AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০২৫, ১৬ মাঘ ১৪৩০

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

শ্রীমঙ্গলে পেঁয়াজ চাষ করে সফল রায়হান আহমদ


শ্রীমঙ্গলে পেঁয়াজ চাষ করে সফল রায়হান আহমদ

মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলে বিজিএস ৪০৩, এলটি হাইব্রিড ও রেড হিল জাতের পেঁয়াজ চাষ করে প্রথমবারই সফল হয়েছেন শ্রীমঙ্গল উপজেলার আশিদ্রোন ইউনিয়নের খলিলপুর গ্রামের কৃষক মৃত গিয়াস উদ্দিনের ছেলে রায়হান আহমদ (২৬)।

চলতি মৌসুমে তিনি এক শতক জমিতে পেঁয়াজ চাষ করে গ্রামে সাড়া ফেলেছেন। আশপাশের এলাকার চাষিরা রায়হানের প্লট প্রদর্শনী দেখতে আসছেন তার মাঠে। চাইছেন পরামর্শ ও বীজ। চাষী রায়হান আহমদের সাফল্য দেখে অনেক কৃষক এ জাতের পেঁয়াজ চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। আর এ জাতের পেঁয়াজ চাষে সহযোগিতা করছেন লালতীর সীড কোম্পানি।

কৃষক রায়হান বলেন, আমাকে লালতীর সীড কোম্পানি থেকে  প্রদর্শনী প্লট দেওয়া হয়েছিল। চলতি বছরের ভাদ্র মাসে দেড় শতাংশ জমিতে বিজিএস ৪০৩, এলটি হাইব্রিড ও রেড হিল জাতের পেঁয়াজের বীজ ছিটিয়ে ছিলাম। ত্রিশ গ্রাম বীজ ছিটানোর এক সপ্তাহ পরে অঙ্কুর আসে। মাঘ মাসে ফসল পূর্ণতা লাভ করে। মোট ১০৫ দিনে মাঠ থেকে পেঁয়াজ তুলে নিতে পেরেছি। চাষের মধ্যে বিজিএস ৪০৩ ভালো ফলন দিয়েছে। ৪ থেকে ৫টি পেঁয়াজে এক কেজি হয়ে গেছে। তবে পেয়াজ চাষের জমিতে প্রাকৃতিক সার ও ছত্রাক নাশক ছিটিয়েছেন বলেও জানান।

রায়হান আহমেদ বলেন, এক শতক জমিতে পেঁয়াজ চাষ করে আমি সফল হয়েছি। তাই আগামীতে বড় জমিতে পেঁয়াজ চাষ করবো। আমার পেঁয়াজের মাঠ দেখে অন্যরাও পেঁয়াজ চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। কম পরিশ্রম ও অল্প খরচে প্রথম আবাদেই বাম্পার ফলন হওয়ায় খুশির কথাও জানান।

এর আগে ২০২৩ সালে চাষী রায়হান শ্রীমঙ্গলে প্রথমবারের মতো বিদেশী সবজি ক্যাপসিকাম ও স্কোয়াশ চাষে সফল হয়েছিলেন। ২০১৭ সালে শ্রীমঙ্গল উপজেলার সিন্দুরখান ইউনিয়নের হাজী আব্দুল গফুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে রায়হান আহমদ এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হয়ে মতিগঞ্জস্থ উপাধ্যক্ষ মোঃ আব্দুস শহীদ কলেজে এইচএসসিতে ভর্তি হয়েছিলেন। প্রথম বর্ষের পরীক্ষা দেওয়ার পর করোনাকাল শুরু হয়। এরপর থেকে রায়হানের পরিবারে নেমে আসে আর্থিক চাপ। পড়ালেখার খরচসহ পরিবারের দায়দায়িত্ব রায়হানের কাঁধে আসে। এরপর তিনি পড়ালেখা বাদ দিয়ে ইউটিউব দেখে ক্যাপসিকামের চাষ করার সিদ্ধান্ত নেন। অর্থনৈতিক অসচ্ছলতা দূর করতে এরপর শুরু করেন ক্যাপসিকাম চাষ। কয়েক মাসের ব্যবধানে তিনি চাষে সফল হয়ে লাভবান হয়েছেন।

জানা যায়, বিজিএস ৪০৩ বাংলাদেশের প্রথম সামার হাইব্রিড জাতের পেয়াজ। রোপণের সময় জুন থেকে জুলাই মাস। চারা রোপণের ৯০ দিনের মধ্যে ফসল ঘরে তোলা যায়। আর একর প্রতি ফলন হয় ১১-১২ টন। চ্যাপ্টা গোলাকার প্রতিটি পেঁয়াজের রং হয় তাম্র বর্ণ। বাজারেও বেশি দাম পাওয়া যায়। এ জাতের পেঁয়াজ সারা বছর সংরক্ষণে রাখা যায়।

বীজের উৎস প্রতিষ্ঠান লাল তীর সীডের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক তাপস চক্রবর্তী বলেন, বাংলাদেশে সাধারণত শীত মৌসুমে পেঁয়াজ উৎপাদন হয়, আমরা যদি গ্রীষ্মকালেও পেঁয়াজ চাষের বিস্তার ঘটাতে পারি তাহলে দেশের উৎপাদন ঘাটতি অনেকাংশে লাগব হবে এবং দেশ অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ ও আত্মনির্ভরশীল হবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আলাউদ্দিন বলেন, শ্রীমঙ্গলে বৃষ্টিপাত বেশী হয়, আর বৃষ্টি পেয়াজ চাষের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। তাই আমরা গ্রীষ্মকালে পেঁয়াজ চাষাবাদ করতে পারি না। তবে এবার উপজেলার খলিলপুরে লালতীরের প্রদর্শনী মাঠে অনেক ভালো ফলন হয়েছে। এই পেঁয়াজ চাষে কৃষকরা যেমন লাভবান হবেন, তেমনি আমদানি নির্ভরতা কমবে এবং মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হবে।

কৃষি অফিসার আলাউদ্দিন আরও বলেন, দেশে প্রচুর পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়। যদি গ্রীষ্ম ও শীতকালীন পেঁয়াজ সমানভাবে চাষ করা যায়, তাহলে আর আমদানি করতে হবে না। উলটো রপ্তানি করা যাবে।  পেঁয়াজ অন্যান্য ফসলের থেকে লাভজনক এবং এর উৎপাদন খরচও অনেক কম। সরকারিভাবেও গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষে প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে। যাতে আমরা পেঁয়াজের আবাদ বৃদ্ধি করতে পারি।

 

একুশে সংবাদ/বিএইচ

Link copied!