টাঙ্গাইল জেলার ধনবাড়ী উপজেলাতে ফসল উৎপাদন খরচ ও কীটনাশকের পরিবর্তে ধানের পোকা দমনে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে পার্চিং পদ্ধতিতে ধান চাষ। ফলে বোরধানের মৌসুমে এই পদ্ধতি অনুসরণ করে সুফল পাচ্ছে অনেক চাষিরা। উপজেলার বিভিন্ন ফসলের মাঠ ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা যায়।
জানা গেছে, ধান ক্ষেতের মাঝে ১৫ থেকে ২০ হাত দূরে গাছের ডাল, বাঁশের কঞ্চি, টি আকৃতির দণ্ড বা বাঁশের জটা প্রভৃতি খাড়াভাবে জমিতে পুঁতে দেওয়া হয় । সেখানে কিছুক্ষণ পরপরই বিভিন্ন প্রজাতির পাখি উড়ে এসে বসছে আর ক্ষেতের পোকা ধরে খাচ্ছে। এভাবে কীটনাশক ছাড়া পোকার আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষার এই পদ্ধতিকেই ‘পার্চিং’ বলা হয়।
ফলে এখন তারা পার্চিং পদ্ধতিতে পোকা দমন করে সুফল পাচ্ছেন এবং কোন প্রকার বালাইনাশক (কীটনাশক/বিষ) ব্যবহার না করে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি আর্থিক ক্ষতি থেকে রেহাই পাচ্ছেন। এ উপজেলার কৃষকরা তাদের বোর ধান ক্ষেতের বিভিন্ন স্থানে বাঁশের আগা, বাঁশের কি, গাছের ডাল পুঁতে দিয়েছেন। এসব বাঁশের আগা, বাঁশের কি, বাঁশের মাচাল বা আড়, গাছের ডালে নানা ধরনের পাখি বসে ক্ষতিকর পোকা খেয়ে ফেলছে এবং পাখি ওই পার্চিং-এ বসে ক্ষণিক সময়ের বিশ্রামও নিচ্ছে।

এভাবে কীটনাশক ছাড়াই পোকার আক্রমণ থেকে ধান গাছ রক্ষা পাচ্ছে বলে কৃষকরা জানান এবং তারা ডেড পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহার করে পোকা দমনে অনেকটা সফল হয়েছেন। ফসলের জমিতে পাখি বসার উপযোগী বাঁশের আগা, বাঁশের কি , বাঁশের মাচাল বা আড়, গাছের ডাল পুঁতে যে পার্চিংয়ের ব্যবস্থা করা হয় তাকে ডেড পার্চিং বলে বিভিন্ন গ্রামে বোরখেতে পোকা দমনে কৃষকেরা কৃষি বিভাগের পরামর্শে জমিতে কিছু দূর পরপর গাছের ডাল পুঁতে দিচ্ছেন। ওই ডালগুলোতে বিভিন্ন রকমের পাখি বসছে এবং ধানক্ষেতের পোকা খেয়ে ফেলছে। এভাবে কীটনাশক ছাড়াই পোকার আক্রমণ থেকে ধানগাছ রক্ষা পাচ্ছে। অল্প সময়ের মধ্যে পদ্ধতিটি স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
ধনবাড়ী উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ মাসুদুর রহমান জানন, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১০ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে বোরধানের চাষ হয়েছে।
ধনবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মাসুদুর রহমান বলেন, কৃষকদের কাছে পোকা দমনের পার্চিং পদ্ধতির ব্যবহার বিগত বছরগুলোর চেয়ে এবার আরো ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। সাধারণত ধান গাছে মাজরা পোকা, পাতা মোড়ানো পোকা, খাটসুর, ঘাসফড়িং ও পাতাফড়িং আক্রমণ করে। পোকাখাদক পাখি জমিতে পুঁতে রাখা পার্চিংয়ে বসে এসব ক্ষতিকর পোকা খেয়ে ফেলে। ফলে এর মাধ্যমে অতি সহজেই ক্ষতিকর পোকা দমন করা সম্ভব হচ্ছে। এটা পরিবেশবান্ধব এবং এই পদ্ধতি ব্যবহারে জমিতে ক্ষতিকারক কীটনাশক ব্যবহার কমবে।
একুষে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :