রাজশাহীতে আবাসিক হোটেলে গিয়ে চাঁদা দাবি এবং তা না পেয়ে ডাকাতির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নগর ছাত্রদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মর্তুজা ফামিন। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় হোটেল গ্র্যান্ড নামের ওই আবাসিক হোটেলের রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন তিনি।
এর আগে গত মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে পাঁচ-ছয়জন তরুণ আবাসিক হোটেলটিতে গিয়ে চাঁদা দাবি করেন। তা না পেয়ে হোটেলের চার কর্মীকে দোতলার রেস্তোরাঁয় আটকে রেখে নিচতলায় লুটপাট চালানো হয়। ইন্টারনেট ও সিসি ক্যামেরার ক্যাবল ছিঁড়ে ফেলে এ ঘটনা ঘটানো হয়।
এ ঘটনায় মামলা না করলেও হোটেল কর্তৃপক্ষ দাবি করে, চাঁদা না পেয়ে ডাকাতি করা হয়েছে। যদিও হোটেলে টাকা-পয়সা ছিল না। দুজন ছাত্রদল নেতার নেতৃত্বে ঘটনা ঘটে বলেও দাবি করে হোটেল কর্তৃপক্ষ। নগরের গণকপাড়ায় অবস্থিত এই হোটেলটির মালিক আত্মগোপনে থাকা আওয়ামী লীগ নেতা আবুল বাসার সুজন। তার ভাতিজা এখন হোটেলটি দেখাশোনা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে নগর ছাত্রদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মর্তুজা ফামিন বলেন, গত ১৭ এই ডিসেম্বর মঙ্গলবার রাত আনুমানিক রাত ১০ টা হতে ১১ টার দিকে রাজশাহী মহানগরীর গণক পাড়ায় অবস্থিত এ `হোটেল গ্রান্ড` নামক একটি আবাসিক হোটেলে কথিত চাঁদাবাজি বা ডাকাতির ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছাত্রদল এবং ছাত্রদলের সাবেক ও বর্তমান নেতৃবৃন্দের নাম জড়িয়ে মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন অপপ্রচার চালানো হয়েছে। ইতিমধ্যে হোটেল গ্যান্ডে কথিত চাঁদাবাজি অথবা ডাকাতির ঘটনার বর্ণনা দিয়ে রাজশাহী মহানগর ছাত্রদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি, রাজশাহী কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মুর্তুজা ফামিন, রাজশাহী সরকারি সিটি কলেজ ছাত্রদলের অন্যতম যুগ্ম আহবায়ক শেখ আসিফ নাফির সম্পৃক্ততায় বা নেতৃত্বে বা উপস্থিতিতে কথিত ঘটনাটি ঘটেছে বলে বিভিন্ন অফলাইন ও অনলাইন সংবাদ মাধ্যম সহ কিছু `ব্যক্তির ফেসবুকে পোষ্টের মাধ্যমে অপপ্রচার চালানো হয়েছে।
হোটেল গ্রান্ড এর কথিত ঘটনায় বহুল প্রচলিত স্বনামধন্য পত্রিকা দৈনিক যুগান্তর, আজকের পত্রিকা, অনলাইন ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম খবর ২৪ ঘন্টাসহ বিভিন্ন মাধ্যমে আমাদের নামে মিথ্যা তথ্য সংবলিত সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছে যা আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে।
‘ওই চাঁদাবাজি বা ডাকাতি বা হয়রানির কথিত ঘটনার সাথে আমরা ছাত্রদল নেতৃবৃন্দ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সম্পৃক্ত নই। এ ঘটনায় ছাত্রদলের নাম জড়ানো অনভিপ্রেত ও উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত।’
ঘটনার সময় তারা অন্য কাজে ব্যস্ত ছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ঘটনার সময় যদি আমাদের উপস্থিতি প্রমাণ হয়, তাহলে আজীবন রাজনীতি থেকে বিরত থাকব। আমরা এমন অপপ্রচার ও মিথ্যা তথ্য সংবলিত সংবাদ প্রচার ও প্রকাশের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
যারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের শাস্তি দাবি করে ছাত্রদলের এই নেতা বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আমরা ওই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণেরও দাবি সত্যিকার অর্থে এমন ঘটনা ঘটে থাকলে এবং এমন অপরাধে জড়িত প্রকৃত অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। আমরা বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদী আদর্শে বিশ্বাসী গুটিকয়েক সাধারণ মানুষ কখনোই ক্ষমতার দাস্তিকতা বা সুযোগের বা সুসময়ের অপব্যবহার করে কোন প্রকার অপকর্ম সমর্থন করি না। সময়ের পালা বদলে আমরা দাম্ভিকতার মোহে পতিত জুলুমবাজ মাফিয়া গোষ্ঠীর মত একই আচরণ করার শিক্ষা অর্জন করিনি।’
সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদল নেতা মর্তুজা ফামিন রাজশাহীর জনপ্রিয় শীর্ষ অনলাইন নিউজ পোর্টালেও সংবাদটি প্রকাশ করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন।ওই সংবাদ সম্মেলনে পদ্মাটাইমস এর প্রতিনিধি উপস্থিত থাকায় পরে তাদের কাছে নিউজ প্রচারের ডকুমেন্টস দেখতে চাইলে তা দেখাতে পারেননি। পরে ওই ছাত্রদল নেতা ভূলবশত পদ্মাটাইমস এর নাম উল্লেখ করা হয়েছে বলে দুঃখ প্রকাশ করেন এবং উপস্থিত সকল গণমাধ্যকর্মীদের তা সংশোধন করার জন্য অনুরোধ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, রাজশাহী সিটি প্রেস কলেজের যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ আসিফ নাফি, হোটেলের পরিচালক নাইম ও ম্যানেজার রনি।
একুশে সংবাদ/ এস কে
একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
আপনার মতামত লিখুন :