ঢাকা মেডিকেলে ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পেয়েছেন কোটচাঁদপুরের মেধাবী ছাত্র সামাউল ইসলাম। তবে সুযোগ পেলেও ভর্তি হওয়া নিয়ে দেখা দিয়েছেন সংশয়। সবজি বিক্রি করে ও মানুষের সহায়তায় এ পর্যন্ত নিয়ে আসতে পারলেও থেমে যেতে পারে তাঁর মেডিকেলে পড়ার স্বপ্ন,কথাগুলো বলছিলেন আর অজোরে কাঁদছিলেন পিতা তাজির উদ্দিন।
জানা যায়, কোটচাঁদপুর পৌরসভাধীন বড়বামনদহ গ্রামের প্রতিবন্দী সবজি বিক্রেতা তাজির উদ্দিনের দুই ছেলে। সামাউল ইসলাম ও সিয়াম হোসেন। যাদের লেখা পড়া চলত সবজি বিক্রির টাকা দিয়ে। ভালো ফলও করেন এসএসসিতে। এরপরও সে সময় কলেজে ভর্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয় সামাউলের। ওই সময় মানুষের সহায়তায় ভর্তি সম্পন্ন হয় তাঁর।
পরিবারে আর্থিক অনটন ছিল নিত্যসঙ্গী তাদের। কিন্তু পড়াশোনার পথ থেকে কখনো বিচ্যুত হননি তিনি। কঠোর পরিশ্রম করে তিনি সফলতার পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেলেন। গেল শুক্রবার ছিল সামাউল ইসলামের মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষা। পরীক্ষা ভালোই দেন, সে অনুযায়ী মেডিকেলে পড়ার সুযোগ পাবেন আত্ম বিশ্বাস সামাউলের।
রবিবার বিকেল ৫ টা বাজে। শুভ সংবাদটি পান সামাউলের এক স্বজনের মাধ্যমে। আনন্দ ভরে ওঠে তাঁর পরিবার। খুশিতে কেদে ফেলেন একে অপরকে ধরে। সে আনন্দ ছড়িয়ে পড়েন সামাউলের বিদ্যালয়েও। সে তাঁর বিদ্যালয়ে যাবার পর মিষ্টি আর ফুল দিয়ে বরন করে নেন বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
তবে সে আনন্দে বেশি সময় ভাসতে পারেনি সামাউল ইসলাম। ভর্তির কথা মনে পড়তেই মলিন হয়ে যায় তাঁর মুখ। অর্থের অভাবে মেডিকেলে ভর্তির স্বপ্ন ভংঙ্গের আশংকা দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন সামাউলের পিতা প্রতিবন্দী তাজির উদ্দিন। তিনি বলেন, দুই ছেলে মেয়ে আর স্বামী স্ত্রী নিয়ে আমার সংসার। যা চলতো আমার সবজি বিক্রির টাকা দিয়ে। এর ফলও পেয়েছি। সামাউল এসএসতি ভাল ফল অর্জন করেন। তবে সে সময় ও ভর্তি করা নিয়ে সংশয় দেখা দেয়। তখনও মানুষের সহায়তায় ভর্তি করা হয়। গেল শুক্রবার ছিল সামাউলের মেডিকেলে ভর্তি পরিক্ষা। ওই পরিক্ষায় উর্ত্তিন্ন হয়ে মেডিকেলে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন সে। তবে ভর্তি করে পড়ানোর সামর্থ্য আমার নাই। এ সব কথা বলছিলেন আর অজোরে কাঁদছিলেন তাজির উদ্দিন। তিনি তাঁর ছেলের ভর্তির জন্য মানুষের সহায়তা চেয়েছেন।
সামাউল ইসলাম পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি অর্জন করেন। ২০২২ সালের এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পান জিপিএ-৫। এরপর ২০২৪ সালে কোটচাঁদপুর সরকারি খন্দকার মোশাররফ হোসেন কলেজ থেকে এইসএসসিতেও জিপিএ-৫ পেয়ে মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষা দেন। সুযোগ এসেছে চিকিৎসক হওয়ার।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :