চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় ঘরের শয়নকক্ষে গলায় ওড়না প্যাঁচানো ফ্যানের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় এক প্রবাসীর স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (৭জানুয়ারি) দুপুরে উপজেলার লালানগর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের আলমশাহ পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত গৃহবধূর নাম নুর আয়েশা বেগম নিসা (২৭), তিনি একই এলাকার বাসিন্দা মৃত আবদুল নবীর ছেলে কাতার প্রবাসী আবুল কালামের স্ত্রী এবং একই উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের মাওলানা কবির আহমদ পাড়া এলাকার বাসিন্দা মৃত আবদুস সালামের কন্যা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিহত নূর আয়েশা প্রায় ৯ বছর পূর্বে প্রবাসী আবুল কালামের সাথে বিয়েতে আবদ্ধ হয়। দীর্ঘ বিবাহিত জীবনে নিঃসন্তান দাম্পত্যের আবুল কালাম গত দেড় বছর আগে সর্বশেষ দেশে এসে ছুটি কাটিয়ে পুনরায় প্রবাসে ফিরে যায়। স্বামী প্রবাসে থাকায় নিহত নূর আয়েশা বাবার বাড়িতেই থাকতেন, সর্বশেষ গত কয়েকদিন পূর্বে ভাশুরের বাড়ির ছাদ ঢালাই উপলক্ষে দাওয়াতে স্বামীর বাড়িতে বেড়াতে আসে।
এদিকে এ বিষয়ে জানতে চাইলে নিহতের ভাই আবুল কালাম জনি বলেন, আমার বোন মৃত্যুর আগের দিন রাতেও স্বাভাবিক কথাবার্তা বলছে। সে জানায় তার ননদ বেড়াতে আসছে তাই তাকে সময় দিতে আরও দুই-তিনদিন শ্বশুর বাড়িতে থাকবে।
তিনি আরো জানান, জানা মতে আমার বোন আত্মহত্যা করতেই পারেনা, তার ঝুলে থাকা লাশ বিছানায় (খাটে) হাঁটু গাড়া দেখে ধারণা করছি এটি পরিকল্পিত হত্যা। এজন্য আপাতত অপমৃত্যু মামলা করেছি বাকিটা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে সে রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে আইনি প্রক্রিয়ায় যাব।
এদিকে ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে নিহতের স্বামীর বড়ভাই আবুল কাশেম বলেন, সাম্প্রতিক ছোট ভাইয়ের সাথে কথা বলে জানা যায় তার স্ত্রী আয়েশা তাকে বিভিন্ন সময় ফোনে বলতো জানুয়ারি মাসে দেশে না এলে সে আত্মহত্যা করবে। উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন পর বাপের বাড়ি থেকে আয়েশা গত ৩দিন আগে শশুর বাড়িতে পারিবারিক অনুষ্ঠানে আসে, গতকাল ভোর ৩টা অথবা ৪টার দিকে আয়েশা কার সাথে যেন কথা বলছিল, পার্শ্ববর্তী রুম থাকায় স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছি তাদের ফোনালাপে অনেক ধরনের কথাবার্তা এবং রাগারাগি অবস্থায় কথা বলতে। এমনও বলতে শুনা গেছে যে, “তুমি আমাকে ভালোবাসো কিনা বলো, না হয় আমি আত্মহত্যা করবো”। গতকাল সকাল ১০/১১ টার দিকে অনেকক্ষণ ডাকা-ডাকির পর সারা শব্দ না পেয়ে দরজা ধাক্কা দিলে দরজা খুলেই দেখতে পায় আয়েশা ফ্যানের সাথে ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঝুলে আছে।
এ বিষয়ে মামলার সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা রাঙ্গুনিয়া থানার এসআই মাহমুদুল হাসানের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমরা খবর পেয়ে আড়াইটার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে ফ্যানের সাথে ওড়না দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় তাকে পেয়েছি। পজিশন দেখে মনে হচ্ছে আত্মহত্যা। তবে ময়নাতদন্ত ছাড়া এ বিষয়ে নিশ্চিত কিছু বলা যাচ্ছেনা।
রাঙ্গুনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাব্বির মোহাম্মদ সেলিম বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবদেন পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। এছাড়া ভিকটিমের পরিবার আত্মহত্যার একটা মামলা দিয়েছে।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :