নরসিংদী রায়পুরায় পারিবারিক কলহের জেরে আল আমিন (২৫) এক যুবক গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। আজ বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে ঘরের জানালার গ্রিল কেটে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে থানা পুলিশ। নিহতের পরিবারের দাবি নিহত আল আমিনের শ্বশুর বাড়ির লোকজন তাকে প্ররোচনা দিয়ে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করে।
আল আমিন উপজেলার শ্রীনগর ইউনিয়নের গোপিনাথপুর গ্রামের মন্টু মিয়ার ছেলে। প্রায় বছর খানেক পূর্বে প্রেম করে বিয়ে করে সে এবং স্ত্রীকে নিয়ে রায়পুরা পৌর এলাকার রামনগর হাটি একটি সাততলা ভবনের পাঁচতলায় ভাড়া বাসায় থাকতো।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, দুপুর ১২ টার দিকে আত্মহত্যার বিষয়টি জানতে পারে রায়পুরা থানা পুলিশ। পরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে গলায় ওড়না পেচিয় সিলিং ফ্যানের নিথর মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায় পুলিশ এসময় রুমের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ দেখতে পায়। পরে সজোড়ে ধাক্কাধাক্কি করেও দরজা না খুলতে পেরে ওয়েল্ডিং মেশিন দিয়ে জানালার গ্রীল কেটে ভিতরে প্রবেশ করে মরদেহ উদ্ধার করে থানা পুলিশ। পরে ময়নাতদন্তের মরদেহ নরসিংদী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। স্বামী-স্ত্রীর পারিবারিক কলহে জেরে আত্মহত্যা করেছে বলে নিহতর স্ত্রী রিয়া জানায়।
নিহতের মা সালেহা বেগম জানায়, সকাল ৯ টার দিকে মোবাইলে ছেলের সাথে কথা বলেন তিনি। এসময় ধান কাটার জন্য তার বাবা বউকে সাথে নিয়ে বাড়ী আসতে বলেছেন বলে ছেলেকে জানান। বিকেল বাড়ী আসবেন বলে ফোন রেখে দেয় ছেলে। এর ঘন্টা তিনেক পরেই ছেলের মৃত্যূর খবর শুনতে পাই। তবে আমি বলবো আমার ছেলে আত্মহত্যা করেনি, তাকে মারা হয়েছে।
নিহত আল আমিনের বাবা মন্টু মিয়া বলেন, প্রায় একবছর হয়েছে আমার ছেলে নরসিংদীর টাউয়াদী এলাকার মিজান মেয়ে রিয়া মনিকে ভালবেসে বিয়ে করে। কিন্তু সবাই তাদের এ বিয়ে মেনে নিলেও তার ইউনিয়ন পরিষদে গ্রাম পুলিশ হিসেবে কর্মরত রত্না বেগম মেনে নিতে পারেনি। তিনি বিভিন্ন সময় আমার ছেলেকে মেরে ফেলার জন্য অপকৌশল করেছেন। আজও আত্মহত্যা করেনি। বরং মানসিকভাবে চাপ প্রয়োগে একটু একটু করে তাকে আত্মহত্যা করার দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। শেষে তাদের যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে গলায় দড়ি দিতে বাধ্য হয় এবং আত্মহত্যা করে।
রায়পুরা থানার পরিদর্শক তদন্ত পবির কুমার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, দুপুর ১২ টার দিকে আমরা খবর পায়। পরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বেলা বারোটার দিকে জানালার গ্রিল কেটে মরদহ উদ্ধার করা হয়। ইতিমধ্যে ময়নাতদন্তের জন্য মরদহ নরসিংদী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। তবে অনুমান করছি সে নিজেই গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে। তদন্ত রিপোর্ট পেলেই বিষয়টি পরিষ্কার হবে। এ ব্যাপারে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :