পারিবারিক বিরোধের জেরে জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার শেখপুর গ্রামে এক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। আব্দুল মান্নান নামের এক ব্যক্তি গৃহবধূ রনি আক্তারের একমাত্র গাভীকে পরিকল্পিতভাবে গ্যাস ট্যাবলেট খাইয়ে মেরে ফেলেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার রাতে এ নির্মম ঘটনা ঘটে। ক্ষতিগ্রস্ত গৃহবধূ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।এ ঘটনায় গ্রামে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। স্থানীয়রা বিষয়টির দ্রুত ও সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে রনি আক্তার ও তার প্রতিবেশী আব্দুল মান্নানের মধ্যে পারিবারিক বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে একাধিকবার গ্রামে সালিশও হয়েছে। কিন্তু কোনো সমাধান হয়নি। বরং আব্দুল মান্নান বারবার রনি আক্তার ও তার পরিবারকে গালিগালাজ এবং হয়রানি করে আসছিল।
ঘটনার দিন, বৃহস্পতিবার রাতে,আব্দুল মান্নান পাশের গ্রামের বেলাল হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে রনি আক্তারের বাড়িতে প্রবেশ করে। বাড়ির গোয়াল ঘরে ঢুকে গাভীটিকে কলার পাতায় মোড়ানো গ্যাস ট্যাবলেট খাওয়ায়। বাড়ির ভেতরে থাকা রনি আক্তার ও তার স্বামী বিষয়টি টের পেয়ে চিৎকার করলে অভিযুক্তরা দ্রুত পালিয়ে যায়।
গৃহবধূ ও তার পরিবার গোয়ালঘরে গিয়ে দেখতে পায়, তাদের গাভীটি মাটিতে পড়ে ছটফট করছে। পাশে পড়ে ছিল গ্যাস ট্যাবলেটের ভাঙা অংশ ও কলার পাতা। রাতেই গাভীটি মারা যায়। রনি আক্তার জানান, তার গাভীটির বাজারমূল্য প্রায় ৭০ হাজার টাকা।
রনি আক্তার বলেন, "দীর্ঘদিন ধরে মান্নান আমাদের শান্তি নষ্ট করে আসছে। অনেকবার দরবার হয়েছে, কিন্তু সে কারো কথা শোনে না। গত রাতে সে আমার একমাত্র সম্বল, গাভীটিকে হত্যা করল। আমরা চিৎকার করলে ওরা পালিয়ে যায়। থানায় অভিযোগ করেছি। আমি এর সঠিক বিচার চাই।"
স্থানীয় বাসিন্দা বুলু মিয়া বলেন, "রাতে চিৎকার শুনে ছুটে গিয়ে দেখি গাভীটি মাটিতে পড়ে আছে। মান্নান একজন ভয়ংকর স্বভাবের মানুষ। দ্বন্দ্ব থাকতেই পারে, কিন্তু একটি নিরীহ প্রাণীকে এভাবে মেরে ফেলা অমানবিক। এর সঠিক বিচার হওয়া উচিত।"
অভিযুক্ত আব্দুল মান্নান তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, "আমাকে অন্যায়ভাবে দোষারোপ করা হচ্ছে। তাদের সঙ্গে আমার দ্বন্দ্ব আছে, সেটা ঠিক। কিন্তু গাভী হত্যা করে এই দ্বন্দ্বের সমাধান হবে না। তারা নিজেরাই গাভীটিকে মেরে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।"
কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদ হোসেন জানান, গাভী হত্যার অভিযোগ পেয়ে আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি। তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :