AB Bank
ঢাকা মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১৫ পৌষ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

সিরাজগঞ্জ বাঘাবাড়ি নৌবন্দরে নৌযান শ্রমিকদের বিক্ষোভ মিছিল


Ekushey Sangbad
মো. দিল, সিরাজগঞ্জ
০৪:৩৭ পিএম, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪
সিরাজগঞ্জ বাঘাবাড়ি নৌবন্দরে নৌযান শ্রমিকদের বিক্ষোভ মিছিল

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার বাঘাবাড়ি নৌবন্দরে নৌযান শ্রমিকরা ইউরিয়া সারবাহী জাহাজের ঘুমন্ত ৭ নাবিককে গলাকেটে হত্যার প্রতিবাদ সহ ৪ দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে। বাঘাবাড়ি নৌবন্দরগামী ইউরিয়া সারবাহী কার্গো জাহাজ এমভি আল বাখেরায় হামলা চালিয়ে ঘুমন্ত ৭ নাবিককে হত্যার সাথে জড়িত সকল খুনিদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, নিহতদের পরিবারকে ২০লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ ও চট্টগ্রাম-বাঘাবাড়ি নৌপথের নিরাপত্তা নিশ্চিত করণ।

মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন বাঘাবাড়ি শাখার শ্রমিকেরা এ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করে। মিছিলটি বাঘাবাড়ি নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যালয় থেকে শুরু হয়ে নৌবন্দরের বিভিন্ন সড়ক ও মোড় প্রদক্ষিণ করে। এরপর সংগঠনের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন, জামশেদ আলী মাস্টার। বক্তব্য রাখেন, বাঘাবাড়ি নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো: আনোয়ার হোসেন, শ্রমিকনেতা মনিরুল ইসলাম, শাহাদত হোসেন, জয়নাল আবেদীন, সিরাজুল ইসলাম, বাবুল হোসেন, মোহাম্মদ আলী প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, গত ২২ ডিসেম্বর রবিবার রাতে ঘনকুয়াশার কারণে চাঁদপুরের হরিণা ফেরিঘাটের অদূরে মেঘনা নদীর মাঝেরচর এলাকায় নোঙ্গর করে রাখা বাঘাবাড়ি নৌবন্দরগামী ইউরিয়া সারবাহী কার্গো জাহাজ এমভি আল বাখেরায় হামলা চালিয়ে ঘুমন্ত ৭ নাবিককে হত্যার সাথে জড়িত সকল খুনিদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, নিহতদের পরিবারকে ২০লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ ও চট্টগ্রাম-বাঘাবাড়ি নৌপথের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবীতে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসাবে বাঘাবাড়ি নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) থেকে বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অব্যহত ভাবে পালন করবে। 

এ সময়ের মধ্যে যদি সরকার তাদেও এ দাবী পূরণ না করে তবে তারা ২৬ ডিসেম্বর রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে সকল যৌযান চলাচল বন্ধ রেখে অনির্দিষ্টকালের জন্য নৌধর্মঘট কর্মসূচি শুরু করবে। এছাড়া এই একই দাবীতে বুধবার বিকেলে নৌযান শ্রমিকরা বাঘাবাড়ি নৌবন্দরের পাশাপাশি পাবনার আমিনপুর থানার নগরবাড়ি নৌবন্দরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ কর্মসূচি পালন করবে বলে বক্তারা ঘোষণা দেন।

বাঘাবাড়িতে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তারা জানান, গত ২২ ডিসেম্বর রবিবার সকালে চট্টগ্রামের সিইউএফএল (কাপকো) এর জেটি ঘাট থেকে ৭ মেট্রিক টন ইউরিয়া সার নিয়ে এমভি আল বাখেরা কার্গো জাহাজটি বাঘাবাড়ি নৌবন্দরের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল। সন্ধ্যার পর ঘনকুয়াশার কারণে ইউরিয়া সারবাহী কার্গো জাহাজটি চাঁদপুরের হরিণা ফেরিঘাটের অদূরে মেঘনা নদীর মাঝেরচর এলাকায় নোঙ্গর করে নাবিকরা রাতের খাওয়া দাওয়া শেষে ঘুমিয়ে পড়ে।

এরপর গভীররাতে দূর্বৃত্তরা জাহাজে হামলা চালিয়ে বিভিন্ন কক্ষে ঢুকে ওই জাহাজের ৮ নাবিকের গলাকেটে পালিয়ে যায়। এরপর জাহাজের মালিকের সাথে নাবিকদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে মালিক চিন্তিত হয়ে পড়েন। তিনি উপয়অন্ত রা দেখে ওই রাতেই ৯৯৯ এ কল দিয়ে বিষয়টি চাঁদপুর নৌপুলিশকে অবহিত করেন। খবর পেয়ে চাঁদপুর নৌপুলিশের এসপি সৈয়দ মুশফিকুর রহমান সহ চাঁদপুর নৌপুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে পৌছে জাহাজের বিভিন্ন কক্ষ থেকে ৫ নাবিকের লাশ উদ্ধার করেন।

এ সময় আশংকাজনক আরও ৩ জনকে উদ্ধার কওে চাঁদপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২ জনের মৃত্যু হয়। এরপর জুয়েল নামের অপর এক নাবিককে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। ওই নাবিকেরও গলার আংশিক ধারালো অস্ত্র দিয়ে কাটা থাকায় তিনি কথা বলতে পারছিলেন না। তিনি অনেক কষ্টে কাগজে তার নাম ও মোবাইল নম্বর লিখে দিলে তার নাম পরিচয় জুয়েল বলে জানা যায়। নিহত সাতজন হলেন, জাহাজের মাস্টার গোলাম কিবরিয়া, ইঞ্জিন চালক সালাউদ্দিন, সুকানি আমিনুল মুন্সি, গ্রিজার আজিজুল,মাজেদুল, লস্কর সবুজ শেখ ও বাবুর্চি রানা। এদের বাড়ি নড়াইল, ফরিদপুর ও মুন্সিগঞ্জ জেলায়।

এ বিষয়ে চাঁদপুর নৌ পুলিশের এসপি সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, ৯৯৯-এ কল পেয়ে ওই রাতেই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সহকারী পুলিশ সুপারসহ একটি টিম নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই। এরপর মেঘনা নদীর পশ্চিম পাড়ে মাঝের চরে নোঙ্গও কওে রাখা এমভি আল-বাখেরা নামের জাহাজটির বিভিন্ন কক্ষ থেকে পাঁচজনের লাশ উদ্ধার করা হয়।

এছাড়া তিনজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে দুইজন মারা যায়। অপর একজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। কীভাবে এ ঘটনা ঘটল তার তদন্ত চলছে। তিনি আরও বলেন, নিহত ও আহতদের শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত সহ গলা ও শ্বাসনালি কাটা পাওয়া গেছে।

ধারণা করা হচ্ছে এটি কোনো ডাকাতি নয়, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যা। তিনি বলেন, মঙ্গলবার বিকেলে নিহতদের লাশের ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

এ বিষয়ে শাহজাদপুর থানার ওসি আসলাম আলী বলেন, বাঘাবাড়ি নৌবন্দরে নৌযান শ্রমিকদের বিক্ষোভ মিছিলের বিষয়টি আমার জানা নেই। খোজ খবর দিয়ে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

একুশে সংবাদ/এনএস

সর্বোচ্চ পঠিত - সারাবাংলা

Link copied!