আগাম জাতের আমের ভালো মুল্য না পাওয়ায় চাষিরা ঝুকছেন নাবী জাতের বাগানের দিকে। ইতিমধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল, গোমস্তাপুর ও শিবগঞ্জ উপজেলায় সুইট কাটিমন, গৌড়মতি, ব্যানানা ম্যাংগো, আম্প্রপালি সহ আরও কয়েক জাতের বড় বড় আম বাগান গত ১০ বছরে তৈরি করছেন চাষিরা। আমের ভালো মুল্য না পাওয়ায় চাষিরা আধুনিক আম ব্যাবসার দিকে ঝুকে পড়ছে। এছাড়া শিবগঞ্জ উপজেলায় বড় বড় আম বাগান কেটে নাবী জাতের বাগান তৈরিতে ব্যাস্ত বাগান মালিকরা। গত ১০ বছরে নাচোল, গোমস্তাপুর, ও শিবগঞ্জে ৫ হাজার হেক্টর জমিতে নাবী জাতের বাগান তৈরি হয়েছে।
আমের মিষ্টি ঘ্রাণ ও মধুর রসের অপেক্ষায় থাকে না এ দেশসহ বিশ্ববাসী এমন মানুষের সংখ্যা হয়তো হাতেগোনা। বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসের পুরোসময় জুড়ে চলে আম খাওয়া। চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমের স্বাদ এখন দেশের গণ্ডি পেরেয়ে বিদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে। ১২ মাসি ফল আম। প্রায় দেড়দশক ধরে আমের রাজধানীখ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জ অঞ্চলের এই চিত্র প্রায় পালটে গেছে। খেতে বৈশাখ- জ্যৈষ্ঠের আমের মতো সুস্বাদু না হলেও এখনো গাছে এমনকি বাজারে রয়েছে বারি-১১ ও সুইট কাটিমন জাতের আম। অর্থাৎ আমের মৌসুম শেষ হয়েও যেনো শেষ হচ্ছে না।
এখনো গাছে ও বাজারে পাওয়া যাচ্ছে এমন আমের জাতের নাম বারি-১১ ও সুইট কাটিমন । আশ্বিনা শেষ হওয়ার পরও কাটিমন আম ঝুলছে গাছে গাছে। এরপর প্রকৃতিতে নামে শীতের আমেজ। তখনো পাওয়া যায় আরেক জাতের নতুন আম, ‘সুইট কাটিমন’। থাইল্যান্ডের এই আমটির ফলন পাওয়া যায় বছরে তিন বার। চাঁপাইনবাবগঞ্জে সেপ্টেম্বর এর পর অক্টোবর-নভেম্বর মাসেও এই সুইট কাটিমন আমটি পাওয়া যায়। তবে এই জাতের আমের দাম স্বাভাবিক আমের মৌসুমের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি। বর্তমানে আমের মৌসুম বড় ও দীর্ঘ হচ্ছে। আমের মৌসুমকে আরো দীর্ঘায়িত করতে গবেষণা চলছে। পুরো বছর সুইট কাটিমন জাতের আমে স্বাদ পাওয়া যাচ্ছে ,ফলন একটু কম হলেও লাভ বেশি হওয়ায় খুশি চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমচাষিরা ।
আম চাষিরা জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আমের জন্য বিখ্যাত এখনো গাছে ও বাজারে পাওয়া যাচ্ছে আম, আর এমন আমের একটি জাতের নাম গৌড়মতী, বারি-১২। এলাকার চাষিরা একেক নামে চেনেন এই আম। আশ্বিনা শেষ হওয়ার পরও গৌড়মতী ঝুলছে গাছে গাছে। আর কাটিমন আম মাসজুড়ে পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে নাচোল উপজেলা কৃষি অফিসার সালেহ আকরাম জানান, বর্তমানে চাঁপাইনবাবগঞ্জে আমের মৌসুম বড় ও দীর্ঘ হচ্ছে। আমের মৌসুমকে আরো দীর্ঘায়িত করতে গবেষণা চলছে। কাটিমন জাত নিয়ে আরো গবেষণা প্রয়োজন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক ডাঃ পলাশ সরকার জানান, ফলন একটু কম হলেও লাভ বেশি হওয়ায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমচাষিরা এখন, বারি-১১ ও সুইট কাটিমন চাষের দিকে ঝুঁকছেন। এখন চাঁপাইনবাবগঞ্জে বারোমাস আম পাওয়া যায়। তবে কয়েক বছর পর মৌসুমের মত পুরো বছর আম পাওয়া যাবে এমনটি প্রত্যাশা আম চাষীদের।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :