বলেও জানা যায়। সূত্র আরও জানায়, মূলত হাসপাতালটি প্রথমে ৩১ শয্যা বিশিষ্ট করা হয়। পরে ৫০ শয্যায় রূপান্তরিত করা হলেও জনবল রয়েছে ৩১ শয্যার ক্যাটাগরিতেই।
সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত জরুরি বিভাগ ও বর্হিঃবিভাগে প্রায় সহস্রাধিক রোগী চিকিৎসা সেবা নিতে আসে। কিন্তু চিকিৎসক সংকটের কারণে রোগীদের ঘণ্টার পর অপেক্ষা করতে হয়। ফলে রোগীদের চিকিৎসা সেবায় অনেকটা ভোগান্তি পোহাতে হয় বলে রোগীরা অভিযোগ করেন।
হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা উপজেলার চালা ইউনিয়নের লাউতা গ্রামের সুমন জানান, অনেকক্ষণ যাবৎ লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। এখনও ডাক্তার দেখাতে পারিনি। একজন মাত্র ডাক্তার রোগী দেখছে। এখানে আরও একজন ডাক্তার প্রয়োজন ছিল।
বর্হিঃবিভাগে বেঞ্চে বসে আছেন দানেস্তপুর গ্রামের আছিয়া বেগম। তিনি গাইনী ডাক্তার দেখাবেন। তিনি জানান, এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে বসে আছি। এখনও ডাক্তার দেখাতে পারিনি। একজনমাত্র গাইনি ডাক্তার। রোগীর চাপ অনেক। ডাক্তার কম হওয়ায় আমাদের অনেক সমস্যা হচ্ছে। সময় অসময়ে ডাক্তার পাওয়া যায় না বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ কাজী এ. কে. এম রাসেল জানান, আমাদের হাসপাতালে মোট ডাক্তারের পদ আছে ২১ টি। তার মধ্যে ৩ টি পদ শূন্য, আর ৬ টি পদে নামে চিকিৎসক আছে কিন্তু কাজে নেই। সেই ৬ জনের মাঝে ২ জন অনুপস্থিত কতৃপক্ষকে না জানিয়ে পলাতক। আর ২ জন আছে বিভাগীয় মামলাধীন আর ২ জন আছে সংযুক্তিতে। তাহলে হাসপাতালে ২১ জন ডাক্তারের মাঝে ৯ জন ডাক্তার নেই। আমাকে দিয়ে বর্তমানে ১২ জন ডাক্তার রয়েছে। যার ফলে চিকিৎসা সেবাসহ হাসপাতাল অন্যান্য কাজ চালানো খুব কঠিন হয়ে পড়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের এখানে সপ্তাহে একদিন সিজার করা হয়। এখানে অ্যানেস্থেসিয়া বিশেষজ্ঞ না থাকায় সিঙ্গাইর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ডাক্তার এনে সপ্তাহে একদিন সিজার করানো হয়। মূলত চিকিৎসক সংকট নিরসন না হলে এ সমস্যা থেকে বের হওয়া যাবেনা।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :