সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার দক্ষিণ বংশিকুন্ডা ইউনিয়নের চান্দালীপাড়া গ্রামের মৃত কাশেম আলীর স্ত্রী বিধবা অসহায় মহিলা, মোছঃ তাজ্জুতের নেছা`র জমি চাষাবাদে বাঁধা দিয়ে দখলের পায়তারা এবং প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্বামীর জমি চাষাবাদ করতে বাঁধা দেওয়ার অভিযোগে চারজনকে আসামি করে মধ্যনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা`র বরাবরে, তাজ্জতেরনেছা বাদী হয়ে, একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে যে, তাজ্জুতের নেছাকে অসহায় হতদরিদ্র পাইয়া, অভিযুক্ত বিবাদীগন ভয়ভীতি দেখাচ্ছে যে, এই জমিতে চাষাবাদ করতে গেলে, একই গ্রামের মোঃ হজরত আলী, মোঃ সাদিকুল ইসলাম,মোঃ নাজু মিয়া,গড়াকাটা গ্রামের মোঃ হজরত আলী গংরা, তাকে ও তার ছেলে মেয়েকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে আসছে।
তাজ্জুতের নেছা আরও বলেন, এরা এলাকার দাঙ্গাবাজ এবং খারাপ প্রকৃতির লোক, এমনকি এরা এলাকায় মাদকের ব্যবসা সহ চাঁদাবাজির একাধিক মামলা রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। তাদের ভয়ে এলাকার কেউই মুখ খুলতে সাহস পায় না, তাই আমি এলাকায় সুবিচার না পেয়ে আদালতে আইনের আশ্রয় নিয়েছি। আদালত সুবিচার করে আমার পক্ষে ডিক্রি প্রদান করেছেন। কিন্তু এরা আদালতকে তোয়াক্কা করে না বলেও হুমকি দিয়ে আসছে।
এলাকায় খুঁজ নিয়ে জানা যায়, তাজ্জতের নেছা এবং তার ছেলে আলী ও মেয়ে মালা আক্তার এদের ভয়ে, মানবেতর জীবনযাপন করিতেছে।আরও জানা যায়, কাসেম আলী তাদের নির্যাতনের শিকার হয়ে অভাবের তাড়নায় ৩০ বছর আগে, এলাকা ছেড়ে ঢাকা বিক্রমপুর চলে যায়। এ সুযোগে বিগত সেটেলমেন্টে, ফুল বানু ও তাহার স্বামী তাহের আলী জায়গাটি ১৩৪ ও ১৮১ নং খতিয়ানে রেকর্ড করে নিয়ে যায়। পরে কাসেম আলী দির্ঘদিন পরে বাড়িতে এসে জানতে পারে, তার পৈত্রিক জমিটি ফুল বানু ও তাহের আলীর নামে রেকর্ড করেছে। এবং এর প্রেক্ষিতে ভুল রেকর্ড সংশোধনের জন্য মোঃ কাশেম আলী বাদী হয়ে, ২০১৫ সালে সুনামগঞ্জ জেলা ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলা দায়ের করেন।
এতে দির্ঘ ৯ বছর পর আদালত মৃত কাসেম আলীর পক্ষে ডিক্রি প্রদান করেন, এবং আদালত সহকারী ভূমি কমিশনারকে নতুন খতিয়ান খোলার আদেশ দেন। এইমর্মে ভূমি অফিস কতৃক কাসেম আলীর উত্তরসূরী চার মেয়ে ও এক ছেলের নামে খতিয়ান খোলা হয়েছে। তাছাড়া নামজারি হোল্ডিংসহ জমির খাজনা পরিশোধ করেছে কাসেম আলীর মেয়ে মালা আক্তার। অথচ আদালতের আদেশ অমান্য করে,পরসম্পদ লোভী উগ্র পন্থী দাঙ্গাবাজরা ওয়ারিশান দাবী করে অন্যায় ভাবে মোঃ হজরত আলী, মোঃ সাদিকুল ইসলাম,নাজু মিয়া, গড়াকাটা গ্রামের মোঃ হজরত আলী গংরা, জমি চাষাবাদে বাঁধা নিষেধ করিতেছে, এমনকি পানি সেচের সামারসিবল মালিকে পানি না দিতে ও হালচাষের ট্রাক্টার মালিককে হালচাষ না করতে বাঁধা নিষেধ করছে। জার ফলে জমি চাষাবাদ করতে পারছে না বিধবা অসহায় মহিলা তাজ্জুতের নেছা। জমিটা অনাবাদি রাখার জন্য তাজ্জতের নেছাকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
আদালতের ডিক্রি পেয়েও জমি চাষাবাদ করতে পারছে না তাজ্জতেরনেছা, এজন্য সুবিচারের আশায় মধ্যনগর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও উজ্জ্বল রায় এর বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে তাজ্জতেরনেছা।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও উজ্জ্বল রায় বলেন, আমি অভিযোগ পেয়েছি, দ্রুত আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :