হাজারো মাইলের দূরত্ব ঘুচিয়ে ইন্টারনেটের বদৌলতে প্রেম-পরিণয় ঘটছে অহরহই। প্রায়ই শোনা যাচ্ছে, ভিন দেশি তরুণ, ভিন দেশি তরুণী প্রেমের টানে ছুটে আসছে বাংলাদেশে। এমনই এক ঘটনা এবার সাভারে। উনিশ বছরের উচ্চ মাধ্যমিক পড়ুযা তরুণীর প্রেমে মজে বাংলাদেশে চলে এসেছে দক্ষিণ কোরীয় এক তরুণ। এ মাসের শুরুর দিকে বিয়ের পর শুক্রবার (২৩ নভেম্বর) হলো তাদের বিবাহ পরবর্তী সংবর্ধনা অনুষ্ঠান।
প্রায় চার মাস আগে দক্ষিণ কোরীয়ার রাজধানী সোলের তরুণ জে মিঙ্গির সঙ্গে অনলাইনে পরিচয় হয় সাভারের আড়াপাড়া সবুজবাগ এলাকার মো. রেজাউল করিমের মেয়ে রেজভি আক্তার সুমাইয়ার। সেই পরিচয় থেকে দুজনের মধ্যে হয় প্রেম। এই প্রেমের টানে গত ১ নভেম্বর সাভারে চলে আসেন জে মিঙ্গি, ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে তিনি হয়ে যান আরফান ইসলাম। পরদিন ২ নভেম্বর ইসলাম ধর্মীয় রীতিতে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তারা।
শুক্রবার বিকেলে সাভারের একটি কমিউনিটি সেন্টারে এ যুগলের বিবাহ পরবর্তী সংবর্ধনা অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। এ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে উচ্ছ্বাস জানান আগতরা। যুগলের জন্য জানান শুভকামনা। নুসরাত নামে কনের এক বান্ধবী বলেন, অনেক ভালো লাগছে। আমাদের ভাই অনেক মিশুক। সবার সঙ্গে ভালো ভাবে মিশে।
কনের ফুপাতো বোন বলেন, বাইরে থেকে এসে আপুকে বিয়ে করলো। উনাদের জন্য দোয়া থাকবে। আর কোরিয়ানরা আমার পছন্দের। তাকেও আমার ভালো লেগেছে। ভিন দেশি তরুণের সঙ্গে কন্যার বিয়েতে আনন্দিত বাবা-মাসহ পরিবারের সদস্যরাও।
বাবা মো. রেজাউল করিম বলেন, আমার মেয়ে আমাকে বললো একটা ছেলে তাকে বিয়ে করতে চাচ্ছে। পুরো বিষয়টি খুলে বলে। আমি তাকে বললাম সে তো বিধর্মী। তখন বললো, সে মুসলিম হবে। আর তাকে কোরিয়া নিয়ে যাবে। তারপর ফোনেও কথা বলিয়ে দেয়। আমি ছেলের সঙ্গে কথা বলি। সে মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করবে আর বাংলাদেশে আসবে জানায়। গত ১ নভেম্বর সে বাংলাদেশে আসে। ২ নভেম্বর মুসলিম রীতি অনুযায়ী বিয়ে দেই। আজ অনুষ্ঠান হলো।
বন্ধুত্ব থেকে প্রেম, এরপর সফল পরিণয়ে খুশি আরফান-সুমাইয়া যুগল। ভাঙা বাংলায় স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসা জানালেন কোরীয় তরুণ।
কনে রেজভি আক্তার সুমাইয়া বলেন, একটা আ্যাপসের মাধ্যমে আমাদের প্রথম পরিচয় হয়। সেখান থেকেই বন্ধুত্ব, তারপর সম্পর্কে যাওয়া। আজকের অনুভূতি বলতে গেলে এই দিনটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ দিন। আমি মন থেকে অনেক খুশি। অনেক ভালো লাগছে। ও আসার পর দিনই ২ নভেম্বর বিয়ে করি আমরা। অনুষ্ঠান করতে কিছুটা দেরি হয়েছে। সে আগে কোনো ধর্ম পালন করতো না। প্রথম ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে। বিয়ে করে মুসলিম হয়।
হাজারো মাইলের দূরত্ব ঘুচিয়ে যে কাছে আসা, চার হাত এক হওয়া তা আজীবন অটুট থাকুক, এমনটিই প্রত্যাশা বিবাহ পরবর্তী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া সবার।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :